somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেই মেয়েটি

১১ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কর্মস্থানে কর্মরত অবস্থায় দেখা হয়েছিল। বোরকা পরা সেই টানা টানা নয়ন দুটো। জিজ্ঞেস করলাম - কি জন্য আসছেন? বলে- সেলিম স্যারের কাছে আসছি। সেলিম স্যার আছে? আমি বললাম হ্যাঁ আছে, ওনার অফিসে দেখা করেন।মেয়েটির সাথে আরও দুজন ছিল।একটা তার বড়বোন এবং বড়বোনের ছেলে।কিছক্ষন পর সেলিম স্যারের অফিসে গিয়ে দেখলাম খুব সুন্দর চেহারা তার তেমন তার মিষ্টি কন্ঠ।সবকিছুতেই সেই আকর্ষনীয় নারী । যাই হোক আমার কাছে বেশ ভালোই লাগছিল। সেলিশ স্যার কি একটা কাজের জন্য বাইরে গেল এই ফাঁকে আমি গেলাম সেলিম স্যারের অফিসে । জিজ্ঞেস করলাম - স্যার কোথায়? মেয়েটি বলে -স্যার একটু বাইরে গেছে, এখন আসবে।আপনার কোন জায়গা থেকে আসছেন? বলে - বটতলী থেকে আসছি। বটতলী আমাদের অফিস থেকে ৫ কিঃমি দুরে।এভাবে মিনিট পাঁচেক কথা বলি। ওই মেয়েটির নাম জিজ্ঞেস করি- নাম আফরোজা। এরপর আমি আমার অফিসে চলে আসলাম । মেয়েটির সাথে কথা বলার সময় বুঝিয়ে দিলাম আমি তাকে ফলো করেছি। তবে সেও বুঝতে পেরেছিল। আধঘন্টা পর তারা স্যারের রুম থেকে বের হল। সামনে দাড়িয়ে ছোট পিচ্চিটার হাতে একটা চিপস্ দিয়ে বললাম ভাল থাকিয়েন।অফিস থেকে নিচে নামার মিনিট পাঁচেক পরে পিচ্চিটা আমার রুমে আসল, বলল - আংকেল আম্মু বলছে আপনার নাম্বার টা দিতে। দেখি ওর হাতে মোবাইল। হঠাৎ আশ্চর্য্ হয়ে বুকের হার্টবির্ট বেড়ে যাচ্ছিল।তখন মুচকি হেসে বলি- দাও মোবাইল এদিকে দাও বলে ওর মোবাইল থেকে আমার মোবাইল কল দিলাম । তারপর পিচ্চিটাকে বললাম ডায়াল নাম্বারে আছে। ১০ মিনিট পর কল আসল বলে ভাইয়া আমি মেহেরিন, আফরোজার বড়বোন। ওহ আচ্ছা আপু কেমন আছেন? হ্যাঁ ভালো । বলে _ আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসিয়েন। বলি - দেখা যাক।আচ্ছা রাখি বলে লাইন কেটে দিল । ঐদিন রাত ৯ টার দিকে আমি কল দিলাম - তাদের ফ্যামিলির ডিটেইলস্ জানলাম। মেহেরিন আপুর স্বামী নাকি বিদেশে থাকে। এরপর আফরোজার কথা জিজ্ঞেস করলাম -তার নাকি এ্যাংগেজ হয়ে গেছে, স্বামী নাকি ডুবাই থাকে। একথা শুনে বললাম আপনারা কি বিদেশীওয়ালার সাথে আত্নীয়তা করেন নাকি ।সে বলে মা বাবা যেদিকে ভাল মনে করে ।আফরোজা কথা শুনে মনটা হঠাৎ বিষন্ন হয়ে গেল। এরপর আফরোজার সাথে কথা বললাম সেও নাকি বিদেশী পছন্দ করেনা।মা বাবা তার কথা রাখেনি ।পাকা বাড়ি দেখে বিয়ের কাজ সেরে ফেলছে। ডুবাই থেকে আসলে অনুষ্ঠান করে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাবে।এভাবে ১০-১৫ দিন তাদের সাথে কথা বলি। একদিন কথার ছলে আমি তাকে যে আমার ভালো লাগে সেই কথাটি বলে দিলাম।
আফরোজা এ কথাটি শুনে কিছুক্ষন স্তব্দ হয়ে বলে-ভাইয়া ভাল লাগলেও এখন আর কিছু করার নেই, আমার মা-বাবা আমার জীবনটাকে মার্ডার করে দিছে। যা আমার পছন্দ না সেটা আমার ওপর চেপে দিয়েছে। আরও বলে -ভাইয়া সরি আপনি আমার সাথে আর কথা বলিয়েন না ।আমি বললাম -কেন? আপনার সাথে কথা বললে আমার দুঃখ বেড়ে যায়। মানে? তুমি কি বলতে চাও? আফরোজা বলে _ আমি চেয়েছিলাম আরও পড়ালেখা করব, আর আপনার মত একজন সরকারী কর্মজীবিকে বিয়ে করব । নিজেও একটা ছোট চাকরী করব। কিছুইতো আমার জীবনে হলোনা তাই বলে কি তুমি আমার সাথে কথা বলবেনা? আফরোজা তুমি অনেক ভালো মেয়ে । তুমি হাল ছাড়িও না, এখনো তোমার সময় আছে তুমি কলেজে ভর্তি হয়ে যাও । মা বাবা পড়ালেখার খরচ বহন করবেনা।বললাম তোমার স্বামীর কাছ থেকে নেবে। সে বলে আমার স্বামীই ত বলল আমার আর পড়ালেখার দরকার নেই । যা পড়ছি অনেক পড়ছি।ঐ দিন রাতে অনেক চিন্তা করলাম আসলে মেয়েটি অসহায় । পরিবারের চাপে তার মুখ বন্ধ। আর আমি যা ভেবেছিলাম মেয়েটির সাথে প্রেম করা তো দূরের কথা আরও টেনশনের মধ্যে পড়ে গেলাম। চিন্তিত মনে ঘুমিয়ে পড়লাম । সকালে ঘুম থেকে উঠে মোবাইলে টাইম দেখতে গিয়ে দেখি এস এম এস/:)ইংরেজিতে লেখা-‌‍"I LOVE U । আমার আবেগ আর ধরে রাখতে পারিনি সরি।" এইটুকু.........সত্যিই কি মেয়েটির কাছ থেকে ভালবাসা পেয়ে গেলাম ?
মেয়েটি কি সত্যিই আমাকে ভালবাসে? আমার মনে এরকম প্রশ্নের উদয় হতে থাকে। না না তার সাথে প্রেম করা যাবে না তার সাথে প্রেম করা মানে আগুন নিয়ে খেলা করা। কারণ সেই মেয়েটির স্বামী আছে তার বিয়ে হয়ে গেছে কিন্তু সেই বলেছিল এই বিয়ে তার পছন্দমতে হয়নি। তবুও সে স্বামীকে অস্বীকার করেনি। যতেষ্ঠ চিন্তা করলাম মেয়েটিকে নিয়ে। ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিলাম আর মেয়েটিকে কল দেব না। নাম্বার টি আমার মোবাইল থেকে ব্লক করে দিলাম । নাম্বার টি যে ব্লক করলাম তা আফরোজা বুঝতে পেরেছিল। তারপর অন্য একজনের মোবাইল থেকে আমাকে এস এম এস করল -
"কেন তুমি অসময়ে আমার জীবনে আসলে ? কেন তুমি আমাকে বুঝিয়ে দিলে যে ভালবাসা কি?প্রেম ভালবাসা আমি যখন বুঝিনি আমার মা বাবা বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দিয়েছে। আমার জীবনটাই বৃথা।"
মেয়েটি আমাকে এতই ভালবেসে ফেলেছিলো যে আমার নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল। এখনো সেই মেয়েটির কাহিনী স্মৃতি থেকে মুচতে পারি নি। কোনদিন ফোন ও করিনি সেই কেমন আছে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×