somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিলেশন যখন একটি লাভজনক প্রজেক্ট

২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্রেক আপ হওয়ার পরে ছেলের সাথে তার বন্ধুর কথপোকথন:
- কীরে দোস্ত, মালটারে নাকি ছেড়ে দিলি?
- হ্যা রে। আর কত? টানা তিন বছর রিলেশন করছি। একজন মানুষের সাথে এতোদিন থাকা যায় নাকি!!
- কী বলিস!! তিন বছর রিলেশন করার পর ছাড়তে খারাপ লাগে নি তোর? আর তাছাড়া এই মেয়ের পেছনে কত কত খরচও তো করেছিস। মেয়েকে যদি বিয়েই না করতে পারলি তাহলে তো পুরোটাই লস প্রজেক্ট।
- আরে ধুর!! আমি কি এতো বোকা নাকি? খারাপ লাগার কী আছে, এক মাসের মধ্যে আরেকটারে পটায় ফেলবো। আর খরচের কথা যদি বলিস, তাহলে শোন, এগুলো খরচ না, বরং ইনভেস্টমেন্ট। তোকে একটা হিসাব বোঝাই- ‘ধর, এই তিন বছরে মেয়ের পেছনে খরচ হইছে আনুমানিক ৮০০০০ টাকা। আর মেয়েকে নিয়ে এই তিন বছরে লিটনের ফ্ল্যাটে গেছি ১০০ বারের উপরে। প্রতিবার ১০০০ টাকা করে ধরলেও তো আমার লাভ থাকে ২০০০০ টাকা। আর সেই সাথে কত শার্ট-প্যান্ট, টি-শার্ট তো রয়েছে-ই। সব দিক বিবেচনা করে, এই রিলেশনে আমার লস বলে কিছুই নেই।”
- কী বলিস এইসব!! তুই তো জিনিয়াস, এইভাবে তো ভাবি নি কখনো। এটাই ভালো, একটাকে নিয়ে পড়ে থাকলে তো আর জীবন চলে না, আর তার জন্য মন খারাপ করারও কোন মানে হয় না। চল, আজকে তাহলে একটা পার্টি হয়ে যাক।
- চল…….

অন্যদিকে, মেয়ের সাথে তার বান্ধবীর কথপোকথন:
- কী রে, ছাগলটারে ছাড়লি অবশেষে? ভালোই হইছে। তিন বছর কীভাবে যে ছিলি!! আমি হলে তো কয়েকমাস নাকে দড়ি দিয়ে ঘুড়িয়ে ছেড়ে দিতাম।
- আরে, তিন বছর কী আর এমনি এমনি ছিলাম! আমি এতো বোকা নাকি। ও ছিলো সোনার ডিম পাড়া হাঁস। কতো কতো ড্রেস, অর্নামেন্টস, পার্লার খরচ কবজা করে নিয়েছি। সেই সাথে বড় বড় রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া তো আছেই। এবার জন্মদিনের পার্টিটা যে তোদের দিলাম, তা তো পুরোটাই ওর টাকায় করেছি। ও আমার জন্য সব করতে পারতো।
- কিন্তু তুই না ওর সাথে লিটনের ফ্ল্যাটেও গিয়েছিলি?
- গিয়েছি, তাতে কী হয়েছে। গ্রো আপ বেবি!! এরকম খ্যাত মার্কা কথা বলবি না। শোন, পুকুরের পানিতে একটা পাথর ফেলার সাথে সাথে হয়তোবা একটু ঢেউ ওঠে, কিন্তু কিছুক্ষণ পরে তা আবার মিলিয়ে যায়। কেউ বুঝতেও পারে না এখানে একটু আগে কেউ ঢেল ফেলেছিলো। ঠিক তেমনি কয়েকবার রুম ডেট করলে ক্ছিু যায় আসে না। বিনিময়ে যদি কতোকগুলো জিনিস পাওয়া যায় তো মন্দ কী। আরকেটা পোলারে পটাইছি। ওর বাবার প্রচুর টাকা। দেখি, এর কাছ থেকে কী কী কবজা করতে পারি।
- তুই পারিসও বটে। তাহলে চল আজকে ট্রিট দিবি।
- চল……

এমনি করে সবাই যার যার জীবনের হিসাব নিকাশ করে সুখে থাকার চেষ্টা চালায়। টাকা দিয়ে সব কিছুর হিসাব করে লাভের পাল্লাটা দেখে খুশিই লাগে। কিন্তু ভেবে দেখে না সে কী হারিয়েছে। ছেলেটি হারিয়েছে তা মনুষ্যত্ব, হারিয়েছে ভালোবাসার জন্য সুন্দর একটা মন, হারিয়েছে নিজের ব্যক্তিত্ব অন্যদিকে মেয়েটি শুধুমাত্র কয়েকটি পোষাক আর গিফটের বিনিময়ে হারিয়েছে তার নিজের প্রতি সম্মান, হারিয়েছে ভালোবাসার ‍মূল্য, হারিয়েছে বিবেক। প্রকৃত ভালোবাসা পার্থিব কোন কিছু দিয়ে পরিমাপ করা যায় না, কোন কিছু দ্বারা বিনিময় হয় না, বিনিময় হয় দুটি মনের, দুটি আত্মার। সব সম্পর্ক টিকে থাকুক হিসাব নিকাশের ঊর্ধ্বে এই কামনা করি।……

বিঃ দ্রঃ কোন চরিত্রই কাল্পনিক নয়। These kinda people really exist…...তাই বাস্তবে চরিত্র মিলে যেতে পারে। আর এদের কারণেই বর্তমানে পবিত্র ভালোবাসাকেও কলুষিত বলে ধরা হয়।…..
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×