#যা_পাখি_ওড়ে_যা
সেই এক বিকেলের গোধূলিয়ার রক্তিম আভার পথ ধরে পাখিটি আসি বলে ঠিক ওড়ে চলে গেলো। অনিমিখ তাকিয়ে আমি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ছায়াঘেরা হিজলতলায়। কোনো এক ভোরে পাখিটি ওড়ে বসেছিল আমার ভিতরবাড়ির বেলকনির গ্রীলে এসে। আমার চোখে মুগ্ধতা আনার প্রয়াস ছিল তার চোখে পড়ার মত! পাখিটির সুরের অনুরণনে আমি কখনো সখনো না ডুবেও ডুবে যাই। আমি জানি না পাখিটি কি আমার ছিলো বা আমার জন্য সাত সমুদ্দুর তেরো নদী পেরিয়ে এসেছিল আমার দোরে অতিথি পাখি হয়ে। সে রোজ রোজ হররোজ চেষ্টা করতো আমার চোখের পাতায় বসার। তার রঙিন ডানায় যেনো স্বপ্নের পাহাড় বাঁধা। ডানা ঝাপটিয়ে ভালোবাসার আকুতি অবজ্ঞা করার ক্ষমতা আমার ছিলো কি! না ছিলো না! পাখিটিকে ভালোবেসেছি নিজের মত করে। ওকে বুঝতে দেইনি কতটা ভালোবাসতে পারলে তার একটি খসে পড়া পালক অধরে দিতাম ছুঁয়ে। ভালোবাসা বুঝতে দিতে নেই,ভালোবাসা বুঝতে দিলে কেমন যেনো পানসে হয়ে যায়।
আমি জানি না পাখিটি কি বুঝে রোজ তার একটি পালক ছেড়ে যেত বেলকনিতে। কখনো লাল, কখনো গোলাপী, কখনো নীল পালক। হাজার রঙের স্বপ্ন চুয়ে চুয়ে পড়তো সেই খসে পড়া পালক হতে। বিনিদ্র রজনিতে পালকের ছোঁয়ায় বেঘোর ঘুম নেমে আসতো চোখের পাতায়। অজানতেই মনের শাখে বাসা বেঁধেছিল পাখি। আমি বারণ করিনি,কারণ তখন বিনিময় চায়নি পাখি। আমি বিশ্বাসে খেতাম হাবুডুবু, ভালোবাসার তো বিনিময় হয় না। বিশ্বাসে দিলাম ঠাঁই পাখিরে তোকে। যা না চাইতেই পেলাম সে ভালোবাসা ছিল ঠুনকো,বুঝতেই পারিনি।
অবশেষে কোনো এক রোদ্দুর জ্বলা দুপুরে পাখি ভালোবাসার বিনিময় চেয়ে বসল, আমি অবাক চোখে পাখিটিকে আড় চোখে দেখি শুধু!! তিক্ততার তৃষ্ণা আকণ্ঠ। বিমর্ষ আমি নিথর বসে সেই বেলকনিতে! বিনিময় না পেয়ে পাখি ফিরে যেতে চাইলো.. আমি নির্দ্বিধায় তাকে যেতে দেই, স্বার্থপর ভালোবাসা আমার চাই না!! অতঃপর পাখি গোধূলীর আভায় আবছা নীলে মিশে গেলো আঁধারকে সাথী করে। আর আমার দৃষ্টি ছুঁয় পাখি চলে যাওয়ার তীব্র গতির দিকে। যা পাখি ওড়ে যা ভালো থাকিস!
(লিখার তারিখঃ ১৬-০৬-২০১৬)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৪:২৯