somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধারাবাহিক চিঠির আয়োজন (মেঘের কাছে রোদ্দুরের চিঠি-১)

২৪ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(২০১৬ সালে প্রতিদিন সকালে ডাইরীর মতই চিঠি লিখতাম, কাউকে উদ্দেশ্য করে না। যখন যাকে সামনে মনে হতো তাকেই ভর করে লেখা হয়ে যেতো চিঠি, দেড়শ চিঠি লিখেছিলাম তখন)

#চিঠি_১
#মেঘের_কাছে_রোদ্দুরের_চিঠি
#এটাই_তোমার_জন্য_চমক
হ্যালো মেঘ....
কি ভাবছ? হঠাৎ তোমাকেই লিখে ফেলব চিঠি। বিশ্বাস হচ্ছে না! আরে চিঠির ভাজ খুলো তো আগে,! অহহো রঙধনু রঙ খামটাই তো খুলো নি, এহ তুমি তো আজ তোমার মন দেউড়ির কপাটই খুলো নি। আরে বেরই হওনি আঁধার ঘর থেকে! কি ব্যাপার এখনো ডাকবাক্সটা তালা বন্ধ... কি! চাবি বালিশের নিচে, কি যে কর না...আরে এই প্রথম একটা চিঠি লিখলাম মেঘ.... আর তুমি এত অবহেলা করছ.... এই শুন, আমার মন কিন্তু খারাপ হবে কয়ে দিলুম!

এমন করলে কয়ে দিলুম
মনটা কিন্তু যাবে চুপসে
অবহেলা কইরো নাকো
বসিয়ো না দিলে কোপ সে!

ও মেঘ ও মেঘ শুনো
কইরে দিব এলোমেলো
পেরেম পত্তর দিলুম খামে
এই যে শুনো হ্যালো হ্যালো!

হয় নি বলা যে কথা হায়
বলব নাকি কানে কানে
শুনলে তুমি নেশায় মাতাল
কেঁপে উঠবে প্রেমের টানে।

আচ্ছা এবার যাও তো, চাবি নিয়ে এসো বালিশটা উঠাও তো। নাও এবার ডাকবাক্সের কাছে যাও! খুলো... দেখো এত চিঠির মাঝখানে রঙধনু রঙ খামটা, হ্যা হ্যা অই সেইটাই, হাতে তুলো দেখি নি... এবার খোলো আলগোছে, প্রেম সে, ভালবাসা সে... হা হা হা হা। নাও এবার পড়া শুরু করো....১....২....৩....

মেঘ, কেমন আছো, ব্যতিব্যস্ত জীবনে নিজের ভাল থাকার কথা কেইবা মনে রাখে। আমার ধারণা তুমিও তেমন। নিজের দিকে খেয়াল দিচ্ছ না তাই না! খুব ভেজালে আছ নাকি?... মেঘ নামে ডাকলেই কেনো জানি মনে হয় তুমি খুব বদের হাড্ডি.... এই নামটা তোমাকেই মানায়... আর কেনো জানি মনে হয় হাজার ছন্দ তোমার মনে, ছন্দ নিয়ে ঘুরো ফিরো.... মনোরম ছন্দে তোমার জীবন ভরা। আচ্ছা এতো ছন্দ কোত্থেকে আসে শুনি!!

সিরিয়াসলি একটা কথা
শুনবে নাকি মনোযোগে
বলতে কথা হাঁসফাঁস প্রাণে
মরছি যেনো মনোরোগে!

এমন কথা শুনো নিকো
শুনতে ইচ্ছে হবে নাকি
হ্যাঁ বা না বলো না তুমি
দিয়ো নাকো আর তো ফাঁকি!

হাজার কথার একটি কথা
শুনলে তুমি অবাক হবে
ভাববে তুমি গভীর মনে
অমর হয়ে মনে রবে!

আঁকুপাকু করছে বড্ড
বলব শুধু একটি কথা
সুযোগ তুমি দিবে নাকি
না দিবে গো মনে ব্যথা?

মেঘ, ঝড়ের মতো আসো, তুফানের মত ওড়িয়ে নিয়ে যাও, কাজটা কি ভালো করতেছ? ফাইজলামি পাইছো মিয়া বদের বদ। দুনিয়াতে যদি বদের প্রতিযোগিতা হয় তাহলে তুমিই ফার্স্ট হবে এ ধারণা। দুষ্টামির পা ঝাড়া একটা। শুনছি তুমি বদ নাকি মঙ্গল গ্রহে জায়গা কিনছ, অই বদ অই জায়গা আমাকে গিফট করবা নাকি... ভালই হবে তোমাকে অইখানে নিয়া টাইট দিতে পারব।

তুমি ছড়া তুমি ছন্দ
মাত্রাছাড়া বর্ণ
তুমি সদা মনের ভিতর
এলোমেলো ঘূর্ণ!

তুমি কবি তুমি গল্প
তুমি কাব্যের ঝুড়ি
তুমি সদা মনে থাকো
হয়ে সুখের নুড়ি।

তুমি চন্দ্র তুমি তারা
তুমি মঙ্গল গ্রহ
তোমার বুকে নামতে শুনো
মনে বাজে দ্রোহ।

তুমি সূর্য তুমি যে মেঘ
তুমি মেঘের ছায়া
তুমি শরত তুমি ভাদ্র
তুমি মোহ মায়া।

চিঠি লিখছি তোমাকে ফিল করছি...খুব ফিল করছি, ছন্দের বারতা নিয়ে এসছো কখন কাছে জানতেই পারিনি! কেমন ঘোর লাগা প্রহরগুলো আমার, সে তুমি যদি বুঝতে। তুমি তোমারে দাও না ভুলিতে। অনুভুতির দুয়ারে কড়া নেড়ে গেলে।ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আচ্ছন্ন এখনো সেই মুগ্ধতা নিয়ে। বুক ফুলিয়ে বলি, বলে যাই ভালবাসি তোমায়, খুব ভালবাসি-মেঘ হা হা হা এসবই কাব্য ভাব বুঝলা। ৯৯% মিথ্যা।

দীর্ঘ সময় দীর্ঘ যুগ পেরিয়ে গেলো
তবু অপেক্ষার দোরে বসে ঠাঁয়
কি জানি কখন এসে নাড়বে
মন দুয়ারের কড়া!

অপলকে তাকিয়ে দূর বহুদূর দৃষ্টি
ধুঁধুঁ পথ... তুমি নেই সীমানায়..
অনিশ্চয়তার এই পথ..
ইচ্ছে হয় নিজেই হারাই।

হা হা হা, ছন্দ যাদুকর, দেখ কেমন কবি কবি ভাব। সবি তোমার বদৌলতে। তুমি থাকলে ছন্দরা এভাবেই মন আকাশে ওড়তে থাকে। যেদিন ওড়ে আসলে কাছে সেদিন এমনই ছিল আমার মন....

কতটা মুগ্ধ ছিলাম সে যদি তুমি অনুভব করতে
কেমন ঘোরে কেটে গেলো কয়েকটা প্রহর
কোথায় ছিলাম আমি! কোন সে অচিনপুরে
হারিয়ে গিয়েছিলাম ফেরার পথ অদৃশ্য!
স্বপ্ন সিঁড়িটা বেয়ে উঠেছিলাম তোমার হাত ধরে
শীতল শিহরণে কেঁপে যাই আমি.. উষ্ণ স্পর্শে তোমার।

হাত ছেড়ে দিলে আচম্বিতে
ঘোর ভেঙ্গে যায়, আমি অনুভবে বাঁচি
উচ্ছ্বসিত মন..
সকল ক্লান্তি ঝেড়ে উদ্যমি হই দৈনিক কর্মে।

আবেগের কড়া নেড়ে জাগিয়ে দিলে অনুভূতি
তুমি কিগো... সেঁটে বসে আছ মন দেয়ালে
অনুভব করি প্রতিক্ষণে খেয়ালে বেখেয়ালে...
আঁখি বন্ধ করি অবসর ক্ষণে
এদিক সেদিক চারিপাশে সে তুমি বিচরণ কর..
আনমনে হেসে হই খুন..
আমার আকাশ বাতাস চন্দ্র তারা ভর্তি আজ মুগ্ধতা
উফ কি যে ভাল লাগার দিন ছিল,
সে কি বুঝতে পারছো তুমি!

তুমি অস্পৃশ্য, বিমূর্ত.... মৌনতার সূতায় বেঁধেছ মন
তোমার ঠোঁট ছুঁয়েচহো অধর, চোখের পাতা, কপোল, ললাট
আর আমি হয়েছিলাম পাথর....
পাথর ভেঙ্গে তুমি মন ছুঁয়েছ আমার!

কি করে থাকি দূরে...সে না হয় থাক দূরেই
মন পাঠিয়ো আকাশের খামে...
ঠিকানা সে তোমার জানাই... রোদ্দুর তাই না?
পাঠাবে কি? অপেক্ষায় রোদ্দুর।

আজ তবে আসি। ভাল থেকো মেঘ অগুছালো চিঠিখানি গুছিয়ে পড়ে নিয়ো...তুমি জানই ত আমি খুবই অগুছালো। -শেষ করছি তবে-তোমার মিহি রোদ্দুর।
পুনশ্চঃ আরে এখনো ঘুম থেকে উঠো নি। উঠ উঠ, দেউড়ির কপাট খুলে ডাকবাক্সের কাছে যাও, তালা খুলে দেখ তোমার জন্য চমক আছে.... নিরাপদে থেকো, অনেক ভালবাসা আর শুভেচ্ছা রইল।

September 11, 2016


সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৩৩
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×