somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বজিতকে কুপিয়ে হত্যা : পুলিশ ও সাংবাদিকের দায়বদ্ধতা

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দিনের বেলা প্রকাশ্যে পুরান ঢাকায় নিরীহ টেইলারিং কারিগর বিশ্বজিৎ দাসকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীরা। মিডিয়ার কল্যাণে দেশবাসী দেখেছেন সে নৃশংস হত্যাকাণ্ড। সারা দেশে এ ঘটনায় শুরু হয় তোলপাড়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের কর্তাব্যক্তিরা এ ঘটনার দায় নিজেদের দলের নয় বললেও অনেকটা জনগণের সেন্টিমেন্টের কথা চিন্তা করে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে মাঠে নামে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এরই মধ্যে মূল হত্যাকরীসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছ।
বিশ্বজিতসহ বিভন্ন সময় নৃশংসভবে মানুষ হত্যার ঘনার চিত্র দেখে মনে হয় আমরা কি আসলেই সভ্য? না কি চরম বর্বর যুগে আমরা বাস করছি?

পুলিশের দায়বদ্ধতা : বিশ্বজিতকে যখন শেষবারের মতো চাপাতি দিয়ে কোপায় খুনীরা তখন হাত দুয়েক দূরত্বেই ছিল পুলিশ। অথচ পুলিশের বিরুদ্ধেএ ধরনের দায়িত্বে অবহেলা এবং অপরাধের অভিযোগ থাকলেও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় না। বরং অঘটন ঘটিয়ে আলোচনায় এলেই জোটে পদোন্নতি। এমনটাই এখন পুলিশের সংস্কৃতি। জনগণের নিরাপত্তা দেয়াই যাদের প্রধান কাজ সেখানে চোখের সামনে খুন হলেও বিশেষ কারণে তারা থাকেন নিশ্চুপ। আবার নিজেদের সুবিধা প্রাপ্তির সম্ভাবনা থাকলে কাউকে ধরে জজ মিয়া বানাতেও দ্বিধা করে না। তবে পুলিশ বিভাগে ভালো লোকও রয়েছেন।

৯ ডিসেম্বর অবরোধের দিন পুলিশ-সাংবাদিক-ছাত্রলীগ এবং সাধারণ মানুষের সামনে বিশ্বজিতের খুনের সময় লালবাগ জোনের ডিসি হারুন উর রশীদ সেখানেই ফোর্স নিয়ে দাঁড়িয়ে খুনের দৃশ্য দেখছিলেন। নিরপরাধ ছেলেটির শরীর দিয়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরার এ করুণ দৃশ্য দেখেও তিনি এগিয়ে গিয়ে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাত থেকে রক্ষা করেননি বিশ্বজিতকে। বিশ্বজিৎ চিৎকার করে তাকে রক্ষার আবেদন করলেও তারা এগিয়ে আসেনি। এক পর্যায়ে হামলাকারীদের হাত থেকে ছুটে দৌড়ে যাচ্ছিলেন পুলিশের দিকে। পুলিশের কাছ থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরত্বে থাকতেই পুলিশের পাশে অবস্থান নেয়া ছাত্রলীগের খুনীদের আরেকটি দল চাপাতি ও লোহার রড হাতে ধাওয়া দেয়। কিন্তু বিশ্বজিতের চিৎকারে কোনো কর্ণপাতই করেননি পুলিশের ওই কর্তা ও অন্যরা। দাঁড়িয়ে থেকে ডিসি হারুনসহ পুলিশের অন্তত ৩০ সদস্য এ দৃশ্য দেখতে থাকেন। খুনিদের প্রতিহত করতে এবং বিশ্বজিতকে রক্ষায় এগিয়ে আসেননি কেউ। তাদের সামনেই প্রায় ১০-১২ মিনিট ধরে ছাত্রলীগের ক্যাডার খুনিরা বিশ্বজিতকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে, লোহার রড দিয়ে খুচিয়ে এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে নৃশংস ও বর্বরভাবে হত্যা করে বীরদর্পে চলে যায়। সাংবাদিকদের দায়বদ্ধতা : পুলিশ বিশ্বজিতকে রক্ষা করেনি। তবে সাংবাদিকরা কী বিশ্বজিতকে রক্ষা করতে পারতো? এ প্রশ্নটি অনেকের। ঘটনার পর দেশের সব বেসরকারি টিভি চ্যানেল বিশ্বজিতকে হত্যার ঘটানর ভিডিও ফুটেজ প্রচার করেছে। কয়েকটি টিভি চ্যানেল এক্সুক্লুসিভ ফুটেজও দেখিয়েছে। পরদিন সব দৈনিকে ছবি ও নিউজ ছেপেছে। আমার প্রশ্ন এতো এতো সংবাদকর্মী উপস্থিত থেকে সংবাদ কভার করেছেন। তারা কি সম্মিলিতভাবে বিশ্বজিতকে রক্ষা করতে পারতো না? নাকি বিশ্বজিতকে রক্ষা করলে সেদিন মারদাঙ্গা সংবাদ হতো না? সাংবাদিকরা বলবেন, সংবাদিকরা তো কোনো পলিটিক্যাল পার্টির অংশ নয়। আবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন অংশ নয়। তারা তাদের যে পেশাগত কাজ সেটি করেছে কি না তা দেখার বিষয়। আমার বিশ্বাস সাংবাদিক, ক্যামেরা ক্রুরা সাম্মিলিতভাবে বিশ্বজিতের হত্যাকারীদের রুখে দিতে পারতেন। তাহলে আমাদের দেখতো হতো না স্পার্টাকাস সিনেমার মতো উš§ত্ত হত্যার বিভৎষ্য দৃশ্য।
তবে ওই ঘটনার ছবি, সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ করায় খুনীদের চেনা গেছে। সরকার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্তায় ধিক্কার জানিয়েছেন জনগণ। এতে আইন-শঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর হয়েছেন খুনিদের ধরতে। ভিডিও ফুটেজ দেখে এরইমধ্যে মূল হোতাসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে।
এর আগেও রাজপথে প্রকাশ্যে দিবালকে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সে সব ঘটনার মতো এ ঘটনাও চাপা পড়ে কি না তা এখন দেখার বিষয়।

৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×