somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেয়ে

৩০ শে মে, ২০২১ রাত ১০:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মেয়ে

তেত্রিশ মিনিট পার হলো।
কমলবাবু বসারঘরে একা-একা বসে আছেন। অপেক্ষা করছেন এবাড়ির গৃহকর্ত্রীর জন্য। কিছুক্ষণ আগে এবাড়ির কাজের মেয়েটা তাঁকে এক-কাপ চা দিয়ে বলল, "খালাম্মা ঘুমাইতেছে। আপনে এখন যান। পরে আইসেন। আমি আপনার কথা তারে কইয়া রাখমু। আর আপনার নাম যেন কী বলছিলেন? ভুইল্যা গেছি।"
কমলবাবু দ্বিতীয়বার নিজের নাম বললেন না। একটু আগেই মেয়েটাকে একবার নাম বলা হয়েছে। মেয়েটা এর মাঝেই ভুলে গেলো!
তিনি যতদূর জানেন- কাজের মেয়েদের স্মৃতিশক্তি হয় তরবারির মত ধারালো। এরা একবার দেখেই সব মনে রাখতে পারে। বাড়ির কর্তার চোখের দিকে তাকিয়ে আঁচ করতে পারে- কর্তা কোন চরিত্রের মানুষ। এই মেয়েটা তেমন না। এর স্মৃতিশক্তি খারাপ। তবে কি সে কাজের মেয়ে না? কমলবাবু এই নিয়ে অনেকক্ষণ চিন্তাভাবনা করলেন। তাঁর করার কিছু নেই। অপ্রয়োজনীয় চিন্তায় ডুবে থাকলেও তাঁর সময় নষ্ট হয় না।
"কী হইলো? নাম কইবেন না?"
"নাম বলার দরকার নেই। আমি বরং অপেক্ষাই করি। তোমার খালাম্মার সাথে কথা বলে তবেই যাবো। তুমি পারলে আমায় একটা খবরের কাগজ দিয়ে যাও। এশট্রে থাকলে ওটাও দাও। সিগারেট খাবো।"
মেয়েটি বিরক্তির সুরে বলল, "এইখানে ছিগরেট খাওন যাইবোনা। নিষেধ আছে। খবরের কাগজ দিতাছি। বইয়া বইয়া পড়েন।"
কমলবাবু সেই থেকে খবরের কাগজ পড়ছেন। পত্রিকায় নানানরকম খবর লেখা। একটা লেখায় তাঁর চোখ আটকে গেলো। শিরোনাম- 'পুলিশের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে নিহত এক দুর্বৃত্ত'। পাশে ছবি দেয়া। কমলবাবুর মনে হলো তিনি ছেলেটাকে চেনেন। কোথাও যেন দেখেছেন। কিন্তু মনে করতে পারছেন না। ইদানীং তাঁর স্মৃতিশক্তিও ক্রমশ দুর্বল হতে শুরু করেছে। কোনোকিছু ঠিকমতো মনে থাকেনা। সব কেমন ভুলে-ভুলে যান।
ঘড়িতে কাঁটায়-কাঁটায় বিকেল পাঁচটা। কমলবাবু এখনো বসে আছেন। পত্রিকা পড়া শেষ। তিনি পায়ের উপর পা তুলে দিয়েছেন। এটা করেছেন কাজের মেয়েটিকে বিরক্ত করার জন্য। মেয়েটা অবশ্য শুরু থেকেই বিরক্ত। তাকে আরো বিরক্ত করতে ভালো লাগছে। কাজের মেয়েদের মুখে বিরক্তিই মানায়। হাসি মানায় না।
মেয়েটা মাঝেমাঝে উঁকি দিয়ে দেখছে- তিনি আছেন কি নেই। প্রত্যেকবারই তাঁকে দেখে সে বলে, "আপনে এখনও যান নাই? এরুম কইরা তো ফকিরেরা বইসা থাকে। আপনে কি ফকির টাইপের কিছু নি? খালাম্মার কাছে ক্যান আইছেন? ট্যাকা-পইসা চাইতে আইছেন?"
তার কথার জবাবে কমলবাবু কিছুই বলেননি। শুধু একটু মুচকি হেসেছেন। এই হাসির অর্থ- আমি ফকির আবার ফকিরও না। আমি কিছুই না। আই এম নোবডি।
মেয়েটা আবার উঁকি দিলো। তিনি সঙ্গে-সঙ্গে বললেন, "আরেক কাপ চা দিতে পারবে মা? তোমার খালাম্মার মনে হয় আরো দেরি হবে। খিদা লেগেছে। দুপুরেও না খেয়ে বেরিয়েছি।"
অপরিচিত লোকের মুখে 'মা' ডাক শুনে মেয়েটা ভড়কে গেলো। এই একটি ডাকের প্রতি নারীজাতি দুর্বল। এই ডাকে সাড়া তাদের দিতেই হয়।
মেয়েটা একদৃষ্টে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো। কিন্তু কিছু বললো না। তারপর চলে গেলো ভেতরঘরের দিকে। ফিরলো তার দু'মিনিট পর। হাতে এক-কাপ চা আর পিরিচভরা কিছু আপেল-কমলার টুকরো। সঙ্গে একগ্লাস পানি। পানিটা বোধহয় মাত্রই ফ্রিজ থেকে বের করেছে। গ্লাসের গায়ে বিন্দু-বিন্দু বাষ্প জমে আছে। দেখতে হীরের টুকরোর মত লাগছে।
কমলবাবু ডগডগ করে এক নিঃশ্বাসে সবটুকু পানি খেয়ে নিলেন। তারপর বললেন, "ঠান্ডা পানি আনার জন্য তোমাকে স্পেশাল ধন্যবাদ। খুব তেষ্টা পেয়েছিলো। এখন কলিজাটা ঠান্ডা হয়েছে। তোমার খালাম্মার ঘুম এখনো ভাঙেনি? কষ্ট করে আরেকবার গিয়ে দেখবে?"
মেয়েটা চারিদিকে একবার চোখ বুলিয়ে খানিকটা ঝুঁকে এসে শীতল গলায় বলল, "শোনেন, আপনারে সত্য কথা বলি। খালাম্মা জাইগা আছে। আমি তারে আপনার কথা বলছি। সে আপনার সাথে দেখা করতে চায় না। বিকালের দিকে তার কই জানি যাওয়ার কথা। আপনে বইসা আছেন দেইখা নিচেও নামতে পারতেছে না।"
কমলবাবু মুচকি হাসলেন। বললেন, "তুমি তোমার খালাম্মাকে গিয়ে বলো আমি চলে গেছি। তাহলে সে বাইরে যাওয়ার জন্য নিচে নামবে। তখন তার সাথে কথা বলতে পারবো।"
"কিন্তু আপনে তো যাইবেন না। এইখানেই থাকবেন। খালাম্মার কাছে আমি মিথ্যুক হইয়া যামু না! পরে সে আমার সাথে রাগ করবে।"
"ওটা নিয়ে তুমি চিন্তা করো না মা। ওটা আমি সামলে নেব। তোমার খালাম্মা বুঝতেই পারবেনা- তুমি তাকে মিথ্যা কথা বলেছো।"
মেয়েটা মুখ করুণ করে বলল, "দেইখেন আবার। আপনে আমারে 'মা' ডাকছেন তাই আপনারে সত্য কথা কইছি। আমারে ধরা খাওয়ায় দিয়েন না। তাইলে তারা আমারে বাইর কইরা দিবে। আমার কিন্তু কোথাও যাওনের জায়গা নাই। স্বামী পোলা একটা জন্ম দিয়া ভাগছে।"
বলতে গিয়ে মেয়েটা প্রায় কেঁদেই ফেলল। চোখে পানি আসতেই সে আঁচলে চোখ মুছলো। কমলবাবু খুবই দুঃখ অনুভব করলেন। তিনি মনে-মনে বললেন- 'ভয় পেওনা, আমি আছি। তোমার খালাম্মা আমাকে আজীবন ভয়ের চোখে দেখেছে। ভালোবাসার চোখে দেখেনি'।
মেয়েটা চলে যেতে-যেতে আবার পেছন ফিরে বলল, "আপনেরে একখান কথা জিগাই? সত্য কইরা কইবেন?"
"কী কথা?"
"আপনে কেডা? খালাম্মার কী লাগেন?"
কমলবাবু এবার শব্দ করে হেসে উঠে বললেন, "আমি তোমার খালাম্মার জীবনের প্রথম স্বামী। এতদিন জেলে ছিলাম। তিনদিন আগে ছাড়া পেয়েছি। দেখছো না- কাঁচা-পাকা দাড়িতে আমাকে কেমন পাগলের মত সুন্দর দেখাচ্ছে? হা হা হা।"
মেয়েটা হকচকিয়ে গেলো। তার চোখে রাজ্যের বিস্ময়। সে ভ্রু কুচকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত তাকিয়ে থাকলো। দেখতে লাগলো-- ফকিরের মত দেখতে এক জেলফেরত আসামীকে। ইনি একসময় তার কর্ত্রীর স্বামী ছিলেন- এটা যেন সে মানতেই পারছেনা।
কমলবাবু তার কৌতূহল বুঝতে পেরে বললেন, "অবাক হবার কিছু নেই মা। সুজাতার সঙ্গে আমার সংসার হয়েছিলো মাত্র আটমাস। তারপর যেকোনো একটা কারণে আমাকে জেলে যেতে হয়। সেসময় সে চারমাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলো। জেলে থাকাকালীন লোক মারফত খবর পেয়েছি- আমাদের একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয়।
কাজের মেয়েটি আঁতকে উঠে বলল, "আপনে এগুলা কী কইতাছেন? খালাম্মার তো কোনো মাইয়া-টাইয়া নাই। খালি একটাই পোলা। বিদেশে থাকে। আপনে মাইয়া কই পাইলেন! আমি তো কিছুই বুঝতেছিনা!"
"প্রকৃতিতে অনেক দুর্বোধ্য ব্যাপার থাকে। সবাই সবকিছু বোঝেনা। তুমি যাও মা। সুজাতাকে ডেকে দাও। এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে।"
মেয়েটি আর কথা না বাড়িয়ে দো-তলার দিকে চলে গেলো।
কমলবাবু আবার একা হয়ে পড়লেন। তিনি বসার ঘরের দিকে নজর দিলেন। অত্যন্ত চাকচিক্যভাবে সাজানো হয়েছে। আশ্চর্য্য! তিনি এতক্ষণ এখানেই ছিলেন- অথচ এবাড়ির প্রতি ভালো করে খেয়ালই করেননি! আলিশান বাড়ি বলে যাকে। দেয়ালে কতগুলো পেইন্টিং লাগানো। তিনি মুগ্ধ হয়ে গেলেন। দেখেই বোঝা যাচ্ছে- এগুলো দেশী না। নিশ্চয়ই সুজাতার দ্বিতীয় স্বামী বিদেশ থেকে এনেছে। লোকটা তাহলে অঢেল পয়সার মালিক। এই রাজকীয় বাড়িটাই তার প্রমাণ। তিনি জেলে যাওয়ায় সুজাতার ক্ষতির চেয়ে লাভই হলো বলা যায়।
সিড়িতে জুতোর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কেউ হয়ত নিচে নামছে। কমলবাবু পত্রিকা মেলে ধরে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করলেন। সিড়ির দিকে একপলক তাকিয়ে দেখলেন- সুজাতা নামছে। তার গায়ে রঙচঙে কমলা শাড়ি। কম করে হলেও এই শাড়ির দাম নিশ্চয় দশ হাজারের বেশি হবে। হয়ত আরো বেশি। বর্তমান শাড়ির বাজার কেমন তিনি জানেন না। সুদীর্ঘ কয়েদী-জীবন তাঁর কাছ থেকে বর্তমানের অনেককিছুই কেড়ে নিয়েছে।
কমলবাবু এই একপলকেই কিছু বিষয় বুঝতে পারলেন। শাড়িটা অতি আড়ম্বরপূর্ণ হলেও সুজাতার গায়ে মানাচ্ছেনা। তাকে জংলী-জংলী লাগছে। চুলের রঙও বদলেছে। আগে এই মেয়েটার চুল ছিলো গাঢ় কালো। মেয়ে থেকে ধীরে-ধীরে মহিলা হবার সঙ্গে তার চুলও সোনালী হয়ে গেছে। বোঝাই যাচ্ছে- সুজাতা এখানে আগাগোড়া টাকায় মুড়ে আছে। তাঁর কাছে থাকলে তিনি কখনোই সুজাতাকে এমন আর্থিক সুখ দিতে পারতেন না।
সুজাতা বসার ঘরে এসে দেখলো- কে যেন সোফার ওপর বসে আছে। খবরের কাগজের আড়ালে মুখ ঢাকা। চেহারা দেখা যাচ্ছেনা। এই অজ্ঞাত ব্যক্তিটি আবার কে? এক্ষুণি তো একটা ঝামেলাকে এড়িয়ে যাওয়া গেলো। এখন আবার আরেকটা ঝামেলা! সুজাতা প্রচন্ড রকমের বিরক্ত হলো। সে অতি তীক্ষ্ণ গলায় বলল, "কে বসে আছে এখানে?"
কমলবাবু পত্রিকা সরালেন। তারপর মুখে স্বাভাবিক একটি হাসি ফুটিয়ে বললেন, "কেমন আছো সুজাতা? চিনতে পারছো আমাকে? আমি কমল দত্ত। তোমার প্রথম স্বামী।"
সুজাতা স্তম্ভিত হয়ে গেলো। ভুত দেখে চমকে ওঠার মত ব্যাপার। সে বারকয়েক ঢোক গিললো। কী বলবে ভেবে পাচ্ছেনা। তার এই নতুন জীবনে কমল দত্তকে উপদ্রবের মত লাগছে। এর চেহারাই বলে দিচ্ছে- এই লোকটা এবাড়িতে বারবার আসবে। তার জীবন অতিষ্ঠ করে তুলবে।
"কী হলো? চিনতে পারছো না?"
সুজাতা ভয়ার্ত গলায় বলল, "তু-তুমি! তুমি না চলে গিয়েছিলে?"
"হুম। গেট পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে এলাম। পত্রিকার এই দুর্বৃত্ত ছেলেটাকে চেনা-চেনা লাগছে। কিন্তু চিনতে পারছিনা। তাই আবার ফিরে এসে পত্রিকা নিয়ে বসলাম। আমার মনে হচ্ছে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে চিনতে পারবো। কী আর করার আছে বলো! জেলফেরত লোকের আর কাজ কী! তাছাড়া ছেলেটাকে যতক্ষণ না চিনতে পারবো, ততক্ষণ পর্যন্ত তার ছবি আমার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকবে। ছাড়ো এসব। তুমি দাঁড়িয়ে আছো কেন? বসো। নাকি জেলফেরত মানুষের সাথে বসা বারণ?"
সুজাতা জবাব না দিয়ে বসলো। সে চাচ্ছে না বসতে, কিন্তু না বসেও উপায় নেই। কমল দত্ত নামের এই মানুষটি ঠান্ডাভাবে ভয়ংকর। গরমভাবে ভয়ংকরদের চেয়ে ঠান্ডাভাবে ভয়ংকরদের হিংস্রতা অধিক।
কমলবাবু হাসতে-হাসতে বললেন, "ভয় পাচ্ছো নাকি সুজাতা? ভয়ের কী আছে? আমিই তো। মনে নেই- একসময় তুমি এই আমাকেই জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছিলে?"
সুজাতার ভয় আরো বেড়ে গেলো। এই লোকটাকে কেন যেন সে দারণ ভয় পায়। ভয় পাওয়ার মত কোনো ব্যাপার তাঁর মাঝে নেই। তবু সে ভয় পায়। কেন পায় নিজেও জানেনা।
"এমন উশখুশ করছো কেন সুজাতা? কিছু হয়েছে?"
"কই, না তো। কী হবে? কিছুই হয়নি?"
"কেমন আছো জিজ্ঞেস করেছিলাম। উত্তর দাওনি।"
"ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?"
"আমি আছি বেশ। তবে বাইরের দুনিয়ায় এখনও অভ্যস্ত হয়ে উঠিনি। সূর্য্য ডুবলেই অস্থির-অস্থির লাগে। নির্জনে থাকতে ইচ্ছে করে। অথচ ঢাকা শহরের অবস্থা দেখ-- নির্জনতার কোনো চিহ্নই নেই।"
"কবে ছাড়া পেলে?"
কমলবাবু হাসলেন। বললেন, "এটা জিজ্ঞেস করছো কেন? আজমল এসে বলে যায়নি- আমি আসব? জেনেও না জানার ভান করছো কেন?"
সুজাতা জবাব দিলোনা। সে আগের মতই অপ্রস্তুত। আজ বিকেলে কিছু কেনাকাটা করার ছিলো। সেটাও বোধহয় হবে না। এই লোকটা এসে তার আজকের দিনটা মাটি করে দিলো।
কমলবাবু বললেন, "তুমি আগের চেয়ে অনেক বদলে গেছো সুজাতা। আগে তুমি অনেক স্লিম ছিলে। দেখতে খুবই রূপবতী লাগতো। এখন তোমার শরীর দেখছি অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে। এত মুটিয়ে গেলে কেন? মোটা শরীরের অনেক অসুবিধা, জানোনা?"
বলে কমলবাবু সামান্য হাসলেন। তারপর পাঞ্জাবীর পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট আর দেশলাই বের করে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে দিলেন। কাজের মেয়েটি বলেছিলো- এখানে সিগারেট খাওয়া নিষেধ। তিনি এই নিষেধের ধার ধারলেন না। কাজের মেয়েদের সব নিষেধ মানতে নেই।
সুজাতার হতভম্ব ভাব এখনও কাটেনি। খুব তাড়াতাড়ি কাটবে বলেও মনে হয়না। তেইশ বছরের একজন জেলখাটা আসামী হুট করে এসে শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলার মত অহেতুক খেজুরে আলাপ করবেনা। এর নিশ্চয়ই অন্য মতলব আছে। সুজাতা অবশ্য কিছুটা আন্দাজ করতে পারছে। ভয় তো সব তার এখানেই। সে বলল, "কয় বছর পর বেরোলে?"
"পরিষ্কার হিসাবে তেইশ বছর দু'মাস ঊনত্রিশ দিন।"
"উঠেছো কোথায়?"
"আমার কোথাও উঠার জায়গা নেই, জানোনা?"
"খাচ্ছো কোথায়?"
"আজমলের হোটেলে। তার কিচেনেই রাতে থাকছি।"
"বিনে পয়সায়?"
"হুম। আজমল ছেলে ভালো। জেলে আমরা একসাথেই ছিলাম। আমায় খাতির-টাতির করে। সে আমার তিনবছর আগে বেরিয়েছে।"
সুজাতা নিশ্চুপ হয়ে গেলো। বলার মত কোনো কথা খুঁজে পাচ্ছেনা। দ্বিতীয় স্বামীকে নিয়ে সে সুখেই আছে। এরমাঝে প্রথম স্বামীর উপস্থিতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। লোকটার এখানে আসার কারণ সে জানে। কিন্তু এখনও সেই বিষয়ে কথা উঠছেনা। শেষমেশ সুজাতা নিজেই জিজ্ঞেস করলো, "এখানে কী মনে করে এলে?"
কমলবাবু রহস্যময় হাসি হেসে বললেন, "তুমি আমার স্ত্রী- তাই এসেছি। স্ত্রীর কাছে আসতে পারবোনা? আমাদের কিন্তু কাগজপত্রে ছাড়াছাড়ি হয়নি। সে হিসেবে তুমি এখনও আমার স্ত্রীই আছো। তোমার একইসাথে দুটো স্বামী। এটা কি ভালো দেখায়? কাউকে না কাউকে তো ছাড়তেই হবে।"
সুজাতার মুখ শুকিয়ে গেলো। কপালে ঘাম ছুটেছে। এবাড়ির প্রতিটা জায়গায় এয়ারকুলার বসানো। তবু তার ঘাম হচ্ছে। বয়স হয়েছে তার। ঊনিশ বছরের একটা ছেলেও আছে। এই বয়সে এসে দুই স্বামী নিয়ে কেলেঙ্কারি সৃষ্টি হলে আর রক্ষা নেই। মান-সম্মানের ছিঁটেফোঁটাও থাকবেনা।
"তোমার বর্তমান স্বামী কি আমার কথা জানে?"
"হুম।"
"কোথায় সে? ডাকো। আলাপ করি একটু।"
"ও বাসায় নেই।"
কমলবাবু মুখটাকে দুঃখের মত করলেন। যেন সুজাতার বর্তমান স্বামী বাসায় না থাকায় তিনি সীমাহীন কষ্ট পেয়েছেন। তিনি সিগারেট শেষ করে মেঝেতে ফেলে দিলেন। ধোঁয়া কিছুটা এখনো বেরোচ্ছে। তিনি পায়ে পিষে আগুন নিভিয়ে দিলেন। তারপর উল্লাসিত গলায় বললেন, "আমার মেয়ে কোথায়? তাকে ডাকো। বাবা মেয়েকে প্রথমবারের মত দেখবে। মেয়েও বাবাকে প্রথমবার দেখবে। ওর নাম কী রেখেছো?"
সুজাতা এই প্রশ্নের জবাবে কী বলবে, তা আগে থেকেই তৈরী করে রেখেছে। সে চটপটে গলায় বলল, "মেয়ের সাথে দেখা করতে চাচ্ছো কেন?"
"আমার মেয়েকে আমি দেখতে চাইবো না? আশ্চর্য্য!"
"না, দেখতে চাইবেনা। সে এবাড়িতে দেবু ঘোষের মেয়ের পরিচয়ে বেড়ে উঠেছে। আমি চাইনা সে জানুক- তার বাবা দেবুঘোষ নয়, তার বাবা কমল দত্ত, যে তেইশ বছরের জেলখাটা দাগী আসামী।"
"সন্তানের কাছে বাবা সর্বাবস্থাতেই বাবা। এখানে জেলফেরত আসামী বলে কিছু নেই। তুমি তাকে ডাকো। আমি আমার মেয়েকে দেখতে চাই।"
সুজাতা ঠান্ডা গলায় কাঠিন্যের সুরে বলল, "আমি চাইনা আমার মেয়ে কোনো অপরাধীর সামনে আসুক। এই সমাজে আমাদের একটা ভালো অবস্থান আছে। আশপাশের লোকজন আমাদের সম্মান করে। তাছাড়া মেয়েও বড় হয়েছে। এখানে সে মায়ের আদর আর বাবার ভালোবাসা দুটোই পাচ্ছে। তুমি এরমাঝে ঢুকে আর ঝামেলা বাড়িওনা। মেয়ে এবাড়িতে সুখে আছে, ভালো আছে। সে যদি এখন জানে- তার বাবা একজন ক্রিমিনাল, তাহলে তার মনের অবস্থাটা কী হবে বুঝতে পারছো?"
কমলবাবু চুপসে গেলেন। তাঁর কেমন যেন লাগছে। বুকের বাঁ-দিকে কিছু একটা তীক্ষ্ণ খোঁচা দিচ্ছে। অস্পষ্ট এক অনুভূতি এসে তাঁকে ঘিরে ধরলো। ঠিকমতো বসে থাকতেও পারছেন না। শরীরে হালকা কাঁপুনির সৃষ্টি হয়েছে। তিনি গম্ভীর মুখে বললেন, "ঠিক আছে। আমি তাকে আমার পরিচয় দেব না। তবু একবার দেখতে চাই। আমি তাকে দেখার জন্যেই এসেছি।"
"মেয়ে এখন দেশে নেই। তার ভাইয়ের সাথে বিদেশে আছে। তারা দেশে ফিরলে তোমায় খবর দেবো। তখন এসে দেখে যেও। এখন প্লিজ যাও। আমার বেরোতে হবে।"
"কোথায় যাবে?"
"সেটা নিশ্চয়ই তোমার দরকারে পড়েনা।"
"মেয়ের নাম কী রেখেছো বললে না যে?"
"যখন দেখা হবে তখন তুমিই জিজ্ঞেস করে নিও।"
"তোমাদের কাজের মেয়েটা বলল- তোমার নাকি কোনো মেয়ে নেই। শুধু একটাই ছেলে।"
"ও এবাড়িতে নতুন। মেয়ে বিদেশ যাবার পরই তাকে রাখা হয়েছে।"
কমলবাবু কিছু একটা বলতে যাবেন, এমন সময় কাজের মেয়েটি এসে বলল, "খালাম্মা, আপনের টেলিফোন আইছে। খালুজান ফোন করছে।"
সুজাতা আচমকাই গর্জে উঠলো। মেয়েটাকে ভারিক্কি এক ধমক দিয়ে বলল, "তোকে এখানে আসতে কে বলেছে? তোর কাজকর্ম নাই? বাড়িতে কি তোকে শুধু খাওয়ার জন্য রাখা হয়েছে?"
কাজের মেয়েটির চোখ-মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। খালাম্মা তো তাকে অনেক আদর করে, কী সুন্দর মিষ্টি ভাষায় কথা বলে। আজ হঠাৎ রাগ করছে কেন? তাও আবার অপরিচিত একটা লোকের সামনে! তার চোখে জল চলে এলো।
সুজাতা কিছু না বলে হনহনিয়ে আবার দো-তলায় চলে গেলো।
কাজের মেয়েটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে। কমলবাবু বললেন, "কেঁদোনা মা। সুজাতা রাগী হলেও মানুষ ভালো। ভালোমানুষের রাগ বেশি হয়।"
মেয়েটি নির্বাক। মাথা নিচু করে আছে। তিনি আবার বললেন, "গলাটা শুকিয়ে গেছে মা। আরেকগ্লাস পানি দিতে পারবে।"
মেয়েটি কিছু না বলে পানি আনতে চলে গেলো।
কমলবাবু আবারও একা হয়ে পড়লেন। তাঁর ভালো লাগছেনা। মনে হচ্ছে দমবন্ধ হয়ে আসছে। কাজের মেয়েটির ক্রন্দিত চেহারাটা চোখে ভাসছে। সে তো কোনো দোষ করেনি। টেলিফোনের খবর দিতে এসেছে শুধু। এতে তো দোষের কিছু নেই। তবুও সুজাতা তাকে বকলো কেন? কমলবাবু বুঝতে পারছেন না। বুঝতে চাইছেনও না। তিনি শুধু এতটুকুই অনুভব করতে লাগলেন- কাজের মেয়েটির জন্য তাঁর খারাপ লাগছে।
অনেকক্ষণ হয়ে গেলো কারো দেখা নেই। সুজাতাও নিচে নামেনি, কাজের মেয়েটিও পানি আনতে গিয়ে উধাও। এবাড়িতে আর মানুষ নেই নাকি! আর কাউকে তো দেখা যাচ্ছেনা। কমলবাবু একা বসে থাকতে-থাকতে বিরক্ত হয়ে গেলেন। বিরক্তিভাব কাটানোর জন্য কিছুক্ষণ পায়চারি করলেন। পত্রিকার দুর্বৃত্ত ছেলেটাকে চিনতে পারলেন। ছেলেটার সঙ্গে তার জেলেই দেখা হয়েছিলো। খুনের মামলার আসামী। অনেক আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। ছাড়া পাবার পর হয়ত আবারও খুন-খারাবিতে মেতেছিলো। তাই তার এমন পরিণাম। কমলবাবু তার জন্যেও দুঃখ পেলেন।
আরো কিছুসময় অতিবাহিত হবার পর কাজের মেয়েটির দেখা মিললো। দেরি হচ্ছিলো দেখে কমলবাবু ভেবেছিলেন- চলে যাবেন। কিন্তু কী যেন মনে করে গেলেন না। এবাড়িতে তাঁর মেয়ে থাকে। হয়ত তাই বাড়িটা ছেড়ে যেতে মন চাইছেনা।
মেয়েটির হাতে একটা ট্রে। তাতে বাটিভর্তি নুডলস। গ্লাস তিনটা। একটায় দুধ, আরেকটায় লেবুর শরবত, অন্যটিতে পানি। কমলবাবু অবাক বনে গেলেন। বললেন, "এসব কেন মা? আমি তো শুধু পানি চেয়েছিলাম।"
মেয়েটা দরদী গলায় বলল, "আমি আপনাগো কথা সব লুকায়া শুনছি। মাইনষের হোটেলে খান শুইনা আমার খুব খারাপ লাগছে। হোটেলের খাওন তো আর বাসার মত না। কী না কী খান কে জানে! তাই আপনারে খাওয়াইতে মন চাইলো। খাইবেন না?"
"অবশ্যই খাবো। তুমি কষ্ট করে বানিয়েছো। না খেলে অন্যায় হবে।"
কমলবাবু প্রথমে লেবুর শরবত খেয়ে নুডলস খেতে শুরু করলেন। খেতে-খেতে বললেন, "দারুণ স্বাধ হয়েছে মা। তেইশ বছর পর নুডলস খাচ্ছি। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।"
মেয়েটি খুশি-খুশি চোখে তাকিয়ে আছে। তার চোখে আনন্দ।
"তোমার হঠাৎ আমাকে খাওয়াতে ইচ্ছে কেন হলো মা?"
মেয়েটা বলল, "আপনে আমারে 'মা' ডাকছেন তাই। আপনের বয়সের কোনো মুরুব্বী কোনোদিন আমারে 'মা' ডাকেনাই। আমার বাপে বাঁইচা থাকলে নিশ্চয়ই ডাকতো। আপনার মুখে 'মা' ডাক শুইনা আমার মনে হইলো আমার বাপে আমারে ডাকতেছে।"
কমলবাবু আবারও অবাক হলেন। তিনি খাওয়া বন্ধ করে মেয়েটির দিকে তাকালেন। মেয়েটির চোখে পানি। সে ঠোঁট কামড়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করছে। তিনি বললেন, "তোমার বাবা বেঁচে নেই?"
"না গো। বাপ-মা কেউই নাই। আমি তাগোরে দেখিওনাই।"
"এবাড়িতে কীভাবে এলে?"
"আমি এইখানে ছোট থেইকা আছি। খালাম্মা আমারে পালক নিছিলো। সে আমারে নিজের মাইয়ার মত আদর করে।"
কমলবাবু চমকে উঠলেন। তবে মেয়েটাকে বুঝতে দিলেন না। তিনি নীরবে খাওয়া শেষ করলেন। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, "তোমার কথা আমার মনে থাকবে মা। আমি যাই। ভালো থেকো।"
এই বলে কমলবাবু বেরিয়ে গেলেন। গেট পর্যন্ত এসে তাঁর মনে হলো- কেউ তাঁকে পেছন থেকে দেখছে। তিনি ঘুরে তাকানোর তীব্র কৌতূহল বোধ করলেন। কিন্তু তাকাননি। তাকালে নিশ্চয়ই দেখা যাবে- কাজের মেয়েটি অশ্রুসিক্ত চোখে তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি মেয়েটির চোখে পানি দেখতে চান না। তাই ঘুরে তাকানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
বাড়ি থেকে বেরোবার পর কমলবাবু রাস্তায়-রাস্তায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে হাঁটতে শুরু করলেন। হাঁটতে-হাঁটতে রাত এগারোটা। তিনি ফিরে এলেন তাঁর থাকার জায়গায়। আজমলের হোটেলে। তিনি আসার পর তাঁকে খাবার দেয়া হলো। তিনি খেলেন না। পেটে ক্ষুধা আছে। কিন্তু খেতে ইচ্ছে করছেনা। তিনি কিচেনরুমের মেঝেতে বিছানা পেতে শুয়ে পড়লেন।
কিছুক্ষণ পর আজমল এসে বলল, "কমলদা, আপনি নাকি কছিু খান নাই। ঘটনা কী? শরীর খারাপ করছেনি কি ভাইজান? কিছু হইলে চুপ মাইরা থাকবেন না। আমারে কন।"
"কিছু হয়নি আজমল। খেতে ইচ্ছে করছেনা।"
"ঐবাড়িতে গেছিলেন?"
"হ্যাঁ।"
"মাইয়ার দেখা পাইছেন?"
কমলবাবু জবাব দিলেন না। আজমল বলল, "ভাইজান, এতদিন ধইরা আপনের মাইয়ারে নিয়া কত কথা কইছেন! অথচ আইজ মাইয়ারে স্বচক্ষে দেইখা আসার পরেও কিছু কইতেছেন না। মাইয়া আপনারে দেইখা কী করলো, কী কথা কইলেন- সব কন। আমার জানতে ইচ্ছা করতাছে।"
কমলবাবু ক্ষীণস্বরে বিড়বিড় করে বললেন, "মেয়ের দেখা পাইনি আজমল। মেয়ে বিদেশে। তবে ওবাড়ির কাজের মেয়েটা আমাকে একগ্লাস লেবুর শরবত খাওয়ালো। খেয়েই আমি মেয়ের কথা ভুলে গেলাম। মেয়েটা লেবুর শরবত ভালো বানায়। আমার নিজের মেয়েটা পারে কিনা কে জানে!"
কমলবাবুর চোখের কোণে পানি চলে এলো। তিনি একটি মস্তবড় ভুল করেছেন। কাজের মেয়েটিকে তার স্বামী-সন্তান নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করা হয়নি। করা উচিত ছিলো। মেয়েটা যদি তাঁর নিজের মেয়ে হতো, তাহলে নিশ্চয়ই প্রচন্ড অভিমান করত। অভিমানী গলায় অভিযোগের সুরে বলত, "তুমি কেমন নানা শুনি! নিজের নাতিকে একবারও দেখতে চাইলেনা!"
কমলবাবু চাদরের কোণা দিয়ে চোখ মুছলেন। কাজের মেয়েটির অভিমান আছে কিনা তিনি জানেন না।

(সমাপ্ত)

বিবাগী শাকিল
রচনাকালঃ- অক্টোবর, ২০২০
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০২১ রাত ১০:৫৪
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×