somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম যার যার, ধর্মীয় উৎসবও যার যার, সবার নয়

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আশ্চর্য্যজনকভাবে আজকাল খুব জোরেসোরে শোনা যায় ধর্ম যার যার উৎসব সবার। গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে আজ আমরা সবাই এই কথা বলছি। আসলেই কি এর কোন ভিত্তি আছে।
ধরা যাক মুসলমানদের কুরবানীর ঈদ। এখন কোন হিন্দু কি এই উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পারবে। তাহলে কিভাবে এই উৎসব সবার হল।
ধর্ম যার যার, ধর্মীয় উৎসবও যার যার, সবার নয়। ধর্মীয় ও সম্প্রদায়গত উৎসব বা পূজা-পার্বণের অনুষঙ্গ হিসাবে যে উৎসব তা সকলের হয় কী করে? তাছাড়া যে অসাম্প্রদায়িক উৎসবেও শরীয়তবিরোধী নাচ-গান, নারী-পুরুষ সম্মিলিত হৈ-হুল্লোড়, নানারকম অপসংস্কৃতি, কুসংস্কার, অপচয়, ইসলামী ভাবধারা বিরোধী কর্মকা-, আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন হওয়া, পাক-নাপাকির তোয়াক্কা না করে নামাজ ক্বাজা বা পরিত্যাগ করার সংযোগ থাকে সে উৎসবে যোগদানও মুসলমানের জন্য সমীচীন নয়। ধর্মীয় উৎসবে তো প্রশ্নই উঠে না। নবী করিম (সা.) বলেছেন, যারা অপর সম্প্রদায়ের অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণ করবে তারা তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।
ঈদের আনন্দে অমুসলিমদেরও শামিল করা যায়। শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। কিন্তু কেউ ঈমান না আনা পর্যন্ত সে মুসলমানদের কাতারে শামিল হয়ে ইবাদত করতে পারে না। ঠিক তেমনি অমুসলিমদের সামাজিক আনন্দে যুক্ত হওয়া যায়, কিন্তু তাদের দেব-দেবীর প্রতি বিশ্বাস ও ভক্তি স্থাপন বা পূজা-অর্চনা করে মুসলমান থাকা যায় না। মুসলমানদের একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। একমাত্র তার উপরই ভরসা করতে হবে। সাহায্য কেবল তারই নিকট প্রার্থনা করতে হবে। শিক্ষা স্বাস্থ্য সম্পদ সন্তান সুখ শান্তি নিরাপত্তা ইত্যাদি সবই কেবল তিনিই দিয়ে থাকেন। অন্য কেউ নয়। এতে আর কেউ শরিক নেই। কোন সৃষ্টজীবের উপাসনা করা মুসলমানের জন্য এক মুহূর্তের জন্যও জায়েজ নেই। এটা শিরক। মুসলমান থাকতে চাইলে আল্লাহ ছাড়া আর কারো পূজা-অর্চনা করা যাবে না। অমুসলিমদের উপাসনায় দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা আর্থিক কোনভাবেই অংশ নেয়া যাবে না। যদিও মানবিক দিক বিচারে তাদের সাথে উত্তম আচরণ ও সামাজিকতা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।
সকল ধর্মের নাগরিকদের সাথে সদাচরণ মুসলমানের দায়িত্ব। তাদের জীবন, সম্পদ, সম্মান ও সার্বিক স্বস্তি বজায় রাখা মুসলমানদের ঈমানী কর্তব্য। বিশেষ করে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পূজা-পার্বণ বা ধর্মীয় কর্মকান্ড নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা মুসলমানদের দায়িত্ব। কোন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় মুসলমানদের জীবন দিয়ে হলেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে। এটিই শরীয়তের বিধান।
নবী করিম (সা.) বলেছেন, মুসলিম সমাজ ও রাষ্ট্রে যদি কোন অমুসলিম নির্যাতিত হয় তাহলে রোজ হাশরের দিন আমি মুহাম্মদ (সা.) স্বয়ং অমুসলিমদের পক্ষ নিয়ে অত্যাচারী মুসলমানদের বিরুদ্ধে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদী হব। (আল-হাদীস) আল্লাহর নবী (সা.) এর এমন কঠোর নির্দেশ ও সতর্ক বাণীর ফলে কোন ধর্মপ্রাণ মুসলমানই সাম্প্রদায়িক হন না। শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের এই দেশে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য ও প্রবাদপ্রতিম সম্প্রীতি মহানবী (সা.) এর শিক্ষা ও আদর্শেরই প্রতিফলন। যেসব পাপী ও অবাধ্য মানুষ মুসলমান নামধারী হয়েও ক্ষমতা ও রাজনীতির হীণ স্বার্থে অমুসলিমদের উপর নির্যাতন করে দুনিয়াতে তারা মানুষের চোখকে ফাঁকি দিতে পারলেও শেষ বিচারের দিন কঠিন সাজার সম্মুখীন হবে।
মুসলমানরা এক আল্লাহর ইবাদত করেন। তারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করেন না। কোন সৃষ্টজীবের পূজা-অর্চনা করা মুসলমানের জন্য শিরক। অন্য কোন ধর্মের অনুসারীদের মত উপাসনা, আরাধনা করা মুসলমানের জন্য অবৈধ, হারাম ও কঠিন গুনাহের কাজ। এতে মুসলমানরা ঈমানহারা হতে বাধ্য। কোন মুসলমানই অন্য কোন ধর্মের দেব-দেবী বা উপাস্য বস্তুর ইবাদত করতে পারেন না। কেননা, ইসলামের মতে আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নাই। মুসলমানের বিশ্বাসও এটিই। তাই অমুসলিমদের পূজা-অর্চনা ও ধর্মীয় কার্যক্রমে কোন মুসলমানের অংশগ্রহণ জায়েজ নেই। দৈহিক, আর্থিক, মানসিক বা অন্য যে কোন অংশগ্রহণই নিষিদ্ধ। অন্য ধর্মের পূজা-অর্চনার অনুরূপ বা অনুষঙ্গ স্বরূপ কোন সাংস্কৃতিক কর্মকা-েও মুসলমানের অংশগ্রহণ তাদের ঈমানের জনক্ষতিকর। পূজা-অর্চনা সংশ্লিষ্ট সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণও তদ্রুপ ঈমানের জন্য ক্ষতিকর। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে মুসলমান অন্য সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব-পার্বণের সমাবেশকে সমৃদ্ধ করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। পূজায় অর্থ সাহায্য, চাঁদা প্রদান, দর্শন, উপস্থিতি ইত্যাদি সবই নিষিদ্ধ হওয়ার কথাই এ হাদীসে বলা হয়েছে।
মুসলিম রাষ্ট্র যখন দায়িত্ব দেবে তখন মুসলিম কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা রক্ষীরা অমুসলিমদের নিরাপত্তা ও পূজা-ব্যবস্থাপনায় অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উপাসনা তথা শিরকের প্রতি তাদের আদর্শিক বৈপরীত্য বজায় থাকতে হবে। অমুসলিমদের পূজা-পার্বণের দিকে বিশ্বাসগত নমনীয়তা বা আন্তরিকতার কোন অবকাশ নেই। এটা ঈমানের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর।
অনেককেই বলতে শোনা যায়, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এ কথাটি কি সর্বাংশে ঠিক? এ প্রশ্নের জবাবে দীনি পরামর্শ কেন্দ্র ফতওয়া বোর্ড জানায়, ধর্ম যার যার, ধর্মীয় উৎসবও যার যার, সবার নয়। ধর্মীয় ও সম্প্রদায়গত উৎসব বা পূজা-পার্বণের অনুষঙ্গ হিসাবে যে উৎসব তা সকলের হয় কী করে? তাছাড়া যে অসাম্প্রদায়িক উৎসবেও শরীয়তবিরোধী নাচ-গান, নারী-পুরুষ সম্মিলিত হৈ-হুল্লোড়, নানারকম অপসংস্কৃতি, কুসংস্কার, অপচয়, ইসলামী ভাবধারা বিরোধী কর্মকা-, আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন হওয়া, পাক-নাপাকির তোয়াক্কা না করে নামাজ ক্বাজা বা পরিত্যাগ করার সংযোগ থাকে সে উৎসবে যোগদানও মুসলমানের জন্য সমীচীন নয়। ধর্মীয় উৎসবে তো প্রশ্নই উঠে না। নবী করিম (সা.) বলেছেন, যারা অপর সম্প্রদায়ের অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণ করবে তারা তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।
ঈদের আনন্দে অমুসলিমদেরও শামিল করা যায়। শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। কিন্তু কেউ ঈমান না আনা পর্যন্ত সে মুসলমানদের কাতারে শামিল হয়ে ইবাদত করতে পারে না। ঠিক তেমনি অমুসলিমদের সামাজিক আনন্দে য্ক্তু হওয়া যায়, কিন্তু তাদের দেব-দেবীর প্রতি বিশ্বাস ও ভক্তি স্থাপন বা পূজা-অর্চনা করে মুসলমান থাকা যায় না। মুসলমানদের একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। একমাত্র তার উপরই ভরসা করতে হবে। সাহায্য কেবল তারই নিকট প্রার্থনা করতে হবে। শিক্ষা স্বাস্থ্য সম্পদ সন্তান সুখ শান্তি নিরাপত্তা ইত্যাদি সবই কেবল তিনিই দিয়ে থাকেন। অন্য কেউ নয়। এতে আর কেউ শরিক নেই। কোন সৃষ্টজীবের উপাসনা করা মুসলমানের জন্য এক মুহূর্তের জন্যও জায়েজ নেই। এটা শিরক। মুসলমান থাকতে চাইলে আল্লাহ ছাড়া আর কারো পূজা-অর্চনা করা যাবে না। অমুসলিমদের উপাসনায় দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা আর্থিক কোনভাবেই অংশ নেয়া যাবে না। যদিও মানবিক দিক বিচারে তাদের সাথে উত্তম আচরণ ও সামাজিকতা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।
আল্লাহ সকল মুসলমানকে প্রকৃত ঈমানী বোধ ও চেতনা দান করুন।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:৫৯
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×