বিদ্যৎ কুইক রেন্টাল ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া :
জাতিয় সংসদ ভবনে সম্প্রতি বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদিয় স্থায়ি কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয় থেকে জানানো হয়, সরকারি বেসরকারি ৯০ টি কেন্দ্রকে –
গত জুলাই ২০২১ খৃ: থেকে মার্চ ২০২২ খৃ: ০৯ মাসে সরকার “ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া” দিয়েছে ১৬,৭৮৫ (ষোলো হাজার সাত শত পচাশি) কোটি টাকা –
সে হিসেবে প্রতি মাসে গড়ে সরকার “ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া” দিয়েছে প্রায় ১,৮৬৫ (এক হাজার আট শত পয়ষট্টি) কোটি টাকা –
অনেক সময় কোনো কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে অলস বসিয়ে রেখে সরকারকে “ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া” দিতে হয়েছে বলে সমালোচনা রয়েছে –
বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, দেশে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশি –
সে কারণে “ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া” বাবদ সরকারকে অনেক বেশি ব্যয় করতে হোচ্ছে, যা অহেতুক –
বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়ের হিসাব মতে ‘‘সরকারি কোম্পানিগুলোকে’’ গত জুলাই ২০২১ খৃ: থেকে মার্চ ২০২২ খৃ: ০৯ মাসে সরকার
‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ দিয়েছে ৩,৮৮৭ (তিন হাজার আট শত সাতাশি) কোটি টাকার মতো –
প্রায় ১২,৯০০ (বারো হাজার নয় শত) কোটি টাকা ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ দিয়েছে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে –
এর মধ্যে ‘‘ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার’’ (I.P.P) ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (রেন্টাল, কুইক রেন্টাল) ও আমদানি করা বিদ্যুৎ রয়েছে –
বর্তমানে ভারত থেকে ১,১৬০ (অ্যাক হাজার অ্যাক শত ষাট) মেগাওয়াট আমদানি করে বাংলাদেশ –
এ বিদ্যুৎ আমদানি ব্যয়ের ৪০% ব্যয় হয় ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ বাবদ –
শিতকালে যখন বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়, তখোন আমদানিও কমে যায় –
বিদ্যুৎ কম এলেও ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ দিতে হয় –
বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়ের তথ্য মতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে ২০২০- ২১ অর্থ বছরে ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ দিতে হয়েছে ১৮,৯৭৭ (আঠারো হাজার নয় শত সাতাত্তর) কোটি টাকার বেশি-
তার আগের বছরে ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ দিতে হয়েছিলো ১৮,১২৩ (আঠারো হাজার অ্যাক শত তেইশ) কোটি টাকার মতো –
গত ০৩ বছরে মোট ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ দিতে হয়েছে ৫৩,৮৮৫ (তেপ্পান্ন হাজার আট শত পচাশি) কোটি টাকা –
অথচ ‘‘পদ্মা সেতুতে’’ খরচ হয়েছে ৩০,১৯৩ (তিরিশ হাজার অ্যাক শত তেরানব্বই) কোটি টাকা –
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ দেয়া হয় ২১,৩৯৬ (অ্যাকুশ হাজার তিন শত ছিয়ানব্বই) মেগাওয়াট বিদ্যুতের হিসাবে –
কিন্তু গত এপ্রিলে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হোয়েছিলো ১৪,৭৮২ (চৌদ্দ হাজার সাত শত বেরাশি) মেগাওয়াট –
বর্তমানে উৎপাদিত হয় কম বেশি ১৩,০০০ (তেরো হাজার) মেগাওয়াট –
কিন্তু ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ দিতে হয় সমানই –
২০১৫ খৃ: ভারতের প্রধানমন্ত্রি নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় ‘ঝাড়খন্ড’ প্রদেশে “আদানি গোড্ডা কোল পাওয়ার প্লান্ট”” ১,৬০০ (অ্যাক হাজার ছয় শত) মেগাওয়াটের অ্যাকটি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে – যার বেশির ভাগ বাংলাদেশে রপ্তানি হবে –
পি. ডি. বি. র তথ্য অনুসারে এ কেন্দ্রটি আগস্ট ২০২২ খৃ: উৎপাদনে যাবে –
কিন্তু এর সঞ্চালন লাইন এখনো প্রস্তুত নয় – ডিসেম্বরের আগে কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই –
ফলে বিদ্যৎ পাওয়ার আগেই ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ গোনা শুরু হবে –
“আদানি গোড্ডা কোল পাওয়ার প্লান্ট : অ্যান একিলিসিস হিল অব দ্যা পাওয়ার সেক্টর অব বাংলাদেশ” শির্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছে,
কেন্দ্রটির ডিসেম্বর পর্যন্ত ০৪ মাসের ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ দিতে হবে ১৪১.১ মিলিয়ন ডলার বা ১,২১৯ (অ্যাক হাজার দুই শত উনিশ) কোটি টাকা –
কেরানিগঞ্জ পানগাঁওয়ের এ. পি. আর. এনার্জি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষমতা ৩০০ (তিন শত) মেগাওয়াট –
২০১৯ – ২০ অর্থ বছরে কেন্দ্রটি (কেরানিগঞ্জ পানগাঁওয়ের এ. পি. আর. এনার্জি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের) থেকে মাত্র ৩৪ লাখ ৪৮ হাজার কিলোওয়াট ঘন্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়-
যা সক্ষমতার ০১ % শত্ংশের কম –
সে সময়ে কেন্দ্রটিকে ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ দিতে হয়েছে ৫৩২ কোটি ৯১ লাখ টাকা –
ফলে আই. পি. পি. কেন্দ্রটির প্রতি ইউনিট উৎপাদন ব্যয় পড়ে ১,৫৭৯.৫৭ (অ্যাক হাজার পাঁচ শত উনাশি টাকা সাতান্ন পয়সা) – যা দেশে সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়ে –
২০২০ – ২১ অর্থ বছরের কেরানিগঞ্জ পানগাঁওয়ের এ. পি. আর. এনার্জি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ০৭ কোটি ৭২ লাখ ইউনিট উৎপাদন করায় প্রতি ইউনিটের খরচ পড়ছে ৮৯ (উননব্বই) টাকা-
এ অর্থ বছরে (২০২০ – ২১) সব চেয়ে বেশি দাম পড়েছে ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার ‘‘সিরাজগঞ্জের প্যরামাউন্ট বিটাক এনার্জি লিমিটেড’’ উৎপাদিত বিদ্যুতের –
প্রতি ইউনিটের দাম পড়েছে ১৮০ টাকা –
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতার ৪০ থেকে ৪৮ ভাগ গড়ে অব্যবহৃত থাকে –
কিন্তু তাদের ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ দিতে হয় –
বাংলদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এক্সটারনাল ডেবট বা B.W.G.E.D. গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে ৬,৫০০ (ছয় হাজার পাঁচ শত) মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন শির্ষ ১২ টি কোম্পানি ৮,০০০ (আট হাজার ) কোটি টাকার বেশি ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ আদায় করেছে –
যা ২০২০ – ২১ অর্থ বছরের প্রদত্ত মোট ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ ৬৬.৪ % (শতাংশ) –
এ তালিকায় রয়েছে দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ি গ্রুপ –
জ্বালানি সংকটের কারণে ০৭ টি ডিজেল চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে –
কিন্তু এ ০৭ কেন্দ্রেকে বসিয়ে রেখে ‘‘ক্যাপসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া’’ বাবদ মাসে পরিশোধ করতে হবে ১৭৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা –
এ ০৭ টির মধ্যে ০১ টি সরকারি ও ০৬ টি বেসকারি বলে জানিয়েছে ‘‘বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (P.D.B.) –
(সুত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৪ জুলাই, রোববার,)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:০৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




