©কাজী ফাতেমা ছবি
হায় জীবন, হায় রিটায়ার্ড পারসন, হায় নিয়তি!
কত স্বপ্নে লালিত একটি সংসার,
কত ঘামের বিনিময়ে সন্তানের মুখে ফুটে উঠেছিলো হাসি,
ব্যাংক কর্মকর্তা উচ্চ পদবী কতই না ছিলো সম্মান!
হায় জীবন, সময় নিয়ে যায় বেলাশেষের বয়স দোরগোড়ায়,
কত দাপট সংসার মাঝে, সংসারের কর্তা তিনি,
কত সম্মান কর্মস্থলে, তিনি ব্যাংক কর্মকর্তা,
কত ফাইল সই হলেই মানুষের স্বপ্ন হতো পূরণ!
কত সৎ কাজের সাক্ষী হয়ে থেকেছিলেন
নোটিংয়ের এক একটি স্বাক্ষরে,
কত নিয়ম নীতির বুকে মন রেখে কর্মস্থলে থেকেছেন সৎ অবিচল,
হায় রিটায়ার্ড পারসন, বেলাশেষের খেয়ায় ভাসছেন অবিরাম।
উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত একমাত্র ছেলে
চাকুরীরত, মোটা অংকের বেতন...... ছেলে মেয়ে তার দু'
কথা ছিলো তো এই ... সুখ কলকাকলীতে ভরা সংসার
অথচ ছেলের উচ্চাকাঙ্খার কাছে পরাজিত রিটায়ার্ড পারসন!
সঙ্গী নেই বেঁচে, হেঁটে হেঁটে হাফিয়ে উঠা জীবন,
ফ্লাট কিনেছে বলে ছেলে, থাকবে না আর সে বাবা ছুঁয়ে,
নাতী নাতনিরা বেছে নিয়েছে দামী বিদ্যালয়
মানুস হওয়ার মানস,
হায় রিটায়ার্ড বাবা..... একাকিত্বের বুকে নুয়ালো মাথা।
কী হয় সন্তান উচ্চশিক্ষিত হলে,ব্যাংক ব্যালেন্স করে কী হয় ছেলের নামে
কী হয় সন্তানের চোখে চাকচিক্যতা বাড়িয়ে,
কী হয় সন্তানের স্বপ্নকে ঘাম জড়িয়ে লালন পালন করে,
কী হয় সন্তানের নামে বাড়ী গাড়ী করে, কী হয়, কী হয়!
বাবার প্রতি কতটুকু দায়িত্ব মাথা পেতে নিয়েছে সে ছেলে?
হায় সন্তান, হায় রিটায়ার্ড পারসন, হায় জীবন,
কোটি টাকা আঙ্গুলের ফাঁকে চলে যাওয়া জীবনের একি পরিণতি!
হাতের মুঠোভরা টাকা, সন্তান নিজের পায়ে আছে দাঁড়িয়ে,
অথচ হাতের লাঠি সহসা পড়ে যায় ধুলায়,
ও সন্তান মৃত্যু সংবাদ শুনে আসিস তবে দাফন কাফন করিস
এটুকুন আরজি হয়তো রিটায়ার্ড পারসনের মনে।
কান পেতে শুনি রিটায়ার্ড বাবা বলছে, ও আদরের সন্তান
যত টাকা কড়ি জমিয়েছি, নমিনী করে রেখেছিলাম বাপ,
তোরাই নিয়ে যাস সব, করে নিস নিজের নামে,
এটুকু প্রার্থনা, তোদের সন্তান উচ্চ শিক্ষিত না বানিয়ে,
মানুষ বানাস, বুড়োবেলা যেন তোদেরকে ছেড়ে না যায়
তোদের আদরের সন্তান।
(০৫ আগষ্ট ২০২০)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:১৬