বিশ্বনন্দিত বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংক প্রগতি কো-অপারেটিভ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিঃ জানুয়ারি ১০, ২০০৯ তারিখে কাপাসিয়া বাজারের মেইন রোডস্থ ইলোরা কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় ১০০ বর্গফুট আয়তনের একটি কক্ষে স্থাপিত হয়। আমাদের ব্যাংক আমাদের উন্নয়ন এই প্রত্যয়ে এই ব্যাংকের সূচনা হয় এবং এর কার্যক্রম শুরু হয় ঐ একই দিনে। জাতীয় পর্যায়ের এই ব্যাংকটির তখন পুঁজি বলতে একটি টেবিল, ছয়টি চেয়ার, কিছু কাগজপত্র আর কাপাসিয়ার সতীর্থদের আত্মবিশ্বাস। কাপাসিয়া হচ্ছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা হতে প্রায় ৬০ কিলোমিটার উত্তরে একটি চমৎকার ছোট্র শহর। সে সময় দেশের একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক মোঃ সাইফুল ইসলাম মোল্লা যখন দেখলেন, শোষণ-বঞ্চনা বাড়তে বাড়তে ব্যাংক সেক্টরে শ্রেণী সমাজ আরও ত্বরান্বিত হচ্ছে; গরীব আরও গরীব আর ধনী আরও ধনী হতে থাকলেন; সেই গরিবী নিবারণের উপায় কী! ‘জনগণের ব্যাংকিং, জনগণই ব্যাংকার’ এই চেতনার গোড়াপত্তন ঘটানোর মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও সামগ্রিক প্রগতির এক নতুন ধারার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।
তিনি তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য যখন লোকদের বলছিলেন, “আমাদের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির মাধ্যমে জাতীয় অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে একটি ব্যাংক গঠন করতে চাই” তখন কমিউনিটির সবাই এরূপ ব্যাংক গঠনের পক্ষ নিলেন; প্রগতির জন্য গণমানুষ একটি বৃহত্তর বিকল্প বলয় ও আন্দোলন গড়তে চাইলেন। অবশেষে সেই বরেণ্য সাংবাদিক জনগণের অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তিস্বরূপ তাদের মধ্য থেকে ২২ জন উদ্যোক্তাকে সাথে নিয়ে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করলেন, যার মাধ্যমে Better Bangladesh গড়ার কাজ এগিয়ে যায়। পরে আইনানুগ নিবন্ধনের উদ্দেশ্য আবেদন করলে সরকার বাহাদুরের সন্তুষ্টিতে ২০০১ সনের ৪৭ নং আইনের ১০(২) ধারার শর্তাংশে ব্যাংকটি নিবন্ধিত হয়েছে বলে গণ্য হয়। এটি বাংলাদেশের সংবিধানের ১৩(খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ২০০১ সালের ৪৭ নং আইনের অধীন পরিচালিত একটি স্বায়ত্তশাসিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা মূলত: ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা যুক্ত।
প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ব্যাংকটির নাম ছিল “প্রগতি কো-অপারেটিভ ল্যান্ডমর্টগেজ ব্যাংক লিঃ”, যা পরিবর্তন করে নাম রাখা হয়েছে প্রগতি কো-অপারেটিভ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড। জাতীয় সংসদে আইনের সংশোধনীর ফলে জমি বন্ধকী ব্যাংক ভূমি উন্নয়ন ব্যাংকে রূপান্তরিত হওয়ায় আইনগত বাধ্যবাধকতার কারণে গত ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৩ তারিখে এই নাম পরিবর্তিত হয়। বস্তুত ব্যাংকটি সবার কাছে প্রগতি ব্যাংক নামে পরিচিত।
এই ব্যাংক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর একটি কথার চমৎকার উদাহরণ “মিলি পরমাণু পর্বত হয়, সিন্ধু বিন্ধু মিলে”। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ব্যাংকটির বন্ধুত্বপূর্ণ সেবা, দায়িত্বশীল ব্যাংকিং, কর্মকাণ্ডের শৃঙ্খলা, কমিউনিটির প্রতি গভীর অঙ্গীকার ও মমত্ববোধের জন্য তার বিশাল পরিচিতি রয়েছে। অধিক্ষেত্রের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের ব্যাপারে তার রয়েছে সুদীর্ঘ ঐতিহ্য। নাগরিকদের তথ্যাধিকার বাস্তবায়নে তার জুড়ি মেলা ভার। সর্বত্র মাতৃভাষা ব্যবহারের প্রেরণা যুগিয়ে ব্যাংক জগতে সর্বপ্রথম বাংলা ভাষায় ওয়েবসাইট চালু করে এই ব্যাংক সর্বমহলের প্রশাংসা পায়। তার মাধ্যমে বিশ্ববাসী জানতে শুরু করে বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী ভূমি উন্নয়ন ব্যাংক রয়েছে। কেউ এই ব্যাংককে উদীয়মান তারকা আবার কেউ অনুকরণীয় মডেল হিসেবে দেখছেন। দীর্ঘ সময় ধরে সকল স্টেইকহোল্ডারের সার্বিক সহযোগিতায় আর শুভানুধ্যায়ীদের অব্যাহত সমর্থনে ব্যাংকটির অজস্র সাফল্যের মালিক মূলত সবাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:১১