somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস ২০০৯ ঃ এক-বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ট বন্ধুত্বের অপেক্ষায়।

০২ রা আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বন্ধুত্ব বিষয়ক প্রথম গল্পঃ
শৈশবে 'বন্ধু' বা 'বন্ধুত্ব' বিষয়ক প্রথম কি গল্প শুনেছিলাম তা নিশ্চত ভাবে আজ মনে নেই।শৈশব স্মৃতির পাতায উল্টাতে এ বিষয়ে যে গল্পটি আজ প্রথম মনে এল, তা হল ' 'ভাল্লুক ও দুই বন্ধু"। শৈশবে সকলেই সম্ভবত এক বা এবাধিক বার এ গল্পটি শুনেছেন ও পড়েছেন।


গল্পটার একটা নৈতিক শিক্ষা ছিল ; ' বিপদে প্রকৃত বন্ধুর পরিচয় পাওয়া যায়।'

শৈশবের প্রথম বন্ধুঃ
আমার শৈশবের আমার প্রথম বন্ধু আমার দুই বছরের বড় বোন। স্বাধীনতা উত্তর সময়ে (১৯৭৪~১৯৭৮) চরম অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের কালে শহর কেন্দ্রিক নিম্ন মধ্যবৃত্ত পরিবারের পিঠাপিঠী দুই ভাই বোনের শৈশব কাল স্বাভাবিক ভাবেই খুব বেশি রঙিন হওয়ার কথা নয়।তুবও শৈশবের দিনগুলোতে যে টুকু রঙের ছোঁয়া পরশ, তার প্রায় সব টুকুই আমার বড় বোনের সস্নেহ বন্ধুত্বের।

শৈশবে বন্ধুদের মুখগুলো মনে করবার চেষ্টা করতেই যে একটি মুখ শুধু স্পষ্ট হয়ে উঠল , তার ছবি দেখুন আমার কোলে।



বন্ধুত্ব বিষয়ক পড়া আমার প্রিয় উপন্যাসঃ
জার্মান ঔপন্যাসিক Erich Maria Remarque এর লেখা '' থ্রী কমরেডস'' (Three Comrades). এ গল্পের উপজীব্য হচ্ছে , বিশ শতকের গোড়ার দিকে জার্মানীর এক নাম না জানা শহরের সংকটময় জীবন সংগ্রামের মাঝেও Robert,Otto এবং Lenz নামক তিন তরুনের নির্মল বন্ধুত্বের কাহিনী। এই বন্ধুত্বের কাহিনীর মাঝে যুক্ত হয় Patrice Hollmann নামক অপূর্ব সুন্দরীর সাথে সর্ব কনিষ্ঠ 'কমরেড' রবাটৈর প্রনয় উপ‌্যাখান।



বন্ধুত্ব বিষয়ক যে গল্প আমি বারংবার মানুষ কে শুনিয়েছিঃ

তিন আবল্য বন্ধু রহিম, জোসেফ আর রাম বনের মধ্যে পথে হারিয়ে গোলক ধাঁধায় ঘুরতে ঘুরতে যখন ওষ্ঠগত প্রাণ তখন বনে প্রান্তে খুজে পেলো এক আখ ক্ষেত। জল তিষ্টায় তারা তিন জন এত কাতর ছিল যে কিছু আখ খেয়ে ফেল। আখের রসে যখন তৃষ্ঞা জুড়ালো তখন খেয়াল হল , আখের মালিকের অনুমতি ব্যতিত আখ খেয়ে তারা ভিষণ অন্যায় করেছে। তারা মালিককে খুজে বেড় করে ক্ষমা প্রার্থনা করবে বলে মনস্থির করল ।
আসে-পাশে খোজাখুজি করতেই আখ ক্ষেতের অপর প্রান্তে জমির মালিক কে একাকী কর্মরত অবস্থায় পেয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করল।মালিক এভাবে তার জমির আখ খাওয়াতে মনে মনে ভিষণ ক্ষিপ্ত হল । কিন্তু সরাসরি তা প্রকাশ করলো না। কারণ, সে একাকী তিন জনের উপর মনে জ্বালা মেটাতে পারবে না।
তাই , মালিক চালকি করে রহিম ও জোসেফ কে এক পাশে ডেকে বলল , “তোমারা দু’জন আমার ক্ষেতের আখ খেয়েছো , তাতে আমার কোন দুৎখ নাই । কিন্তু , ও ব্যাটা রাম কেন খেবে? ও পৌত্তলিক, পশুরও অধম।” মালিকের কথায় রহিম ও জোসেফের দৃষ্টি খুলে গেল। এত দিন তারা কি ভুলটাই না করেছে ; একটা মুর্তি পুজারি কে সাথে নিয়ে ঘুরেছে। সুতরাং আখ খাওয়া অপরাধে মালিকের সাথে মিলে রহিম ও জোসেফ পৌত্তলিক রাম কে উত্তমোধ্যম দিয়ে তাড়িয়ে দিল।

এবার রহিম কে মালিক এক পাশে ডেকে নিয়ে বলল,“ তুমি আমার মুসলামান ভাই , তুমি দুটো আখ নিলে আমার কোন কষ্ট হয় না। কিন্তু ও ব্যাটা জোসেফ তো খ্রীস্টান; জাননো না দেশে দেশে খ্রীস্টানরা মুসলমানদের কি অত্যাচার টাই না করছে?” রহিমের মাঝে এবার দীনই তাগৎ জাগ্রত হল। মুসলিম ভাতৃত্বের বন্ধনে আবধ হয়ে মালিকের সাথে মিলে জোসেফ এর উপর চড়াও হল আর জোসেফ কোন রকম প্রাণ টি নিয়ে বাঁচলো।

এবার একা রহিম কে পেয়ে জমির মালিকের আসল স্বরূপ প্রকাশ পেল। সে রুদ্র মুর্তিতে রহিমের উপর ঝাপিয়ে পরলো।

(কৃতজ্ঞতা স্বীকার ও সংগ্রহঃ আব্দুল গফফার চৌধুরী )
ঊনবিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ট বন্ধুদ্বয়


কার্ল মার্কস(১৮১৮~১৮৮৩) ও ফেড্রিক এঙ্গেলস (১৮২০~১৮৯৫) এর বন্ধুত্বের সূচনা ১৮৪৩ সালে ।সত্য কার নিঃশর্ত বন্ধুত্ব মানুষের সৃজনশিল ক্ষমতাকে কতগুন বাড়িযে দিতে পারে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ কার্ল মার্কস-ফ্রেড্রিক এঙ্গেলস।

বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ট বন্ধুদ্বয়


মানুষ স্বপ্ন দেখে একাকী ; তাই স্বপ্ন একান্ত ব্যক্তিগত। ব্যক্তি কেন্দ্রিক সমাজ ব্যবস্থার এই ধারনা কে ধুলিসাত করে দিযেছে যে বন্ধুত্ব তা হচ্ছে ' ফিডের ক্যাস্ট্রো ও চে গুয়েভারা'।মানুষ একই সাথে অভিন্ন স্বপ্ন দেখতে পারে ;হাতে-হাতে ধরে বুকে-বুক পেতে লড়াই করতে পারে সেই সম্মিলিত স্বপ্নের জন্য। সে স্বপ্ন জয়ের লড়াই বিজয় সুনিশ্চিত, যদি সে স্বপ্ন হয় ব্যক্তি বা গোষ্ঠি স্বার্থান্ধতার কুলষ মুক্ত।


বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস ২০০৯ এ দাড়িয়ে আমি এক-বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ট বন্ধুত্বের অপেক্ষায়।


সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ২:৫৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×