somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টাঙ্গুস্কা বিস্ফোরন- যে রহস্যের আজও উত্তর মেলেনি ( The unravelled Mystery of Tunguska Explosion) .

১৭ ই মার্চ, ২০১২ রাত ২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯০৮ সালের ৩০শে জুন রাশিয়ার সাইবেরিয়ার বৈকাল হ্রদের উত্তর-পশ্চিমের দুর্গম পার্বত্য এলাকা টাঙ্গুস্কায় ঘটেছিল এক প্রচন্ড শক্তির বিস্ফোরন।এটি ছিল হাইড্রোজেন বোমা আবিস্কারের আগ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসের বৃহত্তম বিস্ফোরন । সে বিস্ফোরনের শক্তি ছিল হিরোশিমার পারমানবিক বোমার চেয়ে ১০০০ গুন বেশী শক্তি শালী। কি ছিল সেই বিস্ফোরন? আজ ১০৪ বছর পরেও সে প্রশ্নের সঠিক উত্তর মেলেনি।






টাঙ্গুস্কা।

রাশিয়ার সাইবেরিয়ার এ এলাকায় জনবসতি নেই বললেই চলে। অল্প কিছু আদিবাসী “ইভেঙ্কি” বাস করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দূরে দূরে । তখন গরমকাল,সকাল বেলা। সুর্য্যের মত উজ্জ্বল এবং উত্তপ্ত নীল আগুনের কুন্ড নেমে এল আকাশ থেকে। ৭-১৭ মিনিটে আঘাত হানল সে আগুন। এর প্রচন্ড শব্দ মনে হল লক্ষ কোটি কামান যেন একসাথে গর্জে উঠল, ৫০০ মাইল দুরেও শোনা গেল সে শব্দ। আশেপাশের সমস্ত কিছু কেপে উঠল প্রচন্ড শক ওয়েভে। মুহুর্তের মধ্যে তা মাটিতে শুইয়ে দিল পাহাড়ী নদী টাঙ্গুস্কার আশেপাশের গাছপালাকে, উপড়ে ফেলল শ’কিলোমিটার দুরের বাড়ী ঘরদোর। প্রচন্ড শব্দে চিরতরে শ্রবনশক্তি হারাল পশু চারনকারীরা। শুন্যে তুলে মাটির উপর আছড়ে ফেলল মানুষজন গবাদিপশুদেরকে। বিস্ফোরনে পুড়ে যাওয়ার পর শুরু হল কালো ছাইয়ের বৃস্টি, চলল কয়েকদিন। ঘটনাস্থল থেকে ৪০০ মাইল দূরে কানস্ক( Kansk) শহরে চলন্ত ট্রেন কেপে উঠে থেমে গেল। মনে হল গোটা ট্রেনটাই ছিটকে পড়বে রেললাইন থেকে। সীট থেকে আছড়েপড়ল যাত্রীরা। বিস্ফোরনস্থল জনমাননশুন্য হওয়াতে কোন প্রানহানি ঘটে নি।
৫০০ মাইল দুরের নিকটতম ইর্খটুস্কের ভুমিকম্প পর্যবেক্ষন কেন্দ্র তা রেকর্ড করল ভূমিকম্প হিসেবে। ১০,০০০ কিলোমিটার দূরে লন্ডনে বায়ুমন্ডলের চাপের তারতম্য ধরা পড়ল। পৃথিবীর উলটো দিকের ওয়াশিংটনের সিসমোগ্রাফ যন্ত্র জানান দিলো এই বিস্ফোরনের।

বিস্ফোরনে উপড়ে যাওয়া গাছপালা।


এই বিস্ফোরনের মাত্রা ছিল ১০-১৫ মেগাটন টি,এন,টি’র সমান শক্তির। পারমানবিক বোমার আগে সবচে’ শক্তিশালী বিস্ফোরক ছিল টি,এন,টি বা ট্রাই,নাইট্রো টলুয়েন(TNT= Tri nitro toluene) আর মেগাটন সমান হল ১০ লক্ষ মেট্রিক টন। অর্থাৎ ১কোটি ৫০ লক্ষ টন টি,এন,টি র সমান ছিল এর শক্তি। তাপমাত্রা উঠেছিল ৫০০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। এই বিস্ফোরন ছিল এ যাবৎ কালের সবচে বড় পারমানবিক বোমা রাশিয়ার “ জার বোম্বা”র তিনভাগের এক ভাগ সমান শক্তির। ২১৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে আনুমানিক ৮ কোটি গাছকে মাটির সাথে শুইয়ে দিয়েছিল এ বিস্ফোরন। যে কোন বড় মেট্রোপলিটান শহরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার জন্য যথেস্ট শক্তিশালী ছিল এই বিস্ফোরন।



ইতিহাস- এতবড় বিস্ফোরন কিন্তু ছিল অনেকটাই উপেক্ষিত। ১৯১৪ সালের প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লব, গৃহযুদ্ধ ইত্যাদি কারনে টাঙ্গুস্কা নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য হয় নি। অবশেষে ১৯২১ সালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ মিউজিয়ামের উল্কা সংগ্রহের প্রধান কিউরেটর ভ্লাদিমির কুলিকের নেতৃত্বে প্রথম বৈজ্ঞানিক অভিযান হল টাঙ্গুস্কায়। সাইবেরিয়ার চরম বৈরী আবহাওয়ায় তার দল সেবার ঘটনাস্থল কেন্দ্রে পৌছাতে পারে নি।.১৯২৭ সালে দ্বিতীয়বার অভিযানে এলেন কুলিক। নিকটবর্তী ইভেঙ্কি আদিবাসীরা এ বিস্ফোরন নিয়ে কোন তথ্য দিতে চায়নি কুলিকের দলকে। তাদের বিশ্বাস ছিল সেদিনের সে বিস্ফোরনে দেবতা “ওগডি” অভিশাপ দিয়ে ধ্বংশ ধ্বংশ করেছিলেন সে এলাকার গাছপালা, পশুপাখি। দ্বিতীয় অভিযানে বিস্ফোরন স্থলের দক্ষিনে এসে থেমে গেল কুসংস্কারাচ্ছন্ন এভেঙ্কী শিকারীরা। ফিরে এসে নতুন গাইড নিয়ে অবশেষে কুলিকের দল পৌছান বিস্ফোরন এলাকায়। পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে কুলিক দেখলেন মাইলের পর মাইল জুড়ে ধ্বংশযজ্ঞ। দৈত্যাকৃতি প্রজাপতির আকারের ৮০০ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে ধ্বংশপ্রাপ্ত বনজঙ্গল। আশ্চর্যের বিষয় হল উল্কাপিন্ডের আঘাতে সৃস্ট কোন গর্ত খুজে পেলেন না কুলিক। কেন্দ্র স্থল থেকে উল্টো দিকে উপড়ে পড়েছে পুড়ে যাওয়া গাছপালা। কিন্তু কেন্দ্রে ঠাই দাঁড়িয়ে আছে ডালপালাহীন বাকল ছিলে নেওয়া গাছগুলো। হিরোশিমার পারমানবিক বিস্ফোরনের পর একই ধরনের ডালপালা খসে পড়া, বাকল ছিলে যাওয়া লক্ষ করেন বিজ্ঞানীরা। ১৯৩৮ সালে বিমান থেকে এ এলাকার জরীপ করা হয়। এরপর আরো তিনবার এ এলাকায় অভিযান চালান কুলিক। কিন্তু বিস্ফোরনের আঘাতের চিহ্নস্বরুপ কোন গর্ত খুজে পাওয়া যায় নি। ১০ থেকে ৩০ মিটার মাপের বিভিন্ন আকৃতির গর্ত পান কুলিক কিন্তু সে গুলো আঘাতের ফলে সৃস্ট নয়।
প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বিবরন- বিস্ফোরনস্থলের ৪০ মাইল দক্ষিনে ভানাভারা শহরের সেমেনভ ( S. Semenov) ১৯৩০ সালে বিজ্ঞানী কুলিকের কাছে বর্ননা করেছিলেন তার সে দিনের অভিজ্ঞতার কথা।
“ সে দিন আমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বারান্দায়চেয়ারে বসেছিলাম উত্তরদিকে মুখ করে। হঠাৎ তাকিয়ে দেখলাম উত্তরের আকাশ চিরে দুই ভাগ হয়ে গেল। সে ফাক দিয়ে বেরিয়ে এল আগুন। সারা উত্তর দিকের আকাশের পুরোটা জুড়ে আগুন আর আগুন। সে থেকে আসছিল প্রচন্ড তাপ। মনে হল আমার গায়ের শার্টে আগুন লেগে গেছে। খুলে ফেলতে চাইলাম শার্ট। এ সময় এল প্রচন্ড সেই শব্দ। ছিটকে পড়লাম চেয়ার থেকে কয়েক মিটার দূরে। গরম বাতাসের হলকা ঘিরে ধরল এলাকাকে। কেপে উঠল মাটি। কিছুক্ষন জ্ঞানহীন পড়ে রইলাম মাটির উপরে , মনে হচ্ছিল ছিটকে আসা পাথরের চাই মুহুর্তে এসে পিষে দেবে আমাকে। কিছুক্ষন পর আবিস্কার করলাম বেচে আছি, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষেত খামারের ফসল,এলাকার অনেক বাড়ীঘরদোরের চুর্নবিচুর্ন কাচের জানালা, ছাদ ইত্যাদি”
বিস্ফোরনের ব্যাখ্যা-
১) উল্কাপিন্ড? – টাঙ্গুস্কার বিস্ফোরনের সর্বাধিক গৃহীত মতবাদ হল যে এটি ছিল বিশাল উল্কাপিন্ড যা মাটি থেকে ৬-১০ কিলোমিটার উপরে এসে জ্বলে ওঠে। প্রতিনিয়তই বহির্বিশ্বের উল্কাপিন্ড ঢুকে পড়ছে বায়ুমন্ডলে আর প্রচন্ড বেগের ফলে বায়ুমন্ডলের সাথে সঙ্ঘর্ষে তা জ্বলে ঊঠে ছাই হয়ে যাচ্ছে। ৩০ মিটার ব্যাসের উল্কাপিন্ড বায়ুমন্ডলে ২০ কিলোটন শক্তিতে বিস্ফোরিত হতে সক্ষম। কিলোটন মাপের উল্কাপিন্ডের বিস্ফোরন বছরে দু একবার ঘটছে বায়ুমন্ডলের উচুতে- আমেরিকান বিজ্ঞানীদের ধারনা এ রকমই। আর টাঙ্গুস্কার মত মেগাটন মাপের বিস্ফোরনের উপযোগী উল্কা পিন্ড ৩০০ বছরে একবার আঘাত হানে পৃথিবীতে।
১)ধুমকেতু না উল্কাপিন্ড?- বৃটিশ বিজ্ঞানী F.J.W. Whipple টাঙ্গুস্কা বিস্ফোরন সম্পর্কে বলেন”এটি ছিল বরফ এবং ধুলাবালির ছোটখাট ধুমকেতু। প্রচন্ড বেগে ধেয়ে এসে বরফ এবং ধুলাবালি বায়ুমন্ডলের সংস্পর্শে এসে তা জলে ওঠে এবং পৃথিবীপৃষ্ঠে পৌছানোর আগেই তা ভষ্মিভুত হয় তাই কোন আঘাতের গর্ত খুজে পাওয়া যায় নি। ঐ সময়ে ইউরোপের আকাশে কয়েকদিন দেখা যায় ধুমকেতু। বিজ্ঞানী কার্ল সাগান মনে করেন বরফের ধুমকেতু’র আঘাতের ফলেই ঘটে টাঙ্গুস্কার বিস্ফোরন।




৩) এন্টীম্যাটার?

৪) ব্লাক হোল – খুব গ্রহনযোগ্য না হলেও দু একজন বিজ্ঞানী দাবী করেন ব্লাকহোল টাঙ্গুস্কা হয়ে পৃথিবীর মধ্য দিয়ে চলে যায়।


৫) ভিনগ্রহের মহাশুন্যযান?
রুশ লেখক আলেক্সান্ডার কাজানাতসেভ টাঙ্গুসকা বিস্ফোরন নিয়ে লেখেন বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী "The Explosion" । অনেকে ধারনা করেন পারমানবিক শক্তিচালিত ভিনগ্রহের মহাশুন্যযানে বিস্ফোরন ঘটে টাঙ্গুস্কার উপর । দু একজন বিজ্ঞানী ভিনগ্রহের মহাশুন্যযানের ধ্বংশাবশেষ খুজে পাওয়ার ও দাবী করেছেন। এদের ই একজন হলেন , Dr. Yuri Labvin,। ২০০৯ সালে টাঙ্গুস্কাতে খুজে পাওয়া বিচিত্র চিহ্ন আঁকা কোয়ার্জের টুকরোকে মহাশুন্যযানের কন্ট্রোল প্যানেলের ধ্বংশাবশেষ হিসেবে দাবী জানান।


তথ্যসূত্র

১)http://www.unmuseum.org/siberia.htm
২)http://www-th.bo.infn.it/tunguska/
৩)http://science.nasa.gov/science-news/science-at-nasa/2008/30jun_tunguska/
৪) http://en.wikipedia.org/wiki/Tunguska_event।
৫) Sagan’s Cosmos- youtube.
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৫:১৩
২১টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×