©কাজী ফাতেমা ছবি
এখানে ফুটপাতে হেঁটে গেলেই আমি জীবন শিখি
কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হেঁটে যাই হনহন,
দীর্ঘশ্বাস ফেলারও সময় ফুরিয়ে যায়
আমি খুঁজে বেড়াই গন্তব্য!
তবু চারদিকে চোখ ঘুরিয়ে দেখি কিছু নির্মম বাস্তবতা।
দুপুরের কড়কড়ে রোদ্দুর
অথচ বুড়ি মা আঁচল পেতে বসে আছে পথের বাঁকে
তৃষ্ণায় শুকনো ঠোঁটে তখনো হাসি লেগে আছে
বুড়ি মা অপেক্ষায় ছিলো এক পসলা বৃষ্টির,
যাতে হাওয়াটা হয় শীতল
বসে থাকার ক্লান্তি যাতে উড়ে যায় কালো মেঘের ছায়ায়।
আশ্রয়হীনের আশ্রয়ে কেবল নিজেকে রেখে পথ আগায়
যান্ত্রিক জীবনের গলিপথে হোঁচট খেয়ে কেউ যন্ত্র পুষে মনে
রোদ্দুর হোক বা হোক বৃষ্টি
দু'মুঠো অন্ন মুখে পুরতে মানুষ যন্ত্র সেজে বসে থাকে পথে ঘাটে
এখানে বিলাসিতা নেই, নেই বেশী পাওয়ার জন্য হাপিত্যেশ
মনের ভাব প্রকাশ করার ক্ষমতা থাকলেও ওদের মুখে ভাষা নেই।
রুক্ষ শুষ্ক চুলের শিশুটি যেমন পান্তা ভাতে ক্ষুধা ভুলে যায়
সেই বুড়ি মাও দুটো টাকা পেলে ভুলে যায় বসে থাকার যন্ত্রণা
চামড়া ঝুলে পড়েছে দেহের ডালে
দন্তবিহীন মুখে কেবল হাহাকারের চিহ্ন দেখি,
তারও পুত্র সন্তান আছে, মেয়েটি অকালে ঝরে গিয়েছে
অতঃপর তাকেও ভিক্ষার রোজগারে জীবন টেনে নিয়ে যেতে হয়।
ছেলেটি তার ভালো থাকুক বউয়ের সাথে
সেই বুড়ি মাও দোয়া করে অহর্নিশ।
প্রতিটি দিন পার হয়, দেখা হয়ে যায় পথের বাঁকে
বুড়ি মা হেসে বলে মা তোমার ছেলে কই আজ
অথচ তারও ছেলে আছে, তবু তাকে ভিক্ষা করতে হয়
নিয়তির নির্মম পরিহাস, কি রহস্যময় পৃথিবী
বেঁচে থাকার কত দায় এখানে, মরে যেতে কেউ চাইনি বলে
বুড়ি মা'র মতন মানুষরা বুঝে নেয় জীবন কাকে বলে
পথের শেষে আছে হয়তো মুক্তির পথ।
(২৯-০৫-২০১৮)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:২৭