ব্রেক আপ হওয়ার পরে ছেলের সাথে তার বন্ধুর কথপোকথন:
- কীরে দোস্ত, মালটারে নাকি ছেড়ে দিলি?
- হ্যা রে। আর কত? টানা তিন বছর রিলেশন করছি। একজন মানুষের সাথে এতোদিন থাকা যায় নাকি!!
- কী বলিস!! তিন বছর রিলেশন করার পর ছাড়তে খারাপ লাগে নি তোর? আর তাছাড়া এই মেয়ের পেছনে কত কত খরচও তো করেছিস। মেয়েকে যদি বিয়েই না করতে পারলি তাহলে তো পুরোটাই লস প্রজেক্ট।
- আরে ধুর!! আমি কি এতো বোকা নাকি? খারাপ লাগার কী আছে, এক মাসের মধ্যে আরেকটারে পটায় ফেলবো। আর খরচের কথা যদি বলিস, তাহলে শোন, এগুলো খরচ না, বরং ইনভেস্টমেন্ট। তোকে একটা হিসাব বোঝাই- ‘ধর, এই তিন বছরে মেয়ের পেছনে খরচ হইছে আনুমানিক ৮০০০০ টাকা। আর মেয়েকে নিয়ে এই তিন বছরে লিটনের ফ্ল্যাটে গেছি ১০০ বারের উপরে। প্রতিবার ১০০০ টাকা করে ধরলেও তো আমার লাভ থাকে ২০০০০ টাকা। আর সেই সাথে কত শার্ট-প্যান্ট, টি-শার্ট তো রয়েছে-ই। সব দিক বিবেচনা করে, এই রিলেশনে আমার লস বলে কিছুই নেই।”
- কী বলিস এইসব!! তুই তো জিনিয়াস, এইভাবে তো ভাবি নি কখনো। এটাই ভালো, একটাকে নিয়ে পড়ে থাকলে তো আর জীবন চলে না, আর তার জন্য মন খারাপ করারও কোন মানে হয় না। চল, আজকে তাহলে একটা পার্টি হয়ে যাক।
- চল…….
অন্যদিকে, মেয়ের সাথে তার বান্ধবীর কথপোকথন:
- কী রে, ছাগলটারে ছাড়লি অবশেষে? ভালোই হইছে। তিন বছর কীভাবে যে ছিলি!! আমি হলে তো কয়েকমাস নাকে দড়ি দিয়ে ঘুড়িয়ে ছেড়ে দিতাম।
- আরে, তিন বছর কী আর এমনি এমনি ছিলাম! আমি এতো বোকা নাকি। ও ছিলো সোনার ডিম পাড়া হাঁস। কতো কতো ড্রেস, অর্নামেন্টস, পার্লার খরচ কবজা করে নিয়েছি। সেই সাথে বড় বড় রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া তো আছেই। এবার জন্মদিনের পার্টিটা যে তোদের দিলাম, তা তো পুরোটাই ওর টাকায় করেছি। ও আমার জন্য সব করতে পারতো।
- কিন্তু তুই না ওর সাথে লিটনের ফ্ল্যাটেও গিয়েছিলি?
- গিয়েছি, তাতে কী হয়েছে। গ্রো আপ বেবি!! এরকম খ্যাত মার্কা কথা বলবি না। শোন, পুকুরের পানিতে একটা পাথর ফেলার সাথে সাথে হয়তোবা একটু ঢেউ ওঠে, কিন্তু কিছুক্ষণ পরে তা আবার মিলিয়ে যায়। কেউ বুঝতেও পারে না এখানে একটু আগে কেউ ঢেল ফেলেছিলো। ঠিক তেমনি কয়েকবার রুম ডেট করলে ক্ছিু যায় আসে না। বিনিময়ে যদি কতোকগুলো জিনিস পাওয়া যায় তো মন্দ কী। আরকেটা পোলারে পটাইছি। ওর বাবার প্রচুর টাকা। দেখি, এর কাছ থেকে কী কী কবজা করতে পারি।
- তুই পারিসও বটে। তাহলে চল আজকে ট্রিট দিবি।
- চল……
এমনি করে সবাই যার যার জীবনের হিসাব নিকাশ করে সুখে থাকার চেষ্টা চালায়। টাকা দিয়ে সব কিছুর হিসাব করে লাভের পাল্লাটা দেখে খুশিই লাগে। কিন্তু ভেবে দেখে না সে কী হারিয়েছে। ছেলেটি হারিয়েছে তা মনুষ্যত্ব, হারিয়েছে ভালোবাসার জন্য সুন্দর একটা মন, হারিয়েছে নিজের ব্যক্তিত্ব অন্যদিকে মেয়েটি শুধুমাত্র কয়েকটি পোষাক আর গিফটের বিনিময়ে হারিয়েছে তার নিজের প্রতি সম্মান, হারিয়েছে ভালোবাসার মূল্য, হারিয়েছে বিবেক। প্রকৃত ভালোবাসা পার্থিব কোন কিছু দিয়ে পরিমাপ করা যায় না, কোন কিছু দ্বারা বিনিময় হয় না, বিনিময় হয় দুটি মনের, দুটি আত্মার। সব সম্পর্ক টিকে থাকুক হিসাব নিকাশের ঊর্ধ্বে এই কামনা করি।……
বিঃ দ্রঃ কোন চরিত্রই কাল্পনিক নয়। These kinda people really exist…...তাই বাস্তবে চরিত্র মিলে যেতে পারে। আর এদের কারণেই বর্তমানে পবিত্র ভালোবাসাকেও কলুষিত বলে ধরা হয়।…..