বহুকাল থেকেই কিছু সুশীল লেখকগণ 'অতি বিশ্রী ভাষায়' লেখার প্রেক্টিস করে আসছেন। সময়ের পরিবর্তনে এই লেখকগণের রূপ-জৌলুশ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে ফুটে উঠেছে। ইদানীং ফেইসবোক/ব্লগেও এমন অনেক লেখককে দেখা যায়, যারা খারাপ শব্দ প্রয়োগ করার জন্য প্রথমেই ক্ষমা প্রর্থনার মাধ্যমে অনুমতি প্রাপ্ত হন, যদিও আমরা তাদেরকে অনুমতি দেই না! মজার বিষয় হচ্ছে, এই অনুমতিটা তারা নিজের থেকেই আদায় করে নেন :p। আমরা চতুর্দিকে দৃষ্টিঘুরালে দেখতে পাই, শিক্ষিতজনেরা মারাত্মক গালিকেও এমন শব্দ প্রয়োগে প্রকাশ করেন, যা আমাদের বিশ্রী ভাষার মালিকগণ বুঝতেই পাড়েন না! আবার শিক্ষিতরা কিন্তু বিশ্রী মানুষিকতার লোকদের সাথে মনোমালিন্যকর অবস্থা (ঝগড়া) সৃষ্টি করেন না। এই দিক থেকে, বিশ্রী মানুষিকতার লোকেরা এই সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হন।
আরেক প্রকার লেখক রয়েছেন, যাদের জন্য খুব দুঃখ হয়। উনারা অন্যের লেখা পড়তে চান না, নিজের লেখাটাও দু'বার পড়েন বলে মনে হয় না। তারপরও উনারা সমাজে প্রকাণ্ড লেখক হয়ে থাকার দুঃস্বপ্ন দেখে থাকেন। উনাদের লেখায় দেখা যায়, শব্দের অভাবে তারা নিজেদের মনের ইচ্ছাকে মনের মত প্রকাশ করতে পারেন না। ফল সরূপ পাঠকগণ লেখকের মনের কথা বুঝতে না পেরে উলটো স্রোতে ভাসেন। তবে কিছু লেখক আছেন, ইচ্ছে করেই পাঠকদের ভ্রমে রাখতে চান। তাদের কথা ভিন্ন।
আরেক প্রকারের লেখকের কথা না বললেই নয়। উনারা একাধারে খুবই পরিশ্রমী, মেধাবী এবং চতুর, তবে চতুরতা সীমানা পেরিয়ে। উনাদের লেখক হওয়ার প্রধান উৎস হচ্ছে, বিভিন্ন লেখকের লেখা থেকে এক-এক অংশ কর্য করে এনে নতুন লেখার জন্ম দেওয়া। এটা কয়জন পাড়ে বলেন? আসলেই উনারা সেইরকমের ক্রিয়েটিভ লেখক। কোন লেখকের কোন অংশ--কোন কবির কোন কবিতাংশের সাথে মিল খাবে সেটা ক্রিয়েটিভ লেখক ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারবে বলে আমার মনে হয় না। আমরা উনাদের পরিশ্রমের মূল্যায়ন(!) না করে উল্টো তাদেরকে "চুর" বলে থাকি । তবে যারা এই চুরিচামারি করে উঁচুতলায় উঠে গেছেন তারাই আজ সমাজে সুশীল লেখক হয়ে আছেন। আর যারা নিচুতলায় রয়েছেন, তারা সেখানে পৌঁছার সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন, তাদের এই পরিশ্রমের কারণে তারা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য বটে। যদিও বাঙালি প্রশংসার পরিবর্তে বাতাস দিতেই পটু।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৩৫