
প্রিয় পাঠক, আপনি যদি বোখারা-সমরকন্দ, স্পেন-বুলগেরিয়ায় মুসলমানদের পতনের ইতিহাস পড়েন, তাহলে দেখবেন, যে, ওইসব অঞ্চলে যখন কাফিররা ইসলামের উপর আঘাত হানছিলো তখন একদল উলামায়ে কেরাম নিজেদের রক্ত-ঘাম ঝরিয়ে ইসলামে হেফাজতের জন্যে দাঁড়ালো, তখন অন্যদল আলেম মাদরাসার মুহতামিমগিরি আর মুহাদ্দিসগিরি রক্ষায় প্রতিবাদ-প্রতিরোধকারী আলেমদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ফতোয়া আর অপপ্রচার আমদানি করলো, কখনো বললো এরা বাগী তথা রাষ্ট্রদ্রোহী, আবার কখনো বললো এরা খারেজি। এক সময় প্রতিরোধকারী আলেমরা সম্মানের সহিত শাহাদাত বরণ করেন, তখন ওইসব ফতোয়াবিদ আলেমরা মনে মনে ভাবলো, যাক, বিপদ কেটে গেলো, আমরা আরামে বাস করবো। কিন্তু না, একসময় তাদেরই পালা আসলো। শেষপর্যন্ত এরাও মৃত্যুবরণ করলো, তবে জিল্লতির সাথে এবং উনাদের স্বপ্নের মাদ্রাসাসমুহ ঘোড়ার আস্তাবল এবং গরুর গোয়ালায় পরিণত হলো।
প্রচলিত মাদরাসা প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে অনেক মুফতি বলেন, এগুলো হচ্ছে মুস্তাহাব। কিন্তু দ্বীনের প্রতিরক্ষা করা ফরজ। দ্বীন যদি না বাঁচে তাহলে মাদরাসার বিল্ডিং দিয়ে কী হবে? স্মরণ রাখুন, ইলমু দ্বীন শিক্ষা করা মানেই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা নয়। খাইরুল কুরূনের যুগে মাদরাসা ছিল না, কিন্তু ইলমের প্রচার ছিলো। বর্তমানে আফগানিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানে মাদরাসার সংখ্যা বেশি, কিন্তু আফগানিস্তানের মুসলমানেরা আমাদের চেয়ে বেশি ইজ্জতে বাস করতেছে।
মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয় দীনের হেফাজতের জন্যে, দ্বীনকে নিয়ে ব্যবসা বা দ্বীনকে বিক্রি করার জন্যে নয়।অতএব যে মাদরাসা দীনের হেফাজত করতে পারে না এটা মাদরাসা হয় কীভাবে? যেভাবে মসজিদের মধ্যে কিছু মসজিদ আছে "মসজিদে জিরার" (যে মসজিদ মানুষকে দেখানোর জন্য, কারো প্রতি বিদ্বেষ নিয়ে, আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতিত অন্য কোন উদ্দেশ্যে বা হারাম মাল দিয়ে নির্মিত মসজিদকে বলা হয় মসজিদে জেরার) তেমনিভাবে মাদরাসার মধ্যে কিছু মাদরাসা হচ্ছে মাদরাসায়ে জিরার।
তো ভাই প্রথমে ইসলাম বাঁচাও, ইসলামের হেফাজত হলে মাদরাসার হেফাজত হবে, আর যদি ইসলাম ছেড়ে মাদরাসা বাঁচাতে চাও তাহলে বোখারা-সমরকন্দের মতন প্রথমে দীন যাবে পরে মাদরাসা হবে ঘোড়া-গরুর আস্তাবল আর গোয়ালা। একটা কথা স্মরণ রাখবেন মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয় দীনকে রক্ষা করার জন্যে, দীনকে নিয়ে ব্যবসা করার জন্যে নয়। তাই যে মাদরাসা দীন রক্ষার দূর্গ হবে সেটাই হবে প্রকৃত মাদরাসা
যারা সরকারকে তেল মারতেছেন তাদের জন্যে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি হাদীস-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমার উম্মতের কিছু লোক এমন আছে, যারা ইলম হাসিল করে এবং কুরআন পড়ে আর বলে, আমরা দুনিয়ামুখী শাসকগোষ্ঠীর কাছে গিয়ে পার্থিব চাহিদা পূরণ করি, তবে আমাদের দীনদারিকে তাদের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করি। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, এটা হতে পারে না। কাঁটাদার বৃক্ষ থেকে কাঁটা ছাড়া যেমন কিছুই পাওয়া যায় না, অনুরূপ বস্তুবাদী শাসকগোষ্ঠীর কাছে পাপ ছাড়া কিছুই অর্জন হয় না।(সুনানে ইবনে মাজাহ)
অতএব, দেখুন তো, বর্তমানে এর বাস্তবতা খুঁজে পান কিনা?
_____________চৌধুরী আসিফ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:২৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




