somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

্সিআর রাকিব
আমার পরিচয় !! নিজেকেই আমি পাইনি আজো খুজে ।আমি এখনো নিজেকে বুঝতে পারেনি, জানতে পারেনি । প্রতিনিয়ত জানার চেষ্টা করছি । হয়তো একদিন খুজে পাব নিজেকে, সাথে আমার অদৃশ্য 'আমি' টাকে ।তখন না হয় লিখব ।

আমাজন অভিযানঃ বিগ বাজেটে বাজে মুভি

২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :






মুভি সম্পর্কে বলার আগে মুভি দেখার প্রেক্ষাপটটা বলে নেই । আমাদের গ্রাম অনেকটা অজপাড়াগা টাইপের । অজপাড়াগা বলতে আবার মনে কইরেন না কারেন্ট,টেলিভিশন,মোবাইল এসব নাই ।। টেলিভিশন আছে ,তবে সবার বাড়িতে নাই আরকি । এ কারনে যাদের বাড়িতে টেলিভিশন থাকে আশে-পাশের মানুষজন সেখানে মুভি দেখতে জড়ো হয় । আমি বাড়িতে গেলে তাই আমার আশে-পাশেও বাচ্চা-কাচ্চা-মহিলারা জড়ো হয় মুভি দেখার জন্য । এজন্য আমি আগে ভাগেই তাদের সেখার মত মুভি নিয়ে যাই । এবার নিয়ে গেছিলাম সুপার-ডুপার মেগাস্টার দেবের “আমাজন অভিযান”
.
মুভির প্রথমেই দেখা যায় দেব দৌড়াচ্ছে তার পিছনে দৌড়াচ্ছে কয়েকটা কালো চিতা । দেব উসাইন বোল্ট স্টাইলে দৌড় দিয়ে পাহাড় থেকে পানিতে লাফ দেয় । ডাঙায় বাঘ জলে কুমির একটা কথা আছে না ,দেবের অবস্থাও সেই রকমই। জলে বেচারাকে ধাওয়া করে ইয়া বড় বড় কুমির । এক কুমির ঘাড় বাকিয়ে ডাউনোসর স্টাইলে একটা চিল্লানি দেওয়ার পরই দেখি দৃশ্যপট চ্যাঞ্জড । দেব আসলে ,কিসের কিসের দেব-দেব করছি । মুভিতে দেবের চরিত্রের নাম হল শঙ্কর । শঙ্কর আসলে আগের অংশটুকু স্বপ্নে দেখেছিলো । শঙ্কর অজপাড়াগায়ে (বিদ্যৎ,মোবাইল,টেলিভিশন নেই টাইপের অজপাড়া ) গাছের নিচে একটা পাঠশালার পন্ডিত মশায় । তার পরের কাহিনীগুলো একটু দ্রুত বলে ফেলি । এনা নামের এক ইটালিয়ান মহিলা (সরি মেয়ে ) শঙ্করের কাছে আসে ,তার বাপের আমাজন অভিজানের বিফল হওয়ার গপ্প শোনায়,শঙ্করকে আমাজন অভিজানে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়,শঙ্কর রাজি হয়ে যায় এবং এনার সাথে পর্তুগালে চলে যায় । ও, ভালো কথা ,এনা আর এনার বাপ বর্তমানে পর্তুগালে থাকে । এনার বাপ,মার্কো,যখন জানতে পারে বাঙ্গালি জ্যান্টেলম্যান শঙ্কর কে সুদূর ভারত থেকে আনা হয়েছে তাদের সফর সঙ্গী হওয়ার জন্য তখন সে তার মেয়ে এনাকে বকাঝকা করে । একটা বাঙ্গালি পুলা নিয়া আসছে এনা তাদের সফরের জন্য,ব্যাপারটা মার্কো সহজে মেনে নিতে পারে না । যাই হোক,বিদেশিদের ইমপ্রেস করার ক্ষেত্রে আমাদের দেব (এই মুভিতে যে শঙ্কর) খুবই দক্ষ,আগে কয়েকটা মুভিতে দেখেছিলাম । এখানেও সে ব্যাতিক্রম নয়, বাংলা না জানা মার্কোকে সে বাংলায় ডায়লগ মেরে ইম্প্রেস করে ফেলে । পর্তুগালে বর্ষাকাল অনেক দীর্ঘ ,এজন্য দীর্ঘদিন ঘরে বসে থেকে অবশেষে ওরা আমাজন অভিজানে বের হয় । সঙ্গে নেয় তিনটা তেজি ব্রাজালিয়ান হর্স । বা**,আমার কাছে লিখতে ফালতু লাগতাছে । একঘেয়ে ডঙ্গে কী বালছাল লিখতেছি । শুধুমাত্র অনেকটুকু লিখে ফেলেছি বলে ব্যাকস্পেস চাপতে মনচাইতাছে না । আচ্ছা বাদ দেন ,চলেন আরেকটু আগায় । ব্রেয়ার গ্রিলস স্টাইলে মাংস পুরাইয়া খাইতে খাইতে তারা আস্তে আস্তে আমাজনের গভীরে যেতে থাকে । স্থলপথ ছাইড়া নদীপথ,নদীপথ ছাইরা হাটাপথ,হাটাপথ ছাইড়া আবার নদীপথ,আবার হাটাপথ-এভাবে চলতে চলতে তারা আমাজনের গহিনে যেতে থাকে । পথিমধ্যে তাদের সাক্ষাৎ হয় জঙ্গলে বাস করা বিভিন্ন গোষ্ঠীর সাথে,মুখোমুখি হয় শত্রুদের সাথে । পথিমধ্যে অবশ্য বিশাল আকৃতির এক সাপ মার্কোরে ‘ডিচ্চিকাঊ’ করে দেয় । দূর ! স্পয়লার দিয়ে ফেলতেছি । থাক,মুভির কাহিনী সম্পর্কে আর আগাবো না,এমনিতেই এট্টু স্পয়লার দিয়ে ফেলেছি ( ইয়ে,আপনারা যদি ‘ডিচ্চিকাউ’ মানে কী বুঝাইছি তা বুঝে থাকেন আরকি ) রিভিওতে ( যদিও আমারটা রিভিও হইছে বলে দাবি করছি না,তারপরও চেষ্টা তো করেছি ,নাকি ) শেষের দিকে একটু টুইস্ট রাখতে হয়,যাতে মানুষ জন মুভি দেখার প্রতি আগ্রহী হয় আরকি । মুভিতে শঙ্কর ম্যাপের সাহায্যে ‘এলদারদো’ নামে এক জায়গা খুজে পেতে চায়,যে জায়গার সবকিছুর সোনার তৈরি । পাঠক,আপনার কী খুব জানতে ইচ্ছা হচ্ছে জায়গাটা কী শঙ্কররা খুজে পায় কি না ? ইচ্ছা হলে দেখে ফেলুন মুভিটা ( টুইস্ট দিয়েছি )
.
সতর্কীকরনঃএই অংশটুকু ব্যক্তিগত মন্তব্য,আপনি চাইলে নাও পড়তে পারেন
 মুভির গ্রাফিক্স খুবই বাজে হয়েছে । একটা দৃশ্যের কথা বলছি তাহলে বুজতে পারবেন-
এনা নদীর তীরে বিশাল এক সাপের মুখোমুখি হয় । সাপটা একটা গাছের ডালে ঝুলছে । সাপ গাছের ডালে ঝুলতেই পারে এখানে অস্বাভাকিতার কিছু নেই । অস্বাভাবিক তখনই মনে হবে যখন দেখা যাবে গাছের সমান বিশাল একটা সাপ সেই গাছেরই একটা ডালে ঝুলছে । একটূ কল্পনা করুন,থাক কল্পনা করতে হবে না আপনি বরং মুভিতে দেখে নিয়েন ।
 পুরোনো একটা ব্রীজ,ব্রীজ না বলে সাকো বললেই বেশি মানাসই হয় । যে সাকোটা জঙ্গলে থাকা মানুষরা খাল পারাপারের জন্য তৈরি করেছে জংলী লতা ও কাঠের সাহায্যে । সে লতা দিয়ে বানানো সাকোতে দেখলাম নাট-বল্টু (কার্টুনের নাট-বল্টু নাহ ) ও ব্যবহার করা হয়েছে। লতা দিয়ে বানানো সাকোর মধ্যে নাট-বল্টুর কী কাজ
 পুরোনো সাকো দিয়ে যাওয়ার সময় শঙ্কর আর মার্কো মাঝপথে থাকার সময় সাকোটা ভেঙ্গে যায় । শঙ্কর আর মার্কো ভাঙ্গা সাকোতে ঝুলে থাকে । শঙ্কর উপরে ,শঙ্করের পায়ের থেকে ১ ফুটের মত নিচে মার্কো সাকোর একটা কাঠ ধরে ঝুলে আছে । মার্কো যেই কাঠ ধরে ঝুলে থাকে সেটা হঠাৎ করে ভেঙ্গে যায়,মার্কো পরে যেতে থাকে আর তখনি শঙ্কর এক হাতে মার্কোকে ধরে ফেলে । হিরোদের শরীরে অনেক শক্তি থাকে,এক হাতে কাউকে ধরে ঝুলিয়ে রাখা তাদের জন্য ব্যাপার নাহ । কিন্তু সমস্যা একটা রয়ে গেছে এই জায়গায়, তোমার পায়েরও প্রায় ১ ফুট নিচে ঝুলে থাকা এক ব্যক্তি নিচে পরে যাওয়ার সময় তার হাত খপ করে ধরে ফেললা কেমনে ম্যান, কেমনে !!!!!!!!
.
আর অভিনয় থাক বেশি বলবো নাহ । পরে আবার আপনারা বলবেন,আমি নেগেটিভ ,আমার দৃষ্টি ভঙ্গি নেগেটিভ, আমার চৌদ্দগোষ্ঠী নেগেটিভ ! তারপরও অল্প ইট্টু বলি, না হলে আমার কী-বোর্ড নিশপিশ করবো আবার টাইপ করার জন্য । মার্কো ,হা হা ,তার মত হাসি দিলে আমারে মানুষ মনে করবো পাবনা থেকে পালাইয়া আসছি কিছুক্ষন আগে । আর দেব মুভিতে কতক্ষন পর পরই গরিলার মত চিল্লানি দেয় । দেবের চিল্লানো দেখে আমার পাশে বসে থাকা আমার চাচী বলল,” এই ব্যাড্যা এমুনবা গর্জন দে কা
.

- আচ্ছা মুভিতে পজিটিভ কিছুই পাননি ?
- পেয়েছি তো । আমার ছোট বেলার হিরো বিভূতিভূষণের ‘চাদের পাহাড়’ এর শঙ্করকে রূপালি পর্দায় প্রতিষ্ঠিত রূপে পেয়েছি । এই মুভির এন্ডি ং দেখে মনে হয়েছে শঙ্করকে নিয়ে আরো কাজ হবে । ভালো লাগার কারন , বাংলা মুভিতে কোনো চরিত্র নিয়ে একাধিক কাজ করা হয় না , সে ক্ষেত্রে শঙ্কর ব্যতিক্রম । আশা করবো, শঙ্করকে নিয়ে পরবর্তীতে ভালো কাজ হবে
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৩
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×