somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীরা’র বিয়ে

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৪:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(৯ম অংশের পর)
(বিয়ের প্রথম সকাল ২)


একক সঙ্গীত সকাল শেষ হওয়ার পরে সবাই বসে গল্প করছিল। যেই মুনিয়া এক্টু আগে পাপড়ির গানের সময় নীরার দিকে তাকিয়ে চোখ মটকে কয়েকবার হেসেছে, সে এখন দিব্যি পাপড়ির সব থেকে বড় বান্ধবীর মত আচরন করছে। বড় ননদ ও নিজের বোনের সাথে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে না। মানুষ এত তাড়াতাড়ি কিভাবে রূপ বদলাতে পারে? বান্দরনী তো আসলে দেখি গিরগিটি! মাঝে মাঝে ঠিক মায়ের মত করেই চিন্তা করতে পারে ও আর এটা ভেবে অনেক কষ্টে নিজের হাসি থামায় নীরা। রেজা সাহেব তার ল্যাপটপে ছোট ভাইকে কি যেন দেখাচ্ছিল। নীরা ওদের পাশ দিয়ে রান্না ঘরে পানি খাওয়ার জন্য যাওয়ার সময় রেজা সাহেব ওর দিকে তাকিয়ে খুব গম্ভির মুখে সবার সামনে বলে বসলো “আমার পারসোনাল ব্যাপারে কারোনাক গলানো আমার একদম পছন্দ না।“ বলেই ল্যাপটপ বন্ধ করে দিল। নীরা তো অবাক! ও তো উনার ল্যাপটপের দিকে তাকায় ও নি। পারসোনাল ব্যাপারেই বা নাক গলাল কখন! হয়তো উনি ভুল বুঝেছে, কিন্তু সবার সামনে এভাবে না বললেও হতো । মায়ের মতোই চোখ পেয়েছে নীরা । এই কয়েক সেকেন্ডের ঘটনার মধ্যেই ও দেখেছে মুনিয়ার বিদ্রূপাত্মক হাসি । নীরার চোখে পানি চলে এসেছিল, অনেক কষ্টে নিজেকে সামলাল সে।
একটু পরে সবাই চলে গেল, যাওয়ার সময় বলে গেল, শাশুড়ি আম্মা নাকি আজকে বলেছে দুপুরের খাবার উনার বাড়িতে খেতে ।
নীরা রেজা সাহেব কে বললঃ” আমি কি শাড়ী পরে যাবো? নাকি সালওয়ার কামিজ পরলে ও হবে?”
রেজাঃ নতুন বউয়ের তো শাড়ীই পরা উচিৎ । আর আব্বা আম্মাকে কিন্তু সালাম কর, গিফট আছে ।
শ্বশুর বাড়িতে যখন নীরা রেজা সাহেবের সাথে পৌঁছল তখন প্রায় ২ টা বাজে । শাশুড়ি আম্মাকে সালাম করার পর উনি নীরা কে একটা আংটি পরিয়ে দিলেন । দেবর ছাড়া সবার মুখ থম্থমে । দেরীতে যাওয়ার কারনে সবাই নাকি দুপুরের খাবার আগেই খেয়ে নিয়েছে । টেবিলে যখন ও আর রেজা সাহেব বসল, তখন ওদের সাথে শুধু মুনিয়া খেতে বসল । জেট ল্যাগের কারনে ও নাকি এতক্ষন ঘুমাচ্ছিল। খাবার টেবিলে রেজা সাহেব আর মুনিয়ার মধ্যে এক দফা ঝগড়া হয়ে গেল।
মুনিয়াঃ আমি কিন্তু তোমাকে ভাবি টাবি বলতে পারব না। আমরা প্রায় কাছাকাছি বয়সী । (এইচ এস সি’র সাল অনুযায়ী মুনিয়া নীরার ২ বছরের সিনিয়র)
নীরাঃ ঠিক আছে ।
মুনিয়াঃ না ভাই আগেই সব বলে নেওয়া ভালো । অনেক দিন দেশের বাইরে আছি তো, এই সব বাংলাদেশী ফ্যামিলি পলিটিক্স বুঝতে পারিনা । আমি তো বলতে গেলে আমেরিকাতেই বোরন অ্যান্ড ব্রট আপ ।
(নীরা পরে জানতে পেরেছে মুনিয়া আমেরিকা তে গেছে এইচ এস সি’র পর । মানুষ আসলেই কতবার জন্মায়!!!!! আজব দুনিয়া।)
নীরাঃ আমেরিকা তে তোমরা তো শিকাগো তে থাকো তাই না?
মুনিয়াঃ হ্যাঁ । আমাদের লাইফ স্টাইল আসলে একদম বাংলাদেশীদের মত না ।
রেজাঃ আগে ওরা ব্রংসে থাকতো । রাইহানের (নীরার দেবর) সাথে বিয়ের পর শিকাগোতে গেছে ।
বলে মুখ টিপে হাসল রেজা সাহেব ।
একথা বলার সাথে সাথে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল মুনিয়া।
মুনিয়াঃ আপনার না এই বয়সে বিয়ে করে খুব বাড় বেড়েছে । বউয়ের সামনে খুব দেখাচ্ছেন, তাই না? ড্রয়িং রুমে আপনাদের জন্য কিছু গিফট রাখা আছে, যাওয়ার সময় নিয়ে যেয়েন ।
বলেই টেবিল থেকে উঠে গেল মুনিয়া ।
নীরা আবার অবাক! এই বাড়ির সবাই এমন কেন? সারা জীবন দেখে এসেছে বয়সে বড় দের সাথে সম্মান করে কথা বলতে হয় । আর এখানে সবই অন্য রকম । নীরা আড় চোখে রেজা সাহেবের দিকে তাকায় । তার মুখে কোন ভাবান্তরই নেই ।
খাওয়া শেষে রেজা সাহেব বলল চলো তাহলে যাই ।
নীরাঃ মুনিয়া গিফট নিয়ে যেতে বলেছিল যে?
রেজাঃ ওই গিফট আমি নিবো মনে কর?

চারপাশে আর কেউ নেই, যে যার রুমে । দরজা নিজেরাই লক করে বের হয়ে গেল ওরা ।

.................................................................................চলবে ।


সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:২৮
৮টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×