somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওমা হুজুর-হুজুরাইন দেখি আজকাল যুগে ডেটিং করে

১৪ ই আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই বলে রাখি এই পোস্ট কোন ফানি/গল্পমূলক পোস্ট নয়। এই পোস্ট কেবল কোন এক বন্ধুর জন্মদিনে গভীরভাবে তাকে মনে পড়ে যাওয়ায়, তাকে নিয়ে কিছু স্মৃতির রোমন্থন বৈ আর কিছু নয়।
আমার ঐ দোস্তের হুজুরদের মত দাড়ি ছিল কিন্তু হুজুরদের কোন বৈশিস্ট্যর লেশমাত্র তার মধ্য ছিল না। মাঝে মাঝে নামাজ পড়ত তবে বাকি সব কিছু যেমনঃ মেয়েদের সাথে ফোনে টাংকিবাজি :P,আড্ডায় যথেস্ট পরিমাণে গুইল মারা বৈশিস্ট্য :D ,পর্যাপ্ত পরিমাণে তার মাঝে বিদ্যমান ছিল। ঢাকায় বাসা হওয়ার কারণে টার্মের অধিকাংশ সময় সে বাসায় কাটাত, কেবল টার্মের শেষ সপ্তাহ থেকে পিএলের সময় ব্লকে তার জোড়াল গরু মার্কা আওয়াজ শোনা যেত।
তার ভাষ্য অণুসারে, বাসায় সে ব্যাচে ছাত্রী পড়াত(কোন ছাত্র না কিন্তু) এবং তার সব ছাত্রী (ছাত্রীর বড় বোন না কিন্তু /:)) তার প্রেমে হাবুডুবু খেত।
হলে তার আবাস ছিল আমার পাশের রুমে। প্রতি টার্মে বাসা থেকে এসে আমার রুমে ঢুকে খালি গায়ে আমার টেবিলের পিছনে রাখা বড় আয়নার সামনে দাঁড়াত। তারপর নিজের পেটের চর্বিবহুল জায়গার কিছু অংশ ডান হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরে গুরুগম্ভীর ও বড়ভাই সুলভ স্বরে আমার জুনিয়র রুমমেটের উদ্দেশ্য প্রশ্ন ছুড়তঃ "দেখ তো মজনু, আমার পেটের ভুড়িখানা কমছে কিনা? B-)"। আমার জুনিয়র রুমমেট ততধিক পাম্প দেওয়ার সুরে উত্তর দিতঃ "আরে ভাইজান, আপনার ভুড়ি তো দেখি একদম শুন্য হয়ে গিয়েছে। আপনার ফিগার দেখি দিনে দিনে আরও ক্ল্যাসিক হচ্ছে :D। আপনার ছাত্রীরা এইবার আপনাকে কেমন ডিস্টার্ব করল?"।তারপর আমার দোস্ত আমার বিছানায় বসে তার বিশাল হাতের তালু দিয়ে সজোরে আমার টেবিলে আট কেজি ওজনের একখান চড় বসিয়ে গল্প শুরু করতঃ "আর কইয়ো না, এবার এত ডিস্টার্ব করল যে মন-মেজাজ পুরা বিলাই হয়ে গেছে, সামনে থেকে আর ছাত্রী পড়াব না ভাবছি। এবার হইছে কি ...।"
প্রতি টার্মে এইরকম ছাত্রীমার্কা গল্প আমাদের শুনতে হত। তবে আড়ালে-আবডালে আমরা বলতাম এইসব গল্পের অধিকাংশ চাপা। আমার দোস্তের বলা এইসব গল্প থেকে একটি গল্প নিয়ে এই পোস্টের শিরোনাম। আমি তার ভাষায় সেই গল্প বলছি-

এইবারে নতুন ব্যাচ শুরু করার পাচ-ছয় সপ্তাহ পর এক ছাত্রী একদিন বিকালে ফোন দিয়ে বললঃ"ভাইয়া আমার কিছু টপিকস বুঝতে সমস্যা হচ্ছে, একটু আলাদাভাবে বসা দরকার ছিল"। আমাকে তার আগেও নানা অজুহাতে ফোন দিয়ে খাজুরে গল্প করেছে সে। আমি তাই একটু ভয় পেলাম /:)। তারপরেও বসতে চাইছে আর আমি টিচার তাই না বলতে পারলাম না ;)। বললামঃ"আমার বাসায় আস"। সে বললঃ"ভাইয়া আমি যদি আপনার বাসায় গিয়ে একা কোন কিছু পড়তে যাই, আমার বন্ধুরা আমাকে খোচা দিবে, আপনাকে বাহিরে কোথায় বসতে হবে আমাকে নিয়ে।" আমি তো পড়লাম মহা ক্যাচালে, আমি জানতাম এই ছাত্রী আমার প্রতি দূর্বল, তাই আমি যতই না করি বাহিরে বসার ব্যাপারে, ততই সে জোড় করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তার জোড়াজুড়িতে রাজি হতে বাধ্য হলাম, কার্জন হলের সামনের খোলা জায়গায় শনিবার সকাল ১০ টা থেকে বসব। আমার এই ছাত্রী আবার ব্ল্যাক বোরকা পড়ে, মুখ খোলা থাকে, অনিন্দ্য সুন্দর চোখ তার :)। যাই হোক শনিবার সকাল ১০ টার দিকে আমি এবং সে আলাদাভাবে কার্জনহলে চলে গেলাম। তারপর তাকে তার না বুঝা টপিকস নিয়ে সামনে বই-খাতা খুলে বুঝানো শুরু করলাম। ওমা মাইয়া দেখি পড়ায় মন নাই, আমার দিকে হাঁ কইরা তাকায় আছে। ঐ সময় পাশে দিয়ে ঢাকা ভার্সিটির কিছু মাইয়্যা যাচ্ছিল। তারা আমার দাঁড়ি দেইখ্যা আর আমার পাশে বসা বোরকাওয়ালি মাইয়্যা এবং তার চাহনি দেইখ্যা আমাদের উদ্দেশ্য কইরা বলল-"ওমা হুজুর-হুজুরাইন দেখি আজকাল যুগে ডেটিং করে"।

শুভ হোক জন্মদিন আমার সেই দোস্তের।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৯
১৩টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×