ধর্মগ্রন্থ সাধারনত মন্দিরে লুকানো থাকে। বাসায় রাখলে, আলমারীতে তুলে রাখে। ধর্মগ্রন্থ পড়ার অধিকার সবার নেই। নীম্ন জাতের (বংশের) মানুষ ধর্মগ্রন্থ স্পর্শ করলেই পাপ হয়। এটাই হলো ধর্মগ্রন্থের মূল বৈশিস্ট। অন্তত কয়েক হাজার বছর ধরে, বংশ পরম্পরায় ভারতবর্ষের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ তেমন ধর্মগ্রন্থ দেখে অভ্যস্ত। মাত্র এক হাজার বছর আগে, ভারতবর্ষে একটি ব্যাতিক্রমী ধর্মগ্রন্থের আবির্ভাব হয়েছে। সেই ব্যাতিক্রমী ধর্মগ্রন্থ সবাই স্পর্শ করতে পারে, সবাই পড়তে পারে। শুধু তাই নয়, সবাই সেই ধর্মগ্রন্থের ৩০-৫০ লাইন মুখস্ত করে রেখেছে।
সেই ব্যাতিক্রমী ধর্মগ্রন্থ হলো - পবিত্র আল কোরআন। কোরআন নাজিল হয়েছে সবার পড়ার জন্য, ইসলামের সঠিক জীবন ব্যবস্থার জন্য। এই ঐশী গ্রন্থ পরতে পারবে না, স্পর্শ করতে পারবে না, এসব হিন্দুদের থেকে শুনে ও দেখে অভ্যস্ত জাতি, কোরআন ধরা ও পড়া-তে অনেক পিছিয়ে। কোরআন ভুল উচ্চারনে পরলে ঈমান নস্ট হবে ; নিজে বোঝার চেস্টা করলে পথভ্রষ্ট হবে ; এসব কথাবার্তা বলে ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে কোরআন পড়ার প্রতি নিরুৎসাহিত করে। এতে একজন সাধারণ মুসলিম এ থেকে নিজেকে দূরে রাখে।
লক্ষ্য করুন, সারা জীবন ইংরেজী পড়েও, বাংলাদেশের বেশিরভাগ ছাত্র ইংরেজী লিখতে ও বলতে পারে না। তার পেছনে একটাই কারন - ভয়। ভুল হয় কিনা, সেই ভয়ে নিজে কোনোদিন ইংরেজী লেখেনি। শিক্ষক যেটা লিখে দিয়েছেন, সেটা চোখ বুজে মুখস্ত করেছে। ভুল হবার ভয়ে, নিজে কখনো ইংরেজী বলার চেস্টাও করেনি।
কোনকিছু শেখার জন্য প্রথম পদক্ষেপ হলো - ভুল করা। ভুল করতে করতে, মানুষ একসময় সঠিকটা শেখে। যে ভুল করে না, যে কখনোই কিছু শিখতে পারে না। আপনি যাতে কোরআন শিখতে না পারেন, সেজন্যই আপনাকে ভুলের ভয় দেখায়।
আপনি কোন মেশিন নন ; আপনি একজন মানুষ। আপনি কখনোই ১০০% সঠিক পারবেন না। তবে আপনার চেস্টা থাকবে, কিভাবে ভুল কমানো যায়। প্রথমে বেশী ভুল করবেন ; এরপর ধীরে ধীরে ভুলের সংখ্যা কমে যাবে। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া চলতে দিন। এত ভেতরে ভয়ের কিছু নেই।
ভয় দেখিয়ে, কারা আপনাকে কোরআন থেকে দুরে রাখে, সেটা জানেন? তারা কোন খারাপ মানুষ নয়। তারা সবাই খুবই ভালো মানুষ - একশ্রেণির ইসলামিক ধর্মগুরু (মৌলভী/হুজুর)। সেই হুজুরদেরকে তাদের গুরুরাও ভয় দেখিয়েছিলো। এখন হুজুররা আপনাকে ভয় দেখায়। এভাবেই তারা বংশ পরম্পরায় পুরো মুসলিম সমাজকে অন্ধ আতংকের মাঝে ফেলে কোরআনের ঐশী নেয়ামত থেকে দূরে রাখে। সবাইকে এ অন্ধ আতংক থেকে বের হয়ে এসে শুদ্ধ কুরআন আগে শিখি তারপর প্রত্যেহ অর্থসহ কুরআন পাঠ করে নিজে এই ঐশী মর্ম অনুধাবন করি এবং অন্যকেও তা শুনাই, বুঝাই এবং তা নিয়মিত পাঠে উৎসাহিত করি
________চৌধুরী আসিফ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:২৩