একবার এক তরুন, এক আলেমের কাছে গিয়ে দোয়া চাচ্ছে, “হুজুর, আপনি আমার জন্য একটু দোয়া করেন, আল্লাহ্ যেন আমাকে একটা সন্তান দান করেন। সেই তরুন আবার কিছুদিন আগেই কুরআনের একটা আয়াত পড়েছে, সুরা শুরার ৪৯-৫০ ন্ং আয়াত।
“তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল।“
কাজেই সন্তান তো আল্লাহই দিবেন, এই আশায় সে বারবার আলেমের কাছে দোয়া চেয়ে যাচ্ছে। এভাবে ৪/৫ বছর ধরে ক্রমাগতভাবে এই তরুন সেই আলেমের কাছে দোয়া চেয়েই যাচ্ছে, কিন্তু সন্তান আর হয় না।
একদিন আলেমের সন্দেহ হলো, সেই তরুনকে কাছে ডেকে বললো, আচ্ছা বাবা, তুমি বিয়ে করেছ তো?? তরুনটি মাথা চুলকে বললো, না হুজুর, বিয়ে তো করা হয়নি। আলেম সবিস্ময়ে বললেন, ওরে, বেকুউব, তুমি বিয়েটাই করো নি?? বিয়ে না করেই আল্লাহ্ তোমাকে সন্তান দিবেন?? কুরআনে আল্লাহ্ সন্তান দিবেন তো বলেছেন, তার মানে কি এই, আল্লাহপাক আসমান থেকে সন্তান নাজিল করবে তোমার জন্য ??
ঠিক একইভাবে, আল্লাহ্ আমাদের রিজিকদাতা। কিন্তু সেই রিজিক আমরা শ্রমের মাধ্যমে পাওয়ার চেষ্টা না করলে কখনোই এমনি এমনি আমাদের প্লেটে খাবার চলে আসবে না। আল্লাহপাক বলেন,”আমি মানুষকে শ্রম নির্ভর করেই সৃষ্টি করেছি” (সুরা বালাদ)
আমার কাছের কিছু মানুষকে আমি যখন জিজ্ঞাসা করি, আচ্ছা, তুমি তো মুসলিম, সবই তো জানো মাশা'আল্লাহ কিন্তু ফরয নামাজ, পর্দা বা অন্যান্য ইসলামিক আমলগুলো এখনো পালন করছো না কেন??
তারা তখন একটা কমন উত্তর দেয় ; বলে, যেহেতু আল্লাহই হেদায়াতের মালিক, যেদিন তিনি হেদায়াত দিবেন, সেদিন থেকে তারা পাক্কা মুসলিম হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। পাক্কা নামাজী হবে, পাক্কা হিজাবী হবে, জীবনের মোড়টাই হয়তো সেদিন ঘুরে যাবে। তাই তারা আপাতত নিজে থেকে কোন ভাল ইসলামিক বই পড়তে/ভিডিও দেখতে, ভাল আলেমদের সাথে মিশতে খুব একটা চেষ্টা করছে না। বসে আছে সেই আসমানের হেদায়াতের অপেক্ষায়। তারপরেই তো ফাটায় দিবে সব। আল্লাহু আকবার। হেদায়াতের জন্য ন্যূনতম চেষ্টাটা না করেই হেদায়াত আশা করছে এই হতভাগার দল। উপরের সেই তরুনটির মূর্খতার সাথে এই মানুষগুলোর মূর্খতার কি অপূর্ব মিল আমি খুঁজে পাই !!
--- আল্লাহপাক সবাইকে যেন এইসব শয়তানের কুবুদ্ধি থেকে বের হয়ে এসে, কষ্ট করে আল্লাহর হেদায়াত পাওয়ার চেষ্টায় আমাদের জীবন উজাড় করার তৌফিক দান করেন, আমীন।