দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ইসবপুর গ্রামে উন্নত মানের লোহার আকরিকের (ম্যাগনেটাইট) খনি আবিষ্কৃত হয়েছে। খনিটির ব্যাপ্তি ছয় থেকে ১০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে সোনার অস্তিত্বের পাশাপাশি কপার, নিকেল ও ক্রোমিয়ামেরও উপস্থিতি রয়েছে বলে বাংলাদেশ ভুতাত্বিক জরীপ অধিদপ্তর সুত্রে ও এনটিভি সংবাদ ভাষ্যে দেখা যায় । এক হাজার ১৫০ ফুট গভীরতায় চুনাপাথরের সন্ধানও নাকি মিলেছে।
বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের (জিএসবি) কর্মকর্তারা দুই মাস ধরে কূপ খনন করে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গত মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন যা দেশের প্রায় সবকটি সংবাদপত্রে এসেছে ।
খনিটি হাকিমপুর উপজেলা সদরের হিলি স্থলবন্দর থেকে ১১ কিলোমিটার পূর্বে ইসবপুর গ্রাম। ওই গ্রামের কৃষক ইছাহাক আলীর কাছ থেকে ৫০ শতক জমি চার মাসের জন্য ৪৫ হাজার টাকায় ভাড়া নেয় ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর। এরপর থেকে খনিজ পদার্থের অনুসন্ধানে কূপ খনন শুরু করা হয়।
গত ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। ৩০ সদস্যের বিশেষজ্ঞ একটি দল তিন ধাপে এই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। অবশেষে তারা কাঙ্ক্ষিত সেই সাফল্য পেয়েছেন।
বাংলাদেশ ভুতাত্বিকি জরীপ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে পৃথিবীর যে কয়েকটি দেশে লোহার খনি আবিষ্কার করা হয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশের লোহার মান ৬৫ শতাংশের ওপরে। আর কানাডা, চীন, ব্রাজিল, সুইডেন ও অস্ট্রিলিয়ার লোহার মান ৫০ শতাংশের নিচে। জয়পুরহাট বিসিএসআইআর পরীক্ষাগারে পরীক্ষায় এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।
এর আগে ২০১৩ সালে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর এই গ্রামের তিন কিলোমিটার পূর্বে মুশিদপুর এলাকায় কূপ খনন করে খনিজ পদার্থের সন্ধান পেয়েছিল। সেই গবেষণার সূত্র ধরে দীর্ঘ ছয় বছর পর চলতি গত ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। এরপর এক হাজার ৩৮০ থেকে এক হাজার ৫০০ ফুট গভীরতা পর্যন্ত খননকালে সেখানে লোহা থাকার সম্ভাবনা দেখা যায়।
দীর্ঘ ৬ বছর চেষ্টার ফলে এক হাজার ৭৫০ ফুট গভীরতা খনন করে লোহার খনি আবিষ্কৃত হয়েছে। এখানে প্রায় ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার আকরিকের মজুদের একটি স্তর পাওয়া গেছে। খনিতে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন টন লোহাসহ মূল্যবান পদার্থ রয়েছে।
এই অঞ্চলে ৬০ কোটি বছর আগে সমুদ্র ছিল। সেই কারণে এখানে জমাট বাঁধা আদি শিলার ভেতরে লোহার আকরিকের এই সন্ধান পাওয়া গেছে।
লোহার খনি পাওয়ার খবরে স্থানীয়রা উল্লাস প্রকাশ করেছেন । এখান থেকে লোহা উত্তোলন করা হলে খনি এলাকার মানুষদের জীবনমান পাল্টে যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করছেন । আমরাও আশা করছি দৃশ্যপটটি যেন এমনটাই হয় ।
তাই খনিটির গুরুত্ব বিবেচনায় সরকারের কাছে দ্রুত খনি বাস্তবায়নের জন্য আমরা জোর দাবী করতেই পারি ।
ছবি ও কথা সুত্র :
১) বাংলাদেশ ভুতাত্বিক জরীপ আধিদপ্তর
২) প্রথম আলো
৩) এনটিভি নিউজ
৪) গুগল ছবি ইমেজ
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১৯ রাত ৩:৫২