somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চীনের ধনীরা কৌশলে "একসন্তান নীতি" ফাঁকি দিচ্ছেন (জনসংখ্যা-১০)

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ ভোর ৫:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাও আমিন
চীনের একজন জনপ্রিয় গায়ক মাও আমিন। তাঁর তিন বছর বয়সের একটি মেয়ে আছে। গত বছর তিনি একটি ছেলেরও মা হয়েছেন। খবরটি অনেকের কাছেই খুব আনন্দের। কিন্তু খুশির এ খবরটি চায়নার কমিউনিস্ট পার্টির মেম্বারদের মোটেও খুশি করতে পারেনি। তারা জানান, মাও এখনো দুটি সন্তান নেয়ার মতো যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন নি। শুধু তাই নয় কিভাবে আইনের ফাঁক দিয়ে তিনি দ্বিতীয় সন্তান নিলেন এ বিষয়টি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা
সরকারিভাবে চীনে শহরের অধিবাসীরা একটির বেশি সন্তান নিতে পারেন না এবং গ্রামাঞ্চলের অধিবাসীরা প্রথম সন্তান মেয়ে হলে প্রয়োজনে একাধিক সন্তান নিতে পারেন। তবে এ জন্য সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হয়।
মাও আমিনের এ সন্তান জন্মের ঘটনাটি চীনের জনসংখ্যা নীতিকে ব্যাপক প্রশ্নের মুখোমুখি দাড় করিয়ে দিয়েছে। চীনের প্রভাবশালী পত্রিকা চায়না ডেইলি প্রশ্ন তুলেছে, এক সন্তাননীতি কি শুধু ধনীদের জন্য, নাকি চীন এক সন্তাননীতি থেকে সরে এসেছে? কমিউনিস্ট চীনের জন্য ধনী-গরীবের বৈষম্যের এ অভিযোগ অতি গুরুতর অবশ্যই। চীনের এলিটদের জন্য জনসংখ্যা নীতির কিছু ফাক-ফোকর আছে যার সাহায্যে ধনী কিংবা প্রভাবশালীরা এই আইন ফাকি দেয় বলে পত্রিকাটি জানায়।
যাকে নিয়ে এতো আলোচনা সেই গায়ক মাও-এর মুখপাত্র চেন কি সাংবাদিকদের জানান, মাও সব সময়ই সরকারের নীতির বিষয়ে সচেতন। কিন্তু কোন আইনের মাধ্যমে তার সন্তান সম্ভব হলো তা জানাতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। তবে চায়নিজ মিডিয়া জানায়, তিনি সম্ভবত বড় অঙ্কের একটি জরিমানা দিয়ে তার দ্বিতীয় সন্তান নেয়াকে বৈধ করেছেন।
চীনের জনপ্রিয় একটি ইন্টারনেট ওয়েবসাইট জানায়, একজন ধনী শিল্পপতি প্রায় ছয় হাজার ডলার জরিমানা দিয়ে দ্বিতীয় সন্তান নেয়ার অনুমতি নিয়েছেন। এছাড়াও আইনের আরো কিছু ফাক রয়েছে। যেমন ধনীরা বিদেশি চায়নিজ হিসেবে নিজেদের রেজিস্ট্রেশন করতে পারে। এর ফলে তারা মালয়শিয়া কিংবা দেশের বাইরের কোনো স্থানে গিয়ে সন্তান জন্ম দেয়।
তবে চীনের গরিবদের জন্য পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এক সন্তাননীতি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করায় চীন সরকার আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার সম্মুখীন। চীন সরকার অনেক ক্ষেত্রেই জোরপূর্বক গর্ভপাত এবং বাধ্যতামূলক বন্ধ্যাকরণ করে থাকে। বিদেশে চীনের কঠোর জনসংখ্যা নীতিকে সরকার এবং কমিউনিস্ট পার্টির বিপুল ক্ষমতা এবং শক্তির প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়।
চায়নিজ মিডিয়াগুলোর এ ধরনের সমালোচনার মুখে কমিউনিস্ট পার্টির নীতিনির্ধারকরা তাদের জনসংখ্যা নীতি নতুন করে বিশ্লেষণ করছেন। চীনের প্রধান মন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও গত বছর স্বীকার করেছেন যে, গ্রামাঞ্চলে জন্মহার কম রাখা নিষ্ঠুরতার শামিল। চীনের নীতিনির্ধারকরা জনসংখ্যার বয়স্ক অংশের বৃদ্ধি নিয়েও চিন্তিত। বিশেষ করে জন্মহার কমে আসায় চীনের তরুণ জনগোষ্ঠী কমে যাচ্ছে এবং বেশিরভাগ মানুষ বৃদ্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এক সন্তান নীতি ও কঠোর আইনের পরেও চীনের জনসংখ্যা বাড়ছে (যদিও বৃদ্ধির হার আগের তুলনায় অনেক কম)। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান মতে, ২০২৫ সাল পর্যন্ত চীনের জনসংখ্যা বাড়বে এবং তা ১.৪৮ বিলিয়নে পৌছাবে। ২০৫০ সাল নাগাদ চীনে ২০ বছর বয়সের নিচের জনসংখ্যার তুলনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সের জনসংখ্যা হবে দ্বিগুণ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ ভোর ৬:২৩
১০টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×