নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে এবার আরেকটি প্রতিষ্ঠানের নামে আনা বিদেশি অনুদানের টাকা অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের অভিযোগ উঠেছে। এ দফায় তিনি সৌরশক্তি উৎপাদন প্রকল্প গ্রামীণ শক্তি তহবিল থেকে ৬০০ কোটি টাকা স্থানান্তর করেছেন গ্রামীণ শক্তি দধি প্রকল্প ও গ্রামীণ ভিউলিয়া ওয়াটার প্রকল্প নামে দুটি প্রতিষ্ঠানে।
নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রামাণ্যচিত্র ও গ্রামীণ ব্যাংকের নির্বাহী পদ থেকে পদত্যাগ বিষয়ে ড. ইউনূসকে নিয়ে যখন বিতর্ক
চলছে, ঠিক তখন তাঁর বিরুদ্ধে নতুন এ অভিযোগটি উঠল। সরকারের একাধিক সংস্থা এরই মধ্যে এসব অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন এনজিও ও বেসরকারি সংস্থার নামে পাওয়া বিদেশি অর্থের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে থাকে ইনফ্রাসট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কম্পানি লি. (ইটকল)। ইআরডি সচিবকে চেয়ারম্যান করে সংস্থাটি গঠিত। নিয়ম অনুযায়ী সংস্থাটি অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো গ্রামীণ ব্যাংক ও এর সহযোগী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নামে আসা অর্থের অনুমোদন দিয়ে থাকে। ইআরডি সূত্র জানায়, এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেশের চরাঞ্চল ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে সৌরশক্তি চালু করতে গ্রামীণ শক্তি ৬০০ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রাপ্ত অর্থের পুরোটাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিদ্যুৎ সংকট মেটাতে সৌরশক্তি উৎপাদনের কাজে ব্যবহারের কথা। কিন্তু গ্রামীণ শক্তি এ ক্ষেত্রে তা করেনি। তারা প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার ড. ইউনূসের নির্দেশে সৌরশক্তির অর্থ স্থানান্তর করে সামাজিক ব্যবসায় সম্পৃক্ত অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে গ্রামীণ শক্তি দধি প্রকল্প ও গ্রামীণ ভিউলিয়া ওয়াটার প্রকল্প। এর মধ্যে গ্রামীণ ভিউলিয়া ওয়াটার প্রকল্প জয়েন্ট স্টক কম্পানি থেকে কোনো ধরনের অনুমোদন নেয়নি। গ্রামীণ শক্তি দধি প্রকল্পেরও বাৎসরিক হিসাব-নিকাশ সঠিকভাবে কম্পানি আইন অনুযায়ী হচ্ছে না বলে অভিযোগ আছে।
জানা গেছে, অর্থ স্থানান্তরের এই তথ্য জেনে ইআরডির কর্মকর্তারা বিস্মিত। এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ড. ইউনূস ফোন ধরেননি। গ্রামীণ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. শাহজাহান এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সূত্র মতে, সরকারের একাধিক সংস্থা গ্রামীণ ব্যাংকের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে বেশ কিছু অনিয়মের সন্ধান পেয়েছে। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে ভর্তুকি হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংককে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে আসছে নরওয়ে, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইডিবিসহ অনেক দেশ ও সংস্থা। প্রাথমিকভাবে সবাই গ্রামীণ ব্যাংকের দারিদ্র্য বিমোচনসহ বিভিন্ন কাজের প্রশংসা করলেও এখন এসব প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নোবেল লাভের পর তিনি অনেক নিয়ম-নীতি মেনে চলছেন না। এমনকি আগের নিয়মগুলোও তিনি ভেঙে ফেলছেন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। এই সময় প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টা তাঁর ব্যক্তিগত বন্ধু ছিলেন। কোনো জবাবদিহিতা ছিল না বলেই তিনি তখন যা খুশি তাই করেছেন। বর্তমানে তাঁর কার্যক্রমের ওপর মনিটরিং বাড়ায় একের পর এক বেরিয়ে আসছে অনিয়মের গোপন তথ্য।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




