somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পূর্বাপর

২৯ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘নেই’ শব্দটির সাথে আমার পরিচয় সেই ছেলেবেলা থেকে। আমি শ্লেট-পেন্সিলে লেখা সর্বশেষ প্রজন্মের মানুষ। কোণ ভাঙ্গা একটা শ্লেট বগলদাবা করে যখন স্কুলে যেতাম, সহপাঠিদের হাতে তখন শোভা পাচ্ছে ‘রাইটার’ কলম আর সুন্দর মলাটের খাতা। লোভ হতো, কিন্তু কিছু বলতাম না। চুপচাপ ক্লাসের এক কোনে বসে বর্ণমালা লিখতাম সার বেঁধে। বাবা-মা দুজনেই স্কুল শিক্ষক। তিন ভাই বোনের পড়ালেখার খরচ যোগাতে গেলে ঘরে খাবার থাকে না। খাবার কিনতে গেলে হয়তো ভাইয়ার স্কুলের বেতন দেয়া হবে না-এই টানাটানির রশির ভেতর দড়াবাজিকরের মত করে সংসারটা কোনরকমে হেঁটে যাচ্ছে। অদ্ভুত ট্র্যাপিজ! মনে আছে, আব্বা একদিন নতুন একটা মলাট বাঁধাই করা খাতা আর একটা কলম কিনে দিয়ে আমাকে বললেন, ‘তোমাকে ডাক্তার হতে হবে’। কলম হাতে নিয়ে আনন্দের আতিশায্যে ঘাড় কাত করে বললাম, ‘আচ্ছা’। ক্লাস ফোরের একটা বাচ্চা ছেলের হাতে নতুন খাতা কলম মানে, তার বিনিময়ে সে প্রয়োজনে পড়ালেখা পর্যন্ত ছেড়ে দিতে রাজি! ডাক্তার হওয়া তো মামুলি ব্যাপার! সাত পাঁচ না ভেবেই রাজি হয়েছিলাম। বাবা হয়তো ভুলে গেছেন তাঁকে দেয়া প্রতিশ্রুতি’র কথা। ছেলেটার মনে আছে-সে ডাক্তার হতে পারেনি!

খেলনা’র দোকানে গেলে লোভ হতো খুব। কত্ত রঙ-বেরঙের লাইট’অলা খেলনা গাড়ি, মটর সাইকেল, উড়োজাহাজ। একবার স্ট্রীট হক নামের একটা খেলনা মটর সাইকেল খুব পছন্দ হলো এক্সিবিশনের মাঠে। আব্বার সাথে গিয়েছি। ঘুরে ঘুরে সার্কাস দেখলাম, জাদু দেখলাম, হোণ্ডা খেলা দেখলাম, অথচ মন পড়ে রইলো ওই খেলনাতে। পছন্দের কথা বার বার আব্বাকে বলার চেষ্টা করেছি, তিনি শোনেন নি। কিংবা হতো শুনেছেন, কিন্তু নিজের সামর্থ্যের কথা ভেবে না শোনার ভাণ করেছেন। বাসায় ফিরলাম মনখারাপ করে। চোখে পানি নিয়ে অভিমান করে একসময় ঘুমিয়েও পড়লাম। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, আব্বা জর্দ্দার দুটো স্টিলের কৌটোর মুখ আর পেঁপে গাছে ডাল দিয়ে একটা মটর সাইকেল বানানোর চেষ্টা করছেন। আমাকে দেখে একটু হাসার চেষ্টা করলেন। বললেন, ‘বাজান, তোমারে প্রত্যেকদিন এইরকম হুণ্ডা বানাইয়া দিমু’। কি কারণে জানিনা, সেদিন স্কুলে সারাদিন আমার মন খারাপ ছিলো। বার বার আব্বার সেই মলিন হাসিটা চোখে ভাসছিলো। ছেলেকে খেলনা কিনে না দিতে পারার অপরাধে তিনি সাত সকালে ঘুম থেকে উঠেই নিজে হাতে খেলনা বানাতে বসেছেন। কি জানি! হয়তো সারারাত না ঘুমিয়ে নিজের অসামর্থ্যের অপরাধবোধে ছটফট করেছেন!

বাসার ভেতর সবচেয়ে ব্যস্ত মানুষ আম্মা। মফস্বলের একমাত্র বেসরকারী গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা (নভেম্বর ১৯৭২-নভেম্বর ২০১০)। ১৯৭২ সালে ঢাকার একটা নামকরা স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পাবার পর যখন তিনি মফস্বল ছাড়ার উদ্যোগ নিচ্ছেন, তখন আম্মার শিক্ষক (সবাই উনাকে পণ্ডিত স্যার বলে ডাকতেন) বললেন, 'তোমরা যদি সবাই ঢাকা চলে যাও, তাহলে এই গ্রামের মেয়েদের পড়াবে কে? তাদের কি শিক্ষার দরকার নাই?' স্যারের ওই এক কথায় আম্মা ঢাকার চাকরীটা ক্যানসেল করে দিয়ে জয়েন করলেন মফস্বলের স্কুলটাতে। উচ্চ পদস্থ, কিন্তু নিম্ন বেতনস্থ। মাস শেষে পান সর্বসাকুল্যে ২৫০০ টাকা (কিছু কম বা বেশি হতে পারে)। প্রধান শিক্ষিকা হবার সুবাদে উনাকে সামর্থ্যের বাইরে অনেক যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। মহিলা সমিতির সভানেত্রি তিনি। প্রায়ই মিটিং থাকে, মিছিলে যান। বাসায়ও সব ভি আই পি লোকজনের আনাগোণা। বেতনের অনেকটাই চলে যায় তাঁদের আপ্যায়নে। গান হয়, আড্ডা হয়, থিয়েটার হয়। দিন শেষে আম্মার মুখটা ক্লান্ত দেখায়। এতোকিছুর পরও সন্ধ্যায় আমাদের পুরনো বনেদীয়ানার একমাত্র সাক্ষী, এলাকার সবেধন নীলমনি টিভিটা বারান্দায় এনে রাখা হয়। পাড়া প্রতিবেশিরা একে একে এসে মাদুর বিছিয়ে বসেন উঠানে। নিঃশ্বাস বন্ধ করে নাটক দেখেন সবাই; ‘ঢাকায় থাকি’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, সংশপ্তক। দেখতে দেখতে সবার চোখ স্বপ্নাতুর চোখটা ঝাপসা হয়ে ওঠে তিলোত্তমা নগরী ঢাকায় থাকার আকাঙ্খায়। মফস্বলের তারাজ্বলা আকাশের নিচে অনেকগুলো নরনারীর টিভি দেখার সন্তুষ্টি যেন আম্মার ক্লান্তিকে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দিত। তাঁকে তখন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হতো। বিভিন্ন অসুস্থতার কারণে ১৯৯৫ সালে আমার আব্বা চাকুরি ছেড়ে দেন। তিনি প্রায় শয্যাশায়ী ছিলেন অনেক বছর। মনে আছে, সে সময় দিনের পর দিন আমাদের বাসায় কোন বাজার হয়নি। ছোট্ট একটুকরো জমি থেকে যা ফসল পাওয়া যেতো, তাতে বছরের অর্ধেক সময়ের খোরাক হতো। আম্মা উঠানে সব্জী চাষ করতেন। তারই সিদ্ধ ভর্তা খেয়ে স্কুলে যেতাম। পরনের শার্ট প্যান্ট ঢলঢলে হয়ে যেত। তার নিচে চিমসে মেরে পড়ে থাকতো আমাদের আধ খাওয়া পেট।
(এখানে প্রসঙ্গত বলে রাখি, পৃথিবীতে অনেক কষ্ট আছে, কিন্তু না খেতে পারার মতো কষ্ট আর নেই। আর সেই পরিবারের যদি পুরানা ঐতিহ্য থাকে, তাহলে তো কথাই নেই! বুক ফাটে তো মুখ ফোটেনা। এজন্য এখনো খাবারের অপচয় দেখলে মাথা ঠিক রাখতে পারিনা। পৃথিবীতে এখনো পঞ্চাশ মিলিয়নের বেশি মানুষ আছে, যারা দিনের পর দিন উপোষ করে থাকে। শখের বিরোধিতা আমি করিনা, তবে সেই শখ যেন বিলাসিতা না হয়ে যায়। আমাদের একটা অভ্যাস আছে, যে কোন পারিবারিক অনুষ্ঠানে আমরা কেবল ধনী আত্মীয়দেরই দাওয়াত দেই, কারণ তাতে উপহারের পাল্লা ভারী হয়। অথচ, একজন গরীব আত্মীয়কে দাওয়াত দিয়ে একবেলা ভালো খাবারের সুযোগ দিতে আমাদের ব্যক্তিত্বে বাঁধে।)
আমার আম্মা, যিনি শত টানা পোড়েনের মধ্যে থেকেও আমাদেরকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত পড়ালেখা করে যাবার রসদ যুগিয়েছেন। নিজের খাওয়ার টাকা বাঁচিয়ে আব্বার জন্য ঔষধ কিনতেন, আমাদের বায়না মেটাতেন। পরে জেনেছি, নানাবাড়ি থেকে প্রাপ্ত উনার অল্প কিছু জমি ছিলো, তাই বিক্রি করে তিনি আমাদের লেখা পড়ার খরচ দিতেন। অথচ আমাদের ঘুণাক্ষরেও জানতে দেন নি। এমন মায়ের গর্ভে কতবার জন্ম নিলে সাধ পূর্ণ হবে, সেই হিসেব করার সাহস আমি পাইনা। এই সাধ অনন্ত সাধ।

ছোটবেলায় সবচেয়ে আনন্দের ঘটনা ঘটতো, যখন জুয়েল মামা বাসায় আসতেন। তিনি ব্যাপক হাউকাউ পার্টি লোক। জুয়েল মামা’র পরিচয় না দিলেই নয়। তিনি চিত্র নায়ক সোহেল রানা’র জ্যেষ্ঠ ভাই। জুয়েল পারভেজ। একসময় সোহেল রানা, তানিয়া সহ তাঁদের পুরো পরিবার আমাদের প্রতিবেশি ছিলেন (অবশ্যই তা আমার জন্মেরও আগে)। সেই সূত্রে তাঁদের সাথে ভালো একটা পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো। উনারা ঢাকায় চলে আসার পরও জুয়েল মামা অনেকদিন পরপর বেড়াতে আসতেন এবং সাথে করে প্রচুর আপেল এবং কমলা নিয়ে আসতেন। বলা যায়, জুয়েল মামা এলেই আমরা আপেল এবং কমলার মুখ দেখতাম। ভালো বাজার হতো। প্রচুর খাওয়া দাওয়া। প্রায় সারারাত উঠানে বসে গল্প শোনাতেন। মুক্তিযুদ্ধের গল্প। জুয়েল মামার হাতের কব্জিতে গুলি লেগেছিলো, সে জন্য ডানহাতে তিনি কমজোর ছিলেন। সেই গুলি খাওয়ার গল্প আমরা বারবার শুনতাম, আর ভাবতাম ইশশ! আমার যদি হাতে এরকম গুলি লাগতো! রাতে আমরা উনার সাথে দৌড়ে দৌড়ে ঝিঁঝিঁ পোকার বাসা খুঁজে বের করতাম। তারপর সেই বাসায় পানি ঢেলে দিতাম। মামা সবসময় আমাকে কাঁধে নিয়ে ঘুরতে বের হতেন। দু-এক দিন থাকতেন, তারপর আবার চলে যেতেন। একসময় হঠাৎ তিনি আসা বন্ধ করে দিলেন। কতদিন অপেক্ষা করেছি উনার জন্য! রাস্তায় আপেল আর কমলার দোকান দেখলেই জুয়েল মামার কথা মনে পড়তো। পরে জেনেছি, আমাদের ওখানে উনাদের কিছু জমি জমা ছিলো, মাঝে মাঝে তাই দেখা শোনা করতে আসতেন। পরে সেই জমি বিক্রি করে দিয়ে মামা দেশের বাইরে চলে যান। পারভেজ পরিবারের সাথে আমাদের যোগাযোগ কমতে কমতে শূণ্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকে। আমরা আবার সেই নুন আনতে পান্তা ফুরাই।
...
আজ থাক,
আরেকদিন।

কৃতজ্ঞতাঃ
ব্লগার বৃষ্টি কন্যা, যে আমার শৈশবের গল্পগুলো অভিভূত নেত্রে শোনে এবং শোনার পর বিনা বিচারে 'শ্রেষ্ঠ শৈশব' হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দেয়। পূর্বাপর লিখার সময় তার সেই গুণমুগ্ধ চোখ বার বার ভেসে উঠেছে চোখের সামনে। বৃষ্টি কন্যা, আরো অনেক গল্প বলার বাকি, তাইনা?

ব্লগার আধাঁরি অপ্সরা, আমার শৈশবের আগের গল্পগুলো এতো ছোট কেন, এই অভিযোগে যে কোমর বেঁধে আমাকে শাসাতে নেমে গেছে। প্রতিটা পর্বে সে তার অনুভূতিগুলো লিখেছে পরম মমতায়, ঠিক যেভাবে আমি অনুভব করেছি। অনেক বড় হও আপু। তোমার এই মমতা যেন দেশের সব মানুষের জন্য থাকে।

আগের পর্বগুলোঃ
ছেলেবেলা, কৈশোর ও একটি ঝাপসা আয়না!
ঘুড়ি ছেঁড়ার দিন

ছবিঃ Legends of Distant Past Days (আন্তর্জাল)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:৩১
৩৫টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×