somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সদ্য হয়ে যাওয়া বুয়েট ছাত্রদের মরুময় :( জীবনের মেয়েঘটিত ব্যাপার-স্যাপার :-B (এসএমএস বিনিময় এবং ..) //নিছক ফান পোস্ট

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের সময়কার বুয়েট লাইফকে এবং হল জীবনকে মেয়েদের আকাল থেকে বলতাম মরুভূমি :( এবং টিউশনিতে যদি ছাত্রী কিংবা স্টুডেন্টদের বোনসম্পর্কিত উঠতি তরুনী থাকলে টিউশনি স্থানকে নাম দেওয়া হত আমাদের মরুদ্যান :| । সেই মেয়েস্বল্প মরুভূমি জীবনের একটি ঘটনা নিয়ে এই পোস্ট।
২০০২-০৩ দিককার কথা। মোবাইল জিনিসখান কেবল ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে আসা শুরু করেছে, কারো হাতে ইতিমধ্য চলে এসেছে । আমার এক দোস্ত জিতু সদ্য মোবাইল কিনে রুমে এসেই পাশের রুমে অবস্থানকারী আমাদের অন্য দোস্ত মামুনের মোবাইলে এসএমএস পাঠাল-" হায় মামুন,আমি সামিয়া(সামিয়া আমাদের লাস্যময়ী ক্লাসমেট,দেখতে বুয়েটিয়ান উল্টা হট মার্কা :P এবং তখন পর্যন্ত জুটিহীন) এটা আমার নাম্বার)"। সেকেন্ডের কাটা ৬০ দাগ পার হওয়ার আগেই মামুনের রিপ্লাই-"থ্যাঙ্কু, নাম্বার জানানোর জন্য। কি হ্যান্ডসেট কিনলে?........"
সামিয়া বেশধারী জিতু তখন ফাদঁ পাতার জন্য পাচঁ মিনিটের মধ্য রিপ্লাই দিল মামুনকে। এসএমএসের খেলা শুরু হল দুইদিক থেকেই। মামুন ভাবে সামিয়াকে এইবার আমার শিকার বানামু :P । সামিয়াবেশি জিতু ভাবে,চান্দুঁ তোমারে পাইসি মাইনক্যা চিপায় ফালানোর সুযোগ :> । এসএমএস বার্তা মোবাইল মডেল থেকে লেভেল পূর্তি উৎসব, হিন্দি সিনেমা,ক্লাসের কোন পোলা কোন মাইয়্যারে দেইখা বুকে ব্যথা পায় :-B ,কোন মাইয়া কোন পোলার দিকে দ্বিতীয়বার তাকাইতে শরম পায় হয়ে :!> ফিনিশ হল মেশিনের মত কাঠখোট্রা একটা টপিকসে।
সামিয়াবেশি জিতুঃ মামুন আমার পরশু মেশিনের ক্লাশ টেস্টে কি যে হবে? আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না, তুমি কি ক্লাশ টেস্টের পড়া ফিনিশ করেছ? আমি তো একটা পার্ট কিছুতেই বুঝতে পারছি না।
মামুনঃ আমারতো পড়া ফিনিশ। তুমি কোনটা বুঝতে পারছনা বল?
সামিয়াবেশি জিতুঃ আমি ঐ পার্ট(একটা চ্যাপ্টারের কথা বলল) কিছুতেই মাথাতে ধুকাতে পারছি না। তুমি একটু আমায় হেল্প করবা?স্যার তো মনে হয় ক্লাশে পড়ায় না ঘুমায়, আমি কিচ্ছু বুঝি না স্যারের পড়া। তুমি বুঝ??
মামুন ভাবল ঐ সুযোগ ;) , এই মওকা হাতছাড়া করা যাবে না-নিজে এখনও পড়ি নাই এবং বুঝি নাই দেখে কি হইছে এক রাতে পইর‌্যা এবং বুইঝ্যা কাল সামিয়ার সাথে একটা পার্সোনাল সিটিং দেওয়া যাবে। B:-/
মামুনঃ আমারতো পড়া ফিনিশ, বাট এসএমএসে তো বোঝান যাবে না এবং ফোনে বোঝান অসম্ভব। দেখা করে বোঝাতে হবে।
সামিয়াভেকধারী জিতুঃ তুমি এক কাজ কর এক ঘন্টার মধ্য আমার হলে আস।
মামুনের ভাবে-- ও মোর জ্বালা আমি তো কিছুই পরি নাই এক ঘন্টার মধ্য কেমনে আসমু। :(
মামুনঃ সামিয়া কিছু মনে কর না, আজ বাসা থেকে আব্বু আসবে তাই আমি আসতে পারব না, তবে তুমি ফ্রি থাকলে কাল তিনটা- চারটার দিকে আসতে পারব।
সামিয়াভেকধারী জিতুঃ না আমার কোন সমস্যা নাই, আমি হলে থেকে থেকে বোর হচ্ছি ক্রমাগত B-) । আমার এখনও জানও, রুমমেটদের সাথে তেমন খাতির হয় নাই ;)
অতঃপর আরো ক্ষানিকক্ষনের এসএমএস বিনিময়ে ঠিক হল মামুন পরের দিন(শুক্রবার) বিকাল চারটায় হলের গেস্টরুমে আসবে এবং কিছুক্ষণ সামিয়াকে মেশিনের ঐ অংশ বুঝানোর পর মামুন এবং সামিয়া এক সাথে সন্ধ্যাখান ক্যাম্পাসে আড্ডা মারবে।
এসএমএস বিনিময়ের ঘন্টাখানেক পরেই, মুন এবং সামিয়াভেকধারী জিতুর এসএমএস বিনিময়ের ডিটেইল খবর হলের আমাদের বন্ধুসকলের কর্ণগোচর হল জিতুর মাধ্যমেই। আমাদের মধ্য সিদ্বান্ত হল,আমরা গভীরভাবে আগামীকাল বিকাল পর্যন্ত মামুনকে অবজারভেশনে রাখব এবং যদি দেখি মামুন হল থেকে বাহির হয়েছে সামিয়ার সাথে দেখা করার জন্য আমরা হল গেটে মামুনকে বাধা দিব কেলেঙ্কারি থেকানোর জন্য।
এসএমএস ঘটনার দিন সন্ধ্যাবেলায় দেখলাম আমাদের মামুন তার প্রত্যহদিনের টিউশনি বাদ দিয়ে পড়ার টেবিলে।
আমি টিপ্পনি কেটে প্রশ্ন করলামঃ কিরে দোস্ত,পড়ার টেবিলে সন্ধ্যাবেলায়। সিরিয়াস মনে হচ্ছে, বুড়া বয়সে টিচার ফাইট দিবি নাকি??
মামুনঃ না চিন্তা করছি, এই ক্লাশ টেস্টটা ফাটাইটে হবে।
আমি খোচা মেরে বললাম ঃ হুমম,গুড। বাট আবার নিজেই ফেটে যাইস না।
পরের দিন ২টা ৩০ এর দিকে মামুনের এক রুমমেট এসে ইনফর্ম করল , মামুন হেভি মাঞ্জা মারা শুরু করেছে এবং সামিয়াভেক ধারী জিতুকে এসএমএস করে ইনফর্ম করেছে ৩ টার দিকে লেডিস হলের গেস্টরুমে যাবে। কেলেঙ্কারি আটকানোর জন্য তৎক্ষণাৎ জিতু ,আমি সহ আরো দুইজন দোস্ত ছাত্রী হলের বাহিরের গেটের সামনে চলে গেলাম। প্রায় তিনতার দিকে দেখি প্রায় সদ্য কেনা নতুন টি শার্ট,আয়রণ করা প্যান্ট,বালুকাবিহীন জুতার সাথে মাথায় জেল লাগানো অবস্থায় পিঠে একটা ব্যাগ নিয়ে মাথা নিচু করে মামুন লেডিস হল গেটের দিকে আসছে।
বাহিরের হল গেটের সামনেই মামুনকে আটকালাম আমরা।
আমিঃ কিরে দোস্ত কই যাস মাঞ্জা মাইরা?
মামুনঃ দেখতেই তো পারতাছিস,লেডিস হলে যাইতাসি। তোরা চারজন এইখানে দাড়াই কি করিছ?
তৃতীয় দোস্তঃ না মামু আমরা মাইয়া দেখার জন্য দাড়াঁই আছি,তুই লেডিস হলে কার কাছে যাস?
মামুনঃ আমি সামিয়ার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি?? :!>
জিতু বিস্ময়ের সাথেঃ সামিয়ার সাথে কি হইল যে এই দুপুরে দেখা করতে যাস??
মামুনঃ সামিয়ার সাথে আগামীকালের ক্লাশটেস্ট নিয়া গ্রুপ ফাইট দিব।
আমিঃ মামা, সামিয়ার সাথে গ্রুপ ফাইট দিবা বইল্যা কি কালকে সন্ধ্যা পর থেকে সারাক্ষণ বইয়ের সাথে ফাইট দিলা? =p~ আরেকটা কথা সামিয়া কিন্তু এখন সৈকতের সাথে মাঝে মাঝে একটু ঘুরাঘুরি করে :| ,কল করে দেখ এখন আবার সৈকতের সাথে গেল কিনা।
মামুনঃ আরে না ,আমায় একটু আগে এসএমএস দিয়ে বলল-ও হলেই আছে।আর সামিয়া সেই রকম মেয়ে না। :D
চতুর্থ দোস্তঃ তবুও মামা,একটু ফোনেই কথা কইয়্যা ঢুকলা না হয় গেস্ট রুমে।
মামুন কল দিল এবং রিংটোনের সাউন্ড আসল জিতুর পকেট থেকে। কিন্তু জিতু ফোন রিসিভ করল না।
আমিঃ কিরে সামিয়া ফোন ধরল?
মামুনঃ মনে হয় বাথরুমে গিয়েছে ও তাই ফোন ধরছে না।:D
তৃতীয় দোস্তঃ তাহলে তুই আমাদের সাথে আড্ডা দে, যতক্ষণ পর্যন্ত সামিয়া কল না ধরে।
জিতুঃ এক-দুই মিনিট পরেইতো বাথরুম থেকে বাহির হবে তখন আবার কল দিস।
এক-দুই মিনিট পরে আবারো মামুন কল দিল এবং পুনরায় আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি-জিতুর প্যান্টের পকেট থেকে রিংটোন বাজল কিন্তু মোবাইল কল রিসিভ হল না।
মামুনঃ না এখনও মনে হয় বাথরুমেই আছে।:P
আমি মাথা নেড়ে দুঃখের সাথে বললামঃ ভেরি স্যাড। আরো দুয়েক মিনিট অপেক্ষা কর তারপর আবার ফোন দে। কথা বলেই ঢুক লেডিস হলে।
একমিনিট যেতে না যেতেই মামুন আবার কল দিল তবে এবার জিতু পকেট থেকে ফোন বাহির করে বললঃ হ্যালো।
ফোন বাহির করে জিতু হ্যালো বলার সাথে সাথে মামুনের মুখ চারদিনের শুকনা লাল শাকের মত লাল হয়ে গেল :|। আমি জিতুর পিঠে থাপ্পড় লাগিয়ে বললামঃ কিরে মামা,তুই আবার সামিয়া হইলি কবে থেকে।
মামুন অতঃপর একটি কথা না বলে গটগট করে আউলার দিকে রওনা দিল :((
পরিশেষে, এই ঘটনার পর মামুন এক সপ্তাহ আমাদের সাথে কথা বলত না। এক সপ্তাহ পরে আমাদের সাথে কথা বলা শুরু করল কিন্তু ডিক্লেয়ার দিল পুরুষ সামিয়া(জিতু) সাথে কোনদিন কথা বলা দূরের কথা মুখও দেখাদেখি করবে। এরও একসপ্তাহ পরে কোন একটা ভুজং-ভাজুং উপলক্ষ ঠিক করে মামুনকে চারজন স্টারে ভুড়ি ভোজন করালাম এবং বললাম-"মামা তুমি জিতুর সাথে মিটমাট কইর‌্যা ফেল,জিতু যদি মুখ খোলে তবে কিন্তু তোমার প্রেস্টিজ তোমার রাতের লুঙ্গীর মতো তোমার গলায় ঝুলবে":P
মামুনঃ তোরা তাহলে প্রমিজ কর,এই ঘটনা ফাস হবেনা।
আমরা মামুনের অভিমান ভাঙ্গানোর জন্য পন করিলাম কস্মিনকালেও এই ঘটনা কেউ জানিবে না, আজকে আমি ব্লগে প্রকাশ করে আট-নয় বছর পুরানো পণ ভাঙ্গিলাম :((
বিঃদ্রঃ নামগুলোতে বাস্তবের সাথে কোন মিল রাখা হয় নাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:৩৩
৩৮টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×