আমরা ক্ষুদ্র মানূষ। আমাদের কাছে সমুদ্র অনেক বড়। সুমুদ্রের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত যেতে গেলে হারিয়ে যেতে হবে। ছবিতে সমুদ্র সৈকত দেখতে পাচ্ছেন। এই যে ছাতা আর চেয়ার আছে, এটা থেকে সমুদ্র কত দূরে? খুবই কাছে। মাত্র কয়েক পা হাটলেই সমুদ্রে যাওয়া যায়। লক্ষ্য করুন, আপনি হেটে সমুদ্রে পৌছাবেন ঠিকই কিন্তু সেটা সমুদ্র ভ্রমন হয় না। নৌকা নিয়ে অন্তত কয়েক কিলোমিটার গেলে, সেটাকে সমুদ্র ভ্রমন দাবী করতে পারেন। কিন্তু সমুদ্র সৈকতে চেয়ার থেকে হেটে গিয়ে পানিতে গেলে, আপনি সমুদ্রে পৌছেছেন দাবী করতে পারেন।
মানুষের মহাকাশ আবিস্কার জিনিসটা ঠিক তেমনই। মানুষ মহাকাশে পৌঁছেছে ঠিকই, কিন্তু মহাকাশ ভ্রমন হয়নি। সূর্য ১৫ কোটি কিলোমিটার দূরে। চাঁদ ৪ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। অথচ, স্যাটালাইট, মহাকাশ স্টেশন, ইত্যাদি মাত্র কয়েক শত কিলোমিটার দূরে। অর্থাৎ, খুবই কাছে। মাত্র কয়েকশত কিলোমিটার উপরে গেলেই মহাকাশ পৌছে যাবেন। গাড়ী চালিয়ে যদি খাড়াভাবে উপরে ওঠা যেতো, তাহলে মহাকাশে পৌছাতে মাত্র ২-৩ ঘন্টা লাগতো। মনে রাখবেন, এভাবে মহাকাশ পৌছানো হয়, তবে মহাকাশ ভ্রমন হয় না।
প্রায় ৪০ বছর আগে, মহাকাশের উদ্দেশ্য আমেরিকা দুইটি রকেট পাঠিয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, মহাকাশ গবেষনা করা, ও এলিয়েনের কাছে পৌছানোর সম্ভাবনা তৈরি করা। এই ৪০ বছর যাত্রা করতে করতে, সম্প্রতি সেই রকেট সৌরজগতের বাইরে গেল। অর্থাৎ, এত বছরে, প্রায় ৫৩০ কোটি কিলোমিটার দূরে পৌছেছে।
সমুদ্র সৈকতে, চেয়ার থেকে নেমে, হেটে সমুদ্রে গিয়ে, পানিতে নেমে গোসল করলেন। এতে আপনার কতখানি সমুদ্র ভ্রমন হলো? ওই রকেটের ৪০ বছরের যাত্রা, এবং ৫৩০ কোটি কিলোমিটার গমন করে, ঠিক ততটুকু মহাকাশ ভ্রমন হয়েছে। মহাকাশ এতো বড় !!!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৬:৩১