কাম,ক্রোধ, এবং লোভ এই তিনটি অশান্তি রুপ নরকের দ্বার স্বরুপ। উত্তম প্রক্রিয়ায় জ্ঞান ইন্দ্রিয় সংযত ব্যতিত এই দুর্দান্ত ও দুর্জ্জয় রিপু ত্রয়কে পরাজিত করা সম্ভব না। কারণ শরীরস্থ প্রাণ বায়ু স্থান ও কর্মভেদে ঊনপঞ্চাশ বায়ুর আখ্যা ধারণ করে পঞ্চভূতে গঠিত এই দেহকে পরিচালিত করছে। তারই গতি বিশেষে এই রিপু সমূহ সমুদ্ভুত হচ্ছে।
সুতারাং উত্তম প্রক্রিয়ায় বা উপায়ে প্রাণের ঐ সকল গতিকে ফিরিয়ে প্রাণকে যথাস্থানে স্থির করে রাখতে পারলে দেহস্থিত রিপুত্রয়াদিকে জয় করা সম্ভব। কাম অর্থাৎ নিজ মনে যে সকল কামনা উদয় হয় তাকেই কাম বলে। কেবলমাত্র আত্মরাজ্যের প্রতিষ্ঠার সংকল্প থাকলে বা অকামের ভাব দ্বারা বা সৎ কাম পোষণে তা দুর করা যায়। এছাড়া কামকে দমনের আর কোন উপায় নেই।
ক্রোধ অর্থাৎ কুপিত ভাব, ক্রোধের উৎপত্তি রজোগুণ হতে। এর প্রকাশে লোভ সৃষ্টি হতে পারে অর্থাৎ রজোগুণের আর্বিভাবে বিষয় প্রাপ্তির লোভ বশতঃ ক্রোধের উৎপক্তি হয়ে থাকে। এই ক্রোধই মানবকে হিতাহিত জ্ঞানশুণ্য করে সম্যকরুপে মোহ গ্রস্ত করে থাকে। সর্বদা নিজেকে অণু বা ক্ষুদ্র বোধ দ্বারা এই ক্রোধকে জয় করতে হবে এবং হিংসা দমনের দ্বারাও ক্রোধকে দমিত করতে হবে। হিংসা রহিত যে ক্রোধ তা ক্রোধের মধ্যেই গণ্য।
লোভ অর্থাৎ মনের যে বৃত্তি দ্বারা পরের দ্রবাদি গ্রহণ করিবার অভিলাষ বা ইচ্ছে জাগে তাকে লোভ বলে। এই লোভকে সন্তোষের দ্বারা দমন করতে হবে। অর্থাৎ অন্তরে সর্বদা সন্তোষ ভাব রেখে সকল অবস্থাতেই সন্ত্তষ্ট থাকার চেষ্টা দ্বারা লোভকে জয় করতে হবে।
কাম, ক্রোধ ও লোভ ইহারা আত্মার নাশক। কেননা কোন বিষয়ে প্রাপ্তির ইচ্ছে হতে কামের উদয় হলে তা প্রাপ্তির জন্য লোভ সৃষ্টি হয়, লোভ পুরণের কোনরুপ ব্যতিক্রম হলেই ক্রোধের উদয় হয়। এই ক্রোধে দ্বারা হিতাহিত জ্ঞান শুণ্য হয়ে জীব নিজেকে বা অন্যকে নিঃশেষ পর্যন্ত করে ফেলে। এই ভাবে এই রিপুত্রয় জীবকে হিতাহিত জ্ঞানহারা করে বলে এরা আত্মরাজ্যের পরম শক্র। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫১