৫ম বিশ্বকাপ ক্রিকেট (১৯৯২): ফাইনাল ম্যাচ Review...
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
বেনসন অ্যান্ড হেজেস বিশ্বকাপ (১৯৯২)
ফাইনাল
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া, ২৫ মার্চ
পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড
টস: পাকিস্তান
ফলাফল: ২২ রানে পাকিস্তান জয়ী
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: ওয়াসীম আকরাম
আগের পোস্টগুলোঃ
১ম বিশ্বকাপ ক্রিকেট (১৯৭৫): ফাইনাল ম্যাচ Review...
২য় বিশ্বকাপ ক্রিকেট (১৯৭৯): ফাইনাল ম্যাচ Review...
৩য় বিশ্বকাপ ক্রিকেট (১৯৮৩): ফাইনাল ম্যাচ Review...
৪র্থ বিশ্বকাপ ক্রিকেট (১৯৮৭): ফাইনাল ম্যাচ Review...
২৫শে মার্চ, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। এই বিশ্বকাপেই প্রথমবারের মতো তারকারা রঙীন পোশাকে। ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান পরস্পরের মুখোমুখি। দু’দলের দুই সম্মানীয় অধিনায়ক গ্রাহাম গুচ ও ইমরান খান। ‘৯২-এর বিশ্বকাপে অনেকটা ভাগ্যের উপর ভর করেই ফাইনালে এসেছিল পাকিস্তান। সেই সৌভাগ্য ফাইনালেও কম ছিল না, টস থেকেই যার শুরু। আগের বিশ্বকাপ জেতা দলগুলোর সবাই বিশ্বকাপ জয়ের শুরুটা প্রথমে ব্যাটিং নেবার মধ্য দিয়েই সম্পন্ন করেছে, তাই ইমরান যখন ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিল তখন বোধ হয় তাবৎ ক্রিকেট বিশ্ব বুঝে ফেলল যে পাকিস্তান জিতে গেছে।
পাকিস্তান ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামেন বাঁহাতি আমীর সোহেল ও ব্যাটিং ত্রাস রমিজ রাজা। ক্রিস লুইস ও প্রিঙ্গলের নতুন বলের দুর্বার আক্রমনে মারমুখী কোনও আয়োজনের আগেই পঞ্চম ওভারে স্টুয়ার্টের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন আমীর সোহেল। বিপর্যয় এড়াতে আমীরের পর ইমরান নিজেই হাজির হন। নবম ওভারে দলীয় রান যখন ২৪, তখন প্রিঙ্গলের বলে এল.বি.ডব্লিউ হন রমিজ রাজা। অবধারিতভাবেই ক্রিজে আসেন জাভেদ মিয়াদাদ।
ইমরানের রান যখন ৯, তখন গুচ স্কয়ার লেগ থেকে ছুটে এসে মিড উইকেটে তুলে দেয়া ইমরানের একটি ক্যাচ হাতে নিয়ে ফেলে দিলে সর্বপ্রথম ইংল্যান্ড-ট্রাজেডির সৃষ্টি হয়। তারপরেও ইমরান যথাক্রমে লুইস, প্রিঙ্গল, বোথাম, ডিফ্রেইটাস, ইলিংয়ার্থ, রিভ প্রায় সব ইংলিশ বোলারদের হাত থেকে অবিরত ধারায় জীবন পেতে থাকেন। তখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ ফাইনালের একমাত্র ছয় ইমরানই মেরেছিল।
৪০ ওভারের সময় জাভেদ মিয়াদাদের রান যখন ৫৮, তখন রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোথামের হাতে ধরা পড়েন মিয়াদাদ।
ইমরানের সঙ্গে হাল ধরতে আসেন ইনজামাম-উল হক। দ্রুত ১১ বলে ৪টি চার মেরে ২৫ রান তুলে গ্যালারী মাতিয়ে তোলেন ইনজি।
এর মধ্যে ১১০ বল খেলে ইমরান বিদায় নেয় দলীয় সর্বোচ্চ ৭০ রান করে। এরপর ক্রিজে আসেন ফাইনালের যাদুকর ওয়াসীম আকরাম। শেষ পর্যন্ত ইনজামাম ৩৫ বলে ৪২ রান করে দলকে পাহাড়ের চূড়ায় তুলে খেলার ১ বল বাকি থাকতে প্রিঙ্গলের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। আকরাম ততক্ষণে ঝড়ের বেগে ১৮ বলে ৩২ রান তুলে ফেলেছেন। সেলিম মালিক শেষ বল খেলতে এলে, ঐ বলেই আকরামের রান আউটের মাধ্যমে পাকিস্তান ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটে। রান ২৪৯।
ইংল্যান্ড-ট্রাজেডি আরও করুণ হলো, যখন তাদের অন্যতম ব্যাটিং ভরসা বোথাম খালি হাতে ফিরে গেলেন তৃতীয় ওভারে আকরামের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে।
এলেন স্টুয়ার্ট। দলীয় ২১ রানে, তিনিও বিদায় নিলেন আকিব জাভেদের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে।
গ্রায়েম হিক এসে হাল ধরবেন এমন প্রত্যাশা থাকলেও ছোবল এল মুশতাকের কাছ থেকে। নিজস্ব ১৭ রানের মাথায় মুশতাকের গুগলি হিকের পায়ে আঘাত করলে আম্পায়ার ডান হাতে ঈশ্বরকে দেখিয়ে দিলেন।
ইংল্যান্ডের এই ঘনঘন মৃত্যু ঘন্টায় হাল ধরলেন ফেয়ারব্রাদার, উপযুক্ত সঙ্গী পেলেন ল্যাম্বকে। খেলায় দু’দলই উত্তেজনা ফিরে পেল। ইমরান এসময় বল তুলে দিলেন আকরামের হাতে। আকরাম নিজস্ব ৬ষ্ঠ ওভারের ৫ম বলে লেগ কাটারে ল্যাম্বের অফ স্ট্যাম্প হাওয়া করে দিলেন। পরের বলেই দুরন্ত একটি ইনসুইংগারে ক্রিস লুইসেরও মিডল স্ট্যাম্প উধাও করে দেন।
এরপর আকিবের বলে মঈন খানের হাতে ধরা পড়েন ফেয়ারব্রাদার। তবুও তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে অন্যতম ভরসার কাজটি করে গেছেন। ৭০ বলে ৬২ রান, যা দলীয় সর্বোচ্চ।
এরপর মুশতাকের বলে ডারমট রীভের ক্যাচ লুফে নেন রমিজ রাজা। সেলিম মালিকের থ্রোতে ইংল্যান্ডের নবম উইকেট হিসেবে ডিফ্রেইটাস রান আউট হলে পাকিস্তানের বিজয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। রান তখন ২০৮। এরপর দলীয় ২২৭ রানের মাথায় ইনিংসের ৪ বল বাকি থাকতে ইমরানের বলে শেষ ইংলিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে ইলিংওয়ার্থ রমিজের হাতে ধরা পড়েন।
ইংল্যান্ডের কাউকেই খারাপ খেলোয়াড় বলা যায় না, তবুও পাকিস্তান যে দৃঢ়তা নিয়ে তাদেরকে রুখে দিয়েছে তা প্রশংসনীয়।
সবই বোধ হয় ইমরান খানের যাদু...
ইউটিউব ভিডিওঃ
সৌজন্যেঃ খেলার ভুবন
আসছে... ৬ষ্ঠ বিশ্বকাপ ক্রিকেট (১৯৯৬): ফাইনাল ম্যাচ Review...
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ধর্ম ও বিজ্ঞান
করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন
তালগোল
তুমি যাও চলে
আমি যাই গলে
চলে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফুরালেই দিনের আলোয় ফর্সা
ঘুরেঘুরে ফিরেতো আসে, আসেতো ফিরে
তুমি চলে যাও, তুমি চলে যাও, আমাকে ঘিরে
জড়ায়ে মোহ বাতাসে মদির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন
মা
মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।
অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।
একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে
ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন