=সাথে ১০০০ তম পোস্ট)
ব্লগে আমার বারো বছর হলো, এই পোস্ট নিয়ে একহাজার পোস্ট পূর্ণ হলো। ভালোই লাগছে আহা এক যুগ ধরে ব্লগে। এখানে গোটা কয়েক মানুষের প্রিয় হতে পেরে নিজেকে গর্বিত অনুভব করছি। অনেক ব্লগারই পোস্ট দেন বিভিন্ন ব্লগারের গুনগান গেয়ে, আমি থাকি না কারো পোস্টে। তখন মনে মনে ভাবি। আমিও আবার ব্লগার আমার আবার গুণ, নির্গুন মানুষ আমি। আমি জ্ঞানী ব্লগার না এটা বলতে পারি। তবু্ও নিজের শৌখিণ কিছু কর্ম এখানে প্রকাশ করতে পারি এবং কিছু প্রিয় ব্লগার আমাকে ভালোবাসেন এমনই মনে হয় আমার। আমার শত শত লাইক কমেন্টের প্রয়োজন নেই।
একবার আমার এক কলিগ ভাই বলেছিলেন ফাতেমা আপু আপনার লেখা পড়ে যদি একজনও বলে অনেক ভালো লেগেছে তাতেই আপনার অনেক পাওয়া হয়ে গেল। আমি দেখেছি এই ভার্চুয়াল জগতে আমি আমার লেখা পোস্ট করলে সেখানে মাত্র আট দশটা লাইক দুই একটা কমেন্ট। আর এই লিখাই অন্য কেউ তার ওয়ালে নিয়ে নাম ছাড়া পোস্ট দিলে সেখানে তিন চার অথবা পাচশত পর্যন্ত লাইক কমেন্ট আসে। অদ্ভুত লাগে।
আমি এডিট ছাড়া হালকা এডিট তো করতেই হয় সুন্দর একটি ছবি পোস্ট করলে সেখানে লাইক পড়ে না বেশী। আর এডিট করা রঙ চঙা ছবিতে হাজার হাজার লাইক। অবাকিত এই পৃথিবী চাকচিক্যতাকেই পছন্দ করে বেশী।
এই বারো বছর ব্লগিং জীবনে আপনারা যারা আমাকে আমার কাজে উৎসাহ যুগিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা আর এক সমুদ্দুর কৃতজ্ঞতা রইলো। সাথে রইল ভালোবাসা আর দোয়া। আল্লাহ আপনাদেরকে নেক হায়াত দান করুন।
এই পোস্ট লিখার সময় মুক্তা আপা, উমেরা আপা, করুণাধারা, মনিরাপা, শায়মাপা, রামিসা আপা, সোহানী আপা, সোহেলী আপা, শরতের ছবি, মিরোডডল আপু, সামিয়া ইতি আপুসহ কিছু নারী ব্লগারদের কথা মনে পড়েছে। শায়মা পু ছাড়া প্রায় সবাই যেন সময়ের বুকে ডুব দিয়েছেন। তাদের কল্যাণ কামনা করি। ভালো থাকুক আমার প্রিয় নারী ব্লগাররা।
আমি গল্প লিখতে পারি না। ছবি তুলি আর কবিতা লিখি। আমি ব্যস্ত নারী। অফিস সংসার বাচ্চা সব কিছু মিলিয়ে সময় বড় অল্প থাকে। যেটুকু সময় পাই এই শখের কাজগুলোতে ব্যয় করি। তাই হয়তো আমার মাঝে এত সৃজনশীলতা নেই। সবার জ্ঞান তো আর সমান না। আল্লাহ যতটুকু দিয়েছেন তাতেই আমি সন্তুষ্ট আলহামদুলিল্লাহ। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন, নিজের প্রতি খেয়াল রাখুন। বর্তমানে আমি কিছুটা অসুস্থ। পিঠ ব্যথার জন্য দশদিনের ছুটিতে আছি, বুধবারে অফিসে জয়েন করবো। ব্যথা অল্প কমেেছে। কমবে কিনা জানি না, দোয়ার দরখাস্ত রইলো সবার কাছে।
এক গুচ্ছ কামিনী ফুলের অনেকগুলো ছবি পোস্ট করে পোস্ট স্মরণীয় করে রাখি না হয়। বিরক্তবোধ করলে বলে দেবেন অকপটে।
এই কামিনী ফুল দুই হাজার বিশ সালে ফ্রেমবন্দি করেছিলাম। গতকাল একজন এক গ্রুপে এই ফুলকে এমন এডিট করছে দেখে মনই খারাপ হয়ে গেল। এত জঘন্য এডিট যা ফুল পাতাকে বদলে দিয়েছে। সেই তুমুল এডিট করা ছবিটিতে অবশ্য লাইকের সেঞ্চুরী হয়েছে। অবাক লাগে মানুষ কেমন যেন চাকচিক্যতা মোহ জগতটাকেই ভালোবাসে।
তার দেয়া কামিনি ফুলের ছবিটি
প্রকৃত জিনিসের প্রতি মানুষের মায়া কম। আল্লাহর সৃষ্টির সৌন্দর্য বদলে দিয়ে মানুষ ইহজগতে সুনাম কুঁড়ায়। এডিট করা লাগে হ্যাঁ, কিন্তু আমূল পরিবর্তন মোটেও উচিত নয়। বর্তমানে মেয়েরা যেমন আটা ময়দা সুজি মেখে মুখের মাঝে হাজার প্রলেপের পেইন্টিং করে তেমন করেই মানুষ প্রকৃতির ছবিকে সাজাতে চায়। দেখলেই রাগ উঠে। রাগ উঠলেই কী। বেশীর ভাগ মানুষই তা পছন্দ করে। আমার পছন্দের মূল্য কী আর বর্তমান মোহ জগতে।
©কাজী ফাতেমা ছবি
=আমি তোমাদেরই লোক=
তোমরা আমায় মনে রেখো, রেখে দিয়ো স্মৃতির পাতায়,
তোমরা আমায় নিয়ে দুটো কথা লিখো কবিতার খাতায়;
তোমরা পাশে থেকো, উৎসাহ দিয়ো, আমি লিখতে চাই কিছু অকবিতা,
তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিলে, এ আয়োজন বৃথা, বেকার সবই তা।
তোমাদের সঙ্গে আছি সুখ অথবা দুঃখবেলা,
তোমাদের ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবিনি, ভাসাতে চাই
তোমাদের নিয়ে ব্লগে সাম্যের ভেলা,
আমি অকবি, অকবিতার বাগানে তুলে রাখি ভুলের ফুল,
তোমরা সে ফুলের ঘ্রাণ নিলে, মনে সুখ অতুল।
আমার ব্লগিংয়ে যদি কখনো দুঃখ পেয়ে থাকো বলে দিয়ো;
অকপটে বলে দিয়ো, আমি ক্ষমাপ্রার্থী, হতে চাই তোমাদের প্রিয়
কথার বাগানে ভুলের ফুল উপড়ে ফেলে দেব যদি চাও কখনো;
চাই না তোমরা কেউ, মনের ক্ষেতে আমার জন্য দুঃখ বুনো।
কত কথাই বলা হয়ে যায়, তিতে অথবা মিঠে
তিতেগুলো ভুলে যেয়ো,
মিঠে কথার রোদ্দুরে ভরুক তোমাদের মন ভিটে;
শেষবেলা পর্যন্ত আমায় আপন করে নিয়ো।
তোমাদের গল্প, কবিতা, আড্ডার কথামালা,
রোজ রোজ সে কথার ফুল দিয়ে সাজাই মনের ডালা,
সে ডালায় তুলে রাখি তোমাদের দেয়া আদর আহ্লাদ আবেগ
তোমাদের দেয়া সম্মান মর্যাদায় চোখের কোণে জমে মেঘ।
আমি যদি হারিয়ে যাই চিরতরে
ঠিক তখনো ভালোবাসার স্পর্শে ঠাঁই যেন হয় তোমাদের মনের ঘরে,
ভুল ত্রুটিগুলো আমার যত, রাখিয়ো ক্ষমার মাঝে,
সরি বলে যাই ফের, ভুল যদি রেখে যাই আমার কথা কী কাজে।
©কাজী ফাতেমা ছবি
এই যে এক গুচ্ছ ফুল, এই যে ঘ্রাণ মাখানো দুপুর, এই যে মনোহারী ক্ষণ আমার, তুমি কী নাক টেনে ঘ্রাণ নেবে? ঘ্রাণ নেবে সোঁদা মাটির এবেলা?
গাঁয়ের একটি দুপুর, কামিনী মেলেছে পাপড়ির ডানা। পাপড়িতে বসে আছে মৌ পোকা, নিঃশ্বাস টেনো না বোকা! তুমি আনমনা হও ঠিক আমার মত, এই দুপুরে সুখ করো রোমন্থণ।
মনে এনো না বুড়োপনা, বয়স নিয়ে আসো বন্ধু কুড়িতে। কামিনী ফুলের শুভ্রতায় মন করে নাও শুদ্ধ। যতসব হম্বিতম্বি স্বভাব স্বচ্ছ পুকুর জলে দিয়ে দাও জলাঞ্জলি। চলো পা ডুবিয়ে বসি পুকুর ঘাটে, জলে ভাসাই কামিনীর পাপড়ি। এই জলের আয়নায় দেখতে পারো সুখের মুখোচ্ছবি। জলের ছিটায় মুখের ছবিটা দাও পাল্টে। মুগ্ধতায় ভরে দাও মন আমার।
দেখো তাকিয়ে গাছের পাতার ফাঁকে কামিনীর বাহার । কী মনোহারী ক্ষণ, ঘ্রাণের তোড়ে ভেসে যায় মন সুখের ভেলায়। সে ভেলায় তুমিও উঠে বসতে পারো, বলতে পারে রংবাহারী প্রেম কথা। কথার পিঠে কথা বলে এবেলা হাসতে চাই রিনিঝিনি কাঁচের চুঁড়ি। স্যান্ডেল জোড়া রেখে দাও উঠোনের কোণে, মাটি ছোঁক তোমার পা, সোঁদা মাটির ঘ্রাণ আর কামিনীর ঘ্রাণ মিলেমিশে আজ একাকার।
তুমি যদি চাও তোমাকে দেখাবো গামারী ফুলের রং, ঘাসের উপর কী সুন্দর বিছানো হলুদাভ আভা। সে আভায় মন ডুবাতে চাও? নাকি সেই গ্রীষ্মের রোদই পুষবে বুক উঠোনে? আমি কামিনীর সাথে আছি.......মনের জমিন করো না চৈত্রের খরা। সুখের নিঃশ্বাস টেনে বাঁচার আশা বড় আমার। তুমি সেঁধো না তাতে বাঁধ।
চোখ তুলো মুঠোফোন হতে, মোহ দুনিয়া ছেড়ে আসো প্রকৃতির কোলে, এখানে রাখা আছে সুখ মুগ্ধতা, বেঁচে থাকার শুদ্ধ অক্সিজেন। যে অক্সিজেন টানলে দেহ তোমার নিমেষেই হয়ে উঠবে ফুরফুরে।
এত সব গদ্য কথন তোমার বুঝি লাগছে বোর, ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারো এ আবদার, কামিনীর সাথে নাই বা রইলে আমি স্মৃতি দানীতে তুলে রাখলাম এ কামিনীর গুচ্ছ। মুগ্ধতার জল ছিটিয়ে তা বাঁচিয়ে রাখবো অনন্তকাল। যদি কখনো কামিনীর ঘ্রাণ নিতে চাও আমায় বলো, খুলে দেব হৃদয় দেরাজ। যেখানে রেখেছি সাজিয়ে স্মৃতিদানীতে কামিনীর ঘ্রাণ।
©কাজী ফাতেমা ছবি
=দেবে এক গুচ্ছ কমিনী ফুল=
কামিনী ফুল দেবে আমায়, দেবে মালা গেঁথে,
চুলে দেবে তুলে মালা দিলাম মাথা পেতে;
নাক টেনে আজ গন্ধ নেব, মুগ্ধ হবো আমি,
নাও না সয়ে বন্ধু আজকে আমার এ পাগলামি।
সাদা ফুলের থোকায় থোকায়, মৌ পোকারা উড়ে,
সুখগুলো নয় আজ রে বন্ধু আমা হতে দূরে,
সবুজ পাতায় লেপ্টে আছে কত সজীবতা,
মন কেন যে মলিন তোমার, বলো দুটো কথা।
উঠোনের রোদ গায়ে লাগাই, পাশে বসো এসে
চারিদিকে সুখের গুঞ্জন যাও না ভালোবেসে;
কথায় তোমার খই ফুটুক আজ, বলো বলো গল্প
এই তুমি কী দেবে আমায় সকাল দুপুর অল্প।
সকাল দুপুর আমারই থাক, বিকেল হবে তোমার
বলবো কথা ভালোবাসার পাবে সুখ বেশুমার;
সাদা ফুলের থোকা দেব বুক পকেটে তুলে,
যেয়ো বন্ধু আজকে না হয় দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভুলে।
ভালোবাসার প্রজাপতি বসুক এসে ফুলে,
যেয়ো বন্ধু প্রেমের হাওয়ায় তুমি দুদ্যোল দোলে,
কত কথা কত গল্প ফুল কামিনীর সাথে,
তুমিও রও পাশে আমার হাতটি রেখে হাতে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২১