somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজবাড়ীবিহীন রাজবাড়ীতে

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১।
ট্রলারটা বড়। মাথার উপরে হালকা আকাশী রঙ এর বিশাল এক পাতলা পলিথিন, তার নিচে শ খানেক মানুষ জুবুথুবু হয়ে বসেছে। বাহিরে মেঘলা আকাশ, গুড়ি বৃষ্টির চেয়ে একটু ঘন একঘেয়ে বৃষ্টি পড়েই চলছে। বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ তিতলি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়েছে, আঘাত হানতে পারে যে কোন সময়ে। উত্তাল পদ্মার তীরে এই ট্রলারে আমিও একজন যাত্রী। নদীর অপর পাড়ে পাবনার সুজানগর, যাবো সেইখানে।

জায়গার নাম ধাওয়াপাড়া ফেরীঘাট। প্রতি তিন ঘন্টায় একবার ফেরী পারাপার হয়। আমি পৌঁছাবার দশ মিনিট আগেই ফেরী ছেড়ে গিয়েছে। লঞ্চ ছেড়ে গেছে আগেই। ফেরী আবার ছাড়বে তিনটায়। মাঝে লঞ্চ ছাড়বে কিনা তার কোন গ্যারান্টি নেই। অনেক যাত্রী জড় হয়েছে দেখে একটা ট্রলার যাত্রী তুলতে শুরু করল। জনপ্রতি ৫০ টাকা ভাড়া। আমার সাথে ফেরীতে অপেক্ষারত প্রায় সব যাত্রীই নেমে গিয়ে ট্রলারে উঠল। আমি বসে রইলাম। ট্রলারে চেপে এই উত্তাল পদ্মা পাড়ি দেব না।

তবে বেশী সময় বসেও থাকতে পারলাম না। অল্প কজন ছাড়া বাকী সবাইই ট্রলারে গিয়ে উঠেছে। বাকী যা যাত্রী রয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য ফেরী ছাড়া আর কোন উপায় নেই। লঞ্চ ফিরলেও এত অল্প যাত্রী নিয়ে রওয়ানা করবে না। সুতরাং নিজেকে বারবার ‘কোন ভয় নেই, কিচ্ছু হবে না’ বলে, বুঝিয়ে সুঝিয়ে ট্রলারে উঠে পলিথিনের নিচে আশ্রয় নিলাম।

দশ মিনিটের মধ্যেই দুশ্চিন্তা বাড়তে লাগল। ট্রলারে লোক উঠিয়েই যাচ্ছে। যাত্রীরা বারবার নিষেধ করছে এত যাত্রী না নেয়ার জন্য, কেউ শুনছে না। এর মধ্যে কোত্থেকে যেন আরও যাত্রী এসে উপস্থিত। তারাও উঠতে লাগল। জায়গায় কুলোচ্ছে না বলে সবাই সবাইকে চেপে বসার জন্য চিৎকার চেঁচামেচি চলতে লাগল। যাত্রীরা ট্রলার ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেই যাচ্ছে। একটা কোলের বাচ্চা কেঁদেই যাচ্ছে। আরেকটা দুই দিন বছরের বাচ্চা ট্রলারে নেমে জুতা হারিয়ে ফেলে কাঁদছে, তার মা জুতা খুঁজতে খুঁজতে বাচ্চাকে থামতে বলছে। এর মাঝে কে যেন সিগারেট ধরিয়েছে, অন্য যাত্রীরা তার প্রতিবাদ করছে। পলিথিনের মাঝে জমা হওয়া বৃষ্টির পানি ফেলতে গিয়ে নৌকার প্রান্তে বসা যাত্রীদেরকে ভিজিয়ে দিয়েছে বলে তারা চেঁচাচ্ছে। এত কিছুর মধ্যে আমি আমার কাঁধব্যাগটা জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ এস্তেগফার, কিছুক্ষণ দোয়ায়ে ইউনূস পড়ছি – আস্তাগফিরুল্লাহ হা রাব্বি মিন কুল্লি জাম্বিউ ওয়াতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ। লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন।

আমার ভয়ের কারণ আছে। সারাজীবন শহরে থাকায় সাঁতার শেখা হয়নি। অবশ্য তাই বলে পানিতে নামতে ভয়ও পাইনি কখনো। একমাত্র বান্দরবানের বগা লেগের পানিতে নামার সাহস হয় নি। পদ্মা, যমুনা, সোমেশ্বরীতে নেমে গোসল করেছি। বার কয়েক উদ্যোগ নেয়ার পর গত ছয় মাস আগে সাঁতার শিখেছি, তাও পুরোটা নয়, অর্ধেক। সুইমিংপুলের বুক সমান পানিতে কিছুদূর সাঁতরে যেতে পারলেও পানিতে ভাসতে শিখিনি। তা সত্ত্বেও গ্রামের বাড়িতে গিয়ে গলা সমান পানির পুকুরে নেমেছিলাম। সাঁতার-গোসলের শেষ পর্যায়ে সবার সামনেই পুকুরের মধ্যের এক গর্তে পড়ে হাবুডুবু খেয়ে বেঁচে ফিরেছি। এই ঘটনা মাত্র মাস দুয়েক আগে। সুতরাং মনের ভেতরে দগদগে ভয়। তার উপর এই ভ্রমণে আমি একদম একা। আমার অবস্থান এবং গন্তব্য সম্পর্কে জানে কেবল একজন। অর্থ্যাৎ এই ট্রলার ডুবলে আমার লাশটাও বাড়িতে পৌঁছাবে না।

তাই যখন দুইজন যাত্রী বললেন এত ভীড়ের ট্রলারে তারা যাবেন না, তখন আমিও পলিথিনের নিচ থেকে বের হয়ে আসলাম। শ দেড়েক মানুষ ভর্তি ট্রলারের প্রান্ত দিয়ে হেঁটে এসে পন্টুনে উঠে পড়লাম। এই ট্রলারে আমি সত্যিই যাবো না।

বিজ্ঞাপন: আমার ভ্রমণ বিষয়ক সকল পোস্ট

২।
আমার এইবারের একাকী ভ্রমণ শুরু হয়েছে গতকাল বিকেলে ফরিদপুর শহর থেকে৷ রাত কাটিয়েছি ফরিদপুরেই। সকালে ফরিদপুরে দুই একটি জায়গা ঘুরে এক্সক্সক্সক্স মোড় থেকে রাজবাড়ীর কোন বাস না পেয়ে গোয়ালন্দগামী একটি বাসে চড়ে বসেছি, আর বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল।

একা ভ্রমণ করা কঠিন কাজ। প্রায় ছয় বছর আগে প্রথমবার একাকী ভ্রমণ করেছিলাম। সেটা মাত্র একদিনের ট্যুর, সকালবেলা বাসা তগেকে বের হয়ে মানিকগঞ্জ গিয়ে দর্শনীয় দুই একটি জায়গা ঘুরে আবার ফেরত৷ আগেই ভালোমত খোঁজখবর নিয়ে বের হয়েছিলাম, ফলে সমস্যা হয়নি। এবার হাতে ইন্টারনেট কানেকশনসহ স্মার্ট ফোন। গুগল এবং গুগল ম্যাপ – এদের সহায়তায়ই পথ চলতে হবে।

সাধারণ পর্যটকদের জন্য রাজবাড়ীতে কিছু নেই। নেই মানে কিছুই নেই। না প্রাকৃতিক না প্রত্নতাত্ত্বিক। ফলে এই জেলার আশেপাশে বেশ অনেকবার আসা যাওয়া হলেও রাজবাড়িতে কখনও যাওয়া হয়নি। ফলে, সমগ্র বাংলাদেশের অল্প কিছু জেলায় যাওয়ার সুযোগ হয়নি, তার মধ্যে রাজবাড়ী অন্যতম, আর এই একটি কারণেই রাজবাড়ী জেলার অভিমুখে যাত্রা। আশার কথা হল, দেখার কিছু না থাকলেও আমার সমস্যা হয় না – ঘরবাড়ি, মানুষ, গাছপালা দেখতেও আমার ভালো লাগে।

গোয়ালন্দ মোড়ে নেমে গিয়ে রাজবাড়ীর বাসে উঠলাম। ঝিরঝির বৃষ্টি পড়ছে। এই বৃষ্টি সারাদিন চললে বিপদ হবে৷ গুগল ঘেঁটে অল্প যে দু একটি জায়গায় যাবার পরিকল্পনা করেছি সেটাও বাদ দিতে হবে। সমুদ্রে নিম্নচাপ সৃষ্টির কারণেই এই বৃষ্টি, যদি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসে তাহলে বাকী ভ্রমণের ইস্তফা দিয়ে বাড়ি ফিরবো বলে মনস্থির করে রেখেছি।

ম্যাপ দেখে বড়পুল নামক চার রাস্তার মোড়ে নেমে গেলাম। বৃষ্টি পড়ছেই। একটা চায়ের দোকানের ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে কি করা যায় ভেবে নিলাম। ম্যাপ ঘেঁটে দুটো মাজারের নাম পেয়েছি। শাহ পালোয়ানের মাজার এবং জামাই পাগলের মাজার। এর মধ্যে জামাই পাগলের মাজার পেছনে ফেলে এসেছি। মধ্যবয়স্ক চা-ওয়ালার সাথে কথা বলে জানা গেল অন্য মাজারটা মূল শহরের ভেতরেই। ম্যাপে, ড্রাই আইস ফ্যাক্টরি নামে একটা জায়গা দেখেছিলাম। নাম দেখেই ঘুরে দেখার আগ্রহ জেগেছে৷ চা-ওয়ালা বললেন, ফ্যাক্টরিটা অনেক আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। প্রোডাকশন চলছে কিনা জানতে চাইলাম, তিনি বলতে পারলেন না।

বৃষ্টি বেড়েছে। শহরের দিকে যাওয়ার রাস্তায় একটা ফুলের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি কমার অপেক্ষা করতে লাগলাম। যুবক বয়সী একটি ছেলে দোকানের শাটার খুলতে এল।
ড্রাই আইস ফ্যাক্টরিটা কি এখনও চালু আছে?
জ্বী আছে।
প্রোডাকশন চলে?
চলে।
গেলে ঢুকতে দিবে?
দিবে না কেন? দিবে।

অটো রিকশায় চেপে শহরের মধ্যিখানে রেলস্টেশনে চলে এলাম। এর মাঝে শোয়াইবের সাথে কথা হল। শোয়াইবের খালার বাসা রাজবাড়ীতে। সে বেশ কয়েকবার এই শহরে এসেছে, তবে এখানে দেখার কি আছে তৎক্ষনাৎ বলতে পারল না। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই বেশ কিছু তথ্য দিতে পারলো। ঠিক করে ফেললাম, এই অল্প কিছু জায়গা দেখেই দুপুরের পর পাবনার দিকে রওয়ানা হবো৷ রাতটা সেখানেই কাটিয়ে সারাদিন পাবনা ঘুরে রাতের গাড়িতে ঢাকা ফিরবো।

রেলস্টেশনটাই রাজবাড়ীর কেন্দ্রস্থল। আশে পাশে বাজার, মার্কেট, দোকানপাট। মানুষের ভীড়। রিকশা আর অটো রিকশা। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট কাদায় মাখামাখি। শোয়াইবের পাঠানো তালিকায় রাজবাড়ী রেলস্টেশনও একটি দর্শনীয় স্থান। সুতরাং, কখনও বৃষ্টিতে ভিজে, কখনও দোকানের ছাউনির নিচে দাঁড়ানো মানুষের ভীড় ঠেলে বৃষ্টি বাঁচিয়ে আমি রাজবাড়ী রেলস্টেশনে ঢুকে পড়লাম।

অন্যান্য জেলাশহরের রেলস্টেশনের সাথে এর উল্লেখযোগ্য পার্থক্য নেই। পার্থক্য করা যায় ইতিহাসের ভিত্তিতে। রাজবাড়ী শহরের কেন্দ্রিয় অংশ গড়ে উঠেছে মূলত এই রেলস্টেশনকে কেন্দ্র করে। স্টেশন রোড, কলেজ রোড, মারোয়ারী পট্টি, বড়বাজার, খলিফাপট্টি ইত্যাদি রেলস্টেশনের আশে পাশেই অবস্থিত৷ ব্রিটিশ আমলে রাজবাড়ী ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত ফরিদপুর জেলার অংশ ছিল। সে সময় এই বাংলায় বিভাগ ছিল তিনটি – ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী। ১৯৬০ সালে ঢাকা বিভাগ এবং রাজশাহী বিভাগের কিছু অংশ নিয়ে খুলনা বিভাগ তৈরী হয়। ১৯২৩ সালে এটি পৌরসভার মর্যাদা লাভ করে৷ হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময়ে ১৯৮৩ সালে রাজবাড়ীকে আলাদা জেলা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। রাজবাড়ী রেলস্টেশন সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই চালু ছিল, ফলে রাজবাড়ীর একটি আলাদা গুরুত্ব সবসময়েই ছিল।



রেলস্টেশন থেকে বের হয়ে ড্রাই আইস ফ্যক্টরি দেখার জন্য একটা ব্যাটারী চালিত অটোতে চড়ে বসলাম৷ প্রায় বিশ মিনিট অপেক্ষা করতে হল যাত্রী পূর্ণ হবার জন্য। রেললাইনের পাশের রাস্তা ধরে অটো চলল, বৃষ্টি চলছেই। অটো ড্রাইভারকে বলে রেখেছিলাম ড্রাই আইস ফ্যাক্টরি নামবো, কিন্তু সে নামিয়ে দিল ফ্যাক্টরির মোড় পার হয়ে আসার পরে। বাধ্য হয়ে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে ড্রাই আইস কারখানার মোড়ে গেলাম। মোড় বলতে একটি আবাসিক এলাকার রাস্তা যুক্ত হয়েছে। সরু রাস্তা, তার দুপাশের বাড়িগুলো দেখে রেলওয়ের কোয়ার্টারগুলোর কথা মনে পড়ে যাবে। ছাতা মাথায় এক ভদ্রলোককে থামালাম।
ড্রাই আইস ফ্যাক্টরিটা কোথায়?
এটাই ড্রাই আইস ফ্যাক্টরি।
ফ্যাক্টরিটা কোথায়?
আপনি যাবেন কোথায়?
ফ্যাক্টরিতেই।
ফ্যাক্টরি কি আর আছে নাকি? সেই কবেই বন্ধ হয়ে গেছে। ত্রিশ বছরের বেশী হবে হয়তো!
কোথায় ছিল ফ্যাক্টোরিটা?
ওই যে ওইখানে।

ভদ্রলোক হাত উঁচিয়ে যা দেখালেন সেখানে ধ্বংসস্তুপও চোখে পড়লো না। খুব হতাশ লাগছিল। ফুলের দোকানের সেই ছেলেটির উপর রাগ হচ্ছিল খুব, তারচেয়েও বেশী নিজের উপর৷ আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করে নিলেই তো এই অবস্থায় পড়তে হতো না।

৩।
জেনে আশ্চার্যান্বিত হবেন, রাজবাড়ী জেলায় কোন রাজবাড়ী নেই। কেন নেই? অল্প কিছু পড়াশোনা থেকে জানা গেল, রাজবাড়ীতে কখনও রাজবাড়ী ছিলই না। কাগজে কলমে রাজবাড়ীর নাম ছিল গোয়ালন্দ, লোকমুখে প্রচলিত ছিল রাজবাড়ী। রাজবাড়ী জেলার নামকরণ প্রসঙ্গে বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে দুটি অনুচ্ছেদ তুলে দেয়া যায়।

রাজবাড়ী যে কোন রাজার বাড়ীর নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। রাজার নামে রাজবাড়ী। রাজবাড়ীর সেই রাজা নেই। কিন্তু রাজবাড়ী জেলা রাজার সেই ঐতিহ্য ধারণ করে আছে আজো। পদ্মা, হড়াই, গড়াই, চন্দনা, কুমার আর চত্রা পলিবাহিত এক কালের ‘বাংলার প্রবেশদ্বার’ বলে পরিচিত গোয়ালন্দ মহকুমা আজকের রাজবাড়ী জেলা । ১৯৮৪ সালের ১ লা মার্চ গোয়ালন্দ মহকুমা রাজবাড়ী জেলায় রুপান্তরিত হয় । তবে কখন থেকে ও কোন রাজার নামানুসারে রাজবাড়ী নামটি এসেছে তার সুনির্দিষ্ট ঐতিহাসিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। বাংলার রেল ভ্রমণ পুস্তকের (এল.এন. মিশ্র প্রকাশিত ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে ক্যালকাটা ১৯৩৫) একশ নয় পৃষ্ঠায় রাজবাড়ী সম্বন্ধে যে তথ্য পাওয়া যায় তাতে দেখা যায় যে, ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে নবাব শায়েস্তা খান ঢাকায় সুবাদার নিযুক্ত হয়ে আসেন। এ সময় এ অঞ্চলে পর্তুগীজ জলদস্যুদের দমনের জন্যে তিনি সংগ্রাম শাহকে নাওয়ারা প্রধান করে পাঠান। তিনি বানিবহতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন এবং লালগোলা নামক স্থানে দুর্গ নির্মাণ করেন। এ লালগোলা দুর্গই রাজবাড়ী শহরের কয়েক কিলোমিটার উত্তরে বর্তমানে লালগোলা গ্রাম নামে পরিচিত। সংগ্রাম শাহ ও তাঁর পরিবার পরবর্তীকালে বানিবহের নাওয়ারা চৌধুরী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।

এল.এন. মিশ্র উক্ত পুস্তকে উল্লেখ করেন যে, রাজা সংগ্রাম শাহের রাজদরবার বা রাজকাচারী ও প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী অফিস বর্তমান রাজবাড়ী এলাকাকে কাগজে কলমে রাজবাড়ী লিখতেন (লোকমুখে প্রচলিত)। ঐ পুস্তকের শেষের পাতায় রেলওয়ে স্টেশন হিসেবে রাজবাড়ী নামটি লিখিত পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য যে, রাজবাড়ী রেল স্টেশনটি ১৮৯০ সালে স্থাপিত হয়। ঐতিহাসিক আনন্দনাথ রায় ফরিদপুরের ইতিহাস পুস্তকে বানিবহের বর্ণনায় লিখেছেন – নাওয়ারা চৌধুরীগণ পাঁচথুপি থেকে প্রায় ৩০০ বছর পূর্বে বানিবহে এসে বসবাস শুরু করেন। বানিবহ তখন ছিল জনাকীর্ণ স্থান। বিদ্যাবাগিশ পাড়া, আচার্য পাড়া, ভট্টাচার্য পাড়া, শেনহাটিপাড়া, বসুপাড়া, বেনেপাড়া, নুনেপাড়া নিয়ে ছিল বানিবহ এলাকা। নাওয়ারা চৌধুরীগণের বাড়ি স্বদেশীগণের নিকট রাজবাড়ী নামে অভিহিত ছিল। মতান্তরে রাজা সূর্য কুমারেরনামানুসারে রাজবাড়ীর নামকরণ হয়। রাজা সূর্য কুমারের পিতামহ প্রভুরাম নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাররাজকর্মচারী থাকাকালীন কোন কারণে ইংরেজদের বিরাগভাজন হলে পলাশীর যুদ্ধের পর লক্ষীকোলে এসে আত্মগোপন করেন। পরে তাঁর পুত্র দ্বিগেন্দ্র প্রসাদ এ অঞ্চলে জমিদারী গড়ে তোলেন। তাঁরই পুত্র রাজা সুর্য কুমার ১৮৮৫ সালে জনহিতকর কাজের জন্য রাজা উপাধি প্রাপ্ত হন। রাজবাড়ী রেল স্টেশন এর নামকরণ করা হয় ১৮৯০ সালে। বিভিন্ন তথ্য হতে জানা যায় যে, রাজবাড়ী রেল স্টেশন এর নামকরণ রাজা সূর্য কুমারের নামানুসারে করার দাবি তোলা হলে বানিবহের জমিদারগণ প্রবল আপত্তি তোলেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে যে স্থানটিতে রাজবাড়ী রেল স্টেশন অবস্থিত উক্ত জমির মালিকানা ছিল বানিবহের জমিদারগণের। তাঁদের প্রতিবাদের কারণেই স্টেশনের নাম রাজবাড়ীই থেকে যায়। এ সকল বিশ্লেষণ থেকে ধারণা করা হয় যে, রাজবাড়ী নামটি বহু পূর্ব থেকেই প্রচলিত ছিল। এলাকার নাওয়ারা প্রধান, জমিদার, প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিগণ রাজা বলে অভিহিত হতেন। তবে রাজা সূর্য কুমার ও তাঁর পূর্ব পুরুষগণের লক্ষীকোলের বাড়ীটি লোকমুখে রাজার বাড়ি বলে সমধিক পরিচিত ছিল। এভাবেই আজকের রাজবাড়ী।

৪।
শোয়াইবের পাঠানো তথ্য থেকে জানা গেল, রাজবাড়ীতে এসে ভাদু সাহা-শংকর সাহার মিষ্টি না খেয়ে ফেরত যাওয়া খুবই বোকামী হবে। ড্রাই আইস ফ্যাক্টরী দেখতে গিয়ে বোকা বনে যাওয়ার কারণে মনটা খারাপ হয়ে ছিল। সুতরাং মিষ্টি খেয়ে মন ভালো করা ছাড়া আর উপায় পাওয়া গেল না।

মিষ্টির দোকানের লোকেশন জানা ছিল না। এক অটোযাত্রীকে জিজ্ঞেস করে জানা গেল বাজারেই মিষ্টির দোকান। বাজার কই প্রশ্নের জবাবে সে হাত দিয়ে যেদিকে দেখিয়ে দিল সেদিকে যেতে যেতে রেলস্টেশনের রাস্তায় চলে এলাম। এক রিকশা চালককে জিজ্ঞেস করলে সে পনেরো টাকায় নিয়ে যেতে রাজী হলো। দ্বিতীয়বারের মত বোকা হলাম, কারণ এই বাজারের পাশ দিয়ে হেঁটেই আমি রিকশা পর্যন্ত গিয়েছি।

জানা গেল, ভাদু সাহা আর শংকর সাহা দুই ভাই। তাদের দুইজনের মিষ্টিই প্রসিদ্ধ। কেউ কারও চেয়ে কম ভালো মিষ্টি বানায় না। তবে, শংকর সাহার দোকান বাজারের সম্মুখভাগে হওয়ায় লোকে তাকে বেশি চিনে। আগে তার দোকানও বাজারের ভেতরে ছিল। আমি ভাদু সাহার দোকানে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করলাম।



বাজারের একদম ভেতরে ভাদু সাহার মিষ্টান্ন ভান্ডার। সবজির বাজার, মাছ বাজার, মুদী দোকানসহ বিভিন্ন ধরণের পাইকারী বাজার পার হয়ে তার দোকান। বৃষ্টির কারনে দোকানের সামনের রাস্তা পানিতে ডুবে আছে। কিছুটা ঘুরে গিয়ে তার দোকানে উপস্থিত হলাম। ছোট একটি হোটেল। সাত আটটি টেবিলে জনা ত্রিশেক মানুষ বসার ব্যবস্থা। দিনের বেলায়ও আলো আসার ভালো রাস্তা নেই বলে বাতি জ্বলছে। পাশের আরেকটি শেডে পরোটা ভাজা হচ্ছে। দোকানের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন নয়। আমাদের মত ঢাকাবাসীরা ভাদু সাহার মিষ্টির সুনামের সাথে পরিচিত না হলে এই দোকানে বসার আগ্রহ পাবেন না।

জিলাপীসহ গোটা পনেরো পদের মিষ্টি আছে। আমি বেছে বেছে তিন পদের অর্ডার করলাম। রসমালাই, চমচম এবং ক্ষীরমোহন। সাথে পরোটা৷ পরিবেশনের সময় লোকটা ক্ষীরমোহন আগে খাওয়ার জন্য বলে গেল। আমি প্রস্তুতি নিয়ে বসলাম। এক পদের স্বাদ যেন অন্য পদের স্বাদ গ্রহণে বিঘ্ন ঘটাতে না পারে সেজন্য পানি এবং পরোটা। ক্ষীরমোহন দিয়েই শুরু করলাম। বেশ সুস্বাদু। মিষ্টির পরিমান বেশী হলেও খেতে মন্দ লাগল না। ক্ষীরটুকু বেশি আকর্ষণীয়। লোভ সামলে মুখের স্বাদকে নিউট্রালে এনে রসমালাই শুরু করলাম। অতিরিক্ত মিষ্টি। রসটা ঘন হয় নি। রসে ডুবানো গোল্লাগুলোও তৃপ্তি দিতে পারল না। বাদ দিয়ে আবারও স্বাদ নিউট্রালে নিয়ে একটু অপেক্ষা করে চমচমে মুখ দিলাম। অভিজ্ঞতা রসমালাই থেকে সামান্য বেহতর, কিন্তু সুখকর না। বাধ্য হয়ে ক্ষীরমালাইয়ে ফিরতে হলো। পরে আরও দুইবার চমচম আর রসমালাই খাওয়ার চেষ্টা করলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত টেনে নেয়া সম্ভব হল না। অতিরিক্ত মিষ্টির জন্যই কি এদের মিষ্টি এত বিখ্যাত?

৪।
ধাওয়াপাড়া ফেরীঘাট যাবে কোন গাড়ী?
কই যাবেন?
সুজানগর।
আমরাও সুজানগর যাবো। এগুলাই যাবে।
তাহলে উঠতেছেন না কেন?
ভাড়া চায় ত্রিশ টাকা৷ আমরা তিনজন। পঁচিশ টাকা বলেছি, রাজী হচ্ছে না।

এই আলাপ মুর্গীর ফার্ম রাস্তার মোড়ে। এখানে বাস স্ট্যান্ড, মাহিন্দ্র, অটোরিকশার স্ট্যান্ড আছে। ধাওয়াপাড়া ফেরীঘাটে যাতায়াত করে। জনপ্রতি ভাড়া ত্রিশ টাকা। যাদের সাথে আলাপ হল তারা দিনমজুর, সম্ভবত রাজমিস্ত্রীর কাজ করে৷ পাঁচটাকা কমানোর জন্য তারা এক মাহিন্দ্র অটোচালকের সাথে আরও কয়েকবার দরকষাকষি করল, ব্যর্থ হয়ে আমার সাথেই উঠে পড়ল। ট্রলার থেকে নেমে আমি যখন আবারও ফেরীতে এসে বসেছি তখনও তারা অপেক্ষা করছিল। লঞ্চ আসবে কিংবা ফেরী ছাড়বে, তাতে চেপেই অল্প খরচে ওই পাড়ে পৌঁছাবে তারা।

বিজ্ঞাপন: পঞ্চগড় ভ্রমণের সাথে কল্পনার মিশেলে ই-বুক ‘পঞ্চগড় ভ্রমণ এবং একটি খুনের রহস্যভেদ’

রাজবাড়ী ঘুরয়ে গিয়ে প্রান্তিক মানুষের দারিদ্র‍্যের দুটি ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। অন্য ঘটনাটি গোদার বাজার ঘাটে।

গোদার বাজার হল রাজবাড়ী জেলার সীমানায় পদ্মা নদীর ঘাট। ঘাট বলতে স্থায়ী কিছু নেই। রাজবাড়ীর বাসিন্দারা এখানে বেড়াতে আসেন, নদীর পাড়ে কিছু সময় কাটান। সম্প্রতি কিছু বেঞ্চ এবং ছাউনি তৈরী করা হয়েছে৷ রেলস্টেশনের ওখান থেকেই অটোরিকশায় জনপ্রতি পাঁচ টাকা ভাড়ায় গোদার বাজারে পৌঁছানো যায়। বৃষ্টির মধ্যেই অটোতে উঠে আমিও পৌঁছলাম।

নিম্নচাপের কারণে নদী উত্তাল৷ বৃষ্টি পড়েই চলছে, শিগগির থামার কোন লক্ষণ নেই। অটো থেকে নেমে একটা চায়ের দোকানের ছাউনিতে আশ্রয় নিলাম। সময় কাটানোর জন্য একটি চা খেলাম, কিন্তু বৃষ্টির খুব একটা উন্নতি হল না৷ অগত্যা, বৃষ্টির মধ্যেই হেঁটে গিয়ে নদীর পাড়ের একটি নির্জন ছাউনিতে ঢুকে পড়লাম।



বৃষ্টির কারণে মানুষ বেশী নেই। একটা ভাঙ্গা ছাউনির নিচে বিচ্ছিন্ন কিছু ছেলে-যুবক। অন্য একটি ছাউনির নিচে সাত আটটি ছেলের সাথে দু তিনটি মেয়ে। নদীর অন্য কূল দেখা যায় না। বৃষ্টির কারণে বেশিদূর দেখাও যাচ্ছে না। তীরে অল্প দুয়েকটা ট্রলার নোঙর করেছে। আরও একটি এসে তাদের সাথে যুক্ত হলো। একাকী, ভেজা শরীরে পদ্মার এই সৌন্দর্য বেশিক্ষণ উপভোগ করা গেল না। উঠে পড়লাম।

ফেরার সময় অটো পেতে একটু বসে থাকতে হল। যাত্রী নেই। এক বুড়ি মহিলাসহ দুইটা ছেলে আসার পর গাড়ি ছাড়ল। বাজার পর্যন্ত অটো ভাড়া জনপ্রতি পাঁচ টাকা। অটোচালক প্রস্তাব দিল, প্রয়োজনে সে রেলস্টেশন মোড় পর্যন্ত যাবে, তবে সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে জনপ্রতি দশ টাকা। বাজার পর্যন্ত এসে গাড়ি আর নড়ে না। কারণ সেই বৃদ্ধা মহিলা। স্টেশন পর্যন্ত তিনিও যেতে চান৷ কিন্তু ভাড়া যে পাঁচ টাকা বেড়ে যাচ্ছে! মিনিট কয়েক এই স্থবিরতায়ই কাটল। শেষে, বুড়ির সাথে থাকা ছেলেদের একজন তাড়া দিক, পাঁচটাকা বেশী লাগলে দিবা না?

৫।
ফিরতি পথ ধরলেই যে আকাশের অবস্থার উন্নতি হবে তা আগেই ধারণা করেছিলাম। ঘটলও তাই। ঘূর্ণিঝড় তিতলি সরে গিয়ে ভারতে আঘাত হানতে যাচ্ছে। ঘন্টাখানেক পরে গোয়ালন্দ মোড়ে এসে যখন গাড়ি পাল্টালাম, ততক্ষণে বৃষ্টি থেমেছে, সন্ধ্যাও নেমেছে। পাবনায় ঘুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা বাতিল করতে হল বলে কষ্টও লাগছিল। কিন্তু করারও কিছু নেই৷ আপাততঃ অদৃষ্টকে মেনে নিয়ে পাবনা ভ্রমণ ভবিষ্যতের জন্য রেখে চোখ বন্ধ করলাম।

লেখাটি ‌'রাজবাড়ীবিহীন রাজবাড়ীতে' শিরোনামে আমার ব্যক্তিগত ব্লগে প্রকাশিত
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:১১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হেঁটে আসে বৈশাখ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০০


বৈশাখ, বৈশাখের ঝড় ধূলিবালি
উঠন জুড়ে ঝলমল করছে;
মৌ মৌ ঘ্রান নাকের চারপাশ
তবু বৈশাখ কেনো জানি অহাহাকার-
কালমেঘ দেখে চমকে উঠি!
আজ বুঝি বৈশাখ আমাকে ছুঁয়ে যাবে-
অথচ বৈশাখের নিলাখেলা বুঝা বড় দায়
আজও বৈশাখ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×