
কলকাতা বনাম বাংলাদেশ বিষয় টা সামনে এলেই মাথায় চলে আসে মজার এই বাক্যটি "খেয়ে এসেছেন নাকি গিয়ে খাবেন"।
আসলে কলকাতা বাসি হুবহু এই কথাটি বলে না, তবে তাদের বিষয়টি কিছুটা এমনই। বাংলাদেশের মানুষের যেমন দেখে অভ্যাস, তেমন মানসিকতা কোলকাতাতে নেই। তার অর্থ এই নয়, যে তারা অতিথিকে আপ্যায়ন করে না। তারা অবশ্যই অতিথি আপ্যায়ন করে, তবে, তাদের মানসিকতা বাংলাদেশের মতন নয়। বাংলাদেশের মানুষ সবসময় বড় দেয়, বড় নেয়। বড় উপকার করে, আবার বাঁশ দেবার সময়ও বড় বাঁশটি দেয়। ওদিকে কোলকাতার মানুষ সবসময় ছোট দেওয়া-নেওয়া করে।
দুই বাংলার মানূষের এমন পার্থক্যের দুটি কারন আছে।
ভদ্রতার লজ্জাঃ কোলকাতার মানুষের ভদ্রতা ও তার জন্য লজ্জা অনেক বেশী। বাংলাদেশের মানুষ একে অন্যের সাথে আরো গভীরভাবে মিশে। তাই ভদ্রতা কম করা লাগে, লজ্জা কম লাগে। যেমন, বাংলাদেশে এক বন্ধু আরে বন্ধুকে বলে - "আজকে আমার কাছে টাকা নেই, আমি বিল দিতে পারবো না, তুমি বিল দাও"। ব্যাস, সমস্যা শেষ। একই পরিস্থিতিতে কলকাতার বন্ধুরা একে অপরকে বলে - "আজ আমি মানিব্যাগ আনতে ভুলে গেচি মাইরি, তুই বিল দিয়ে দে খন, পরের দিন আমি দিব"। এমন কথা শুনলে মনে হয়, এই লোকটির বিল দেবার ইচ্ছাই নেই। কোলকাতায় গিয়ে এমন ধরনের কথাবার্তা শুনেই বাংলাদেশীরা তাদেরকে ভুল বোঝে।
বাস্তব-বাদীঃ বাংলাদেশের মানুষ মাঝে মাঝে এমন কিছু কাজ করে, যেটা তার ভাল লাগে, কিন্তু কাজটিতে কারো কোন উপকার হয় না। কোলকাতার মানুষ বাস্তব বাদী। তারা শুধুমাত্র ভালো লাগার জন্য অপ্রয়োজনীয় কাজ করে না। যেমন, বাংলাদেশে মামার বাড়ী গেলে, তিন দিন পরে, মামা বলে - "আরে, এসেই যাই যাই করছিস কেন? তোর কলেজ খোলা তো কি হয়েছে? এখানে কয়দিন থেকে বেড়িয়ে যা, এর পরে বাড়ী ফিরিবি"। ওদিকে কলকাতার মামা বলে - হ্যা, তিনদিন হয়ে গেচে, তোর কলেজও খুলেচে। আমার এখানে থাকতে কোন অছুবিদা নেই, তুই চিন্তা কর, কি করবি। এমন কথা শুনে মনে হয়, মামা তার বাসায় রাখতে চায় না। কলকাতায় গিয়ে এমন কথাবার্তা শুনেই বাংলাদেশীরা তাদেরকে ভুল বোঝে।
কলকাতার মানুষেরা অতিথি আপ্যায়ন করে না, অথবা তারা কৃপণ, এমন ধরনের যত বদনাম শোনা যায়, এগুলো সত্য নয়। বাংলাদেশ ও কোলকাতার মানুষের মানসিকতা ভিন্ন। সেজন্য একে অপরকে ভুল বোঝে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




