রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কর্মীরা এবার মশিউর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীর হাত-পায়ে পেরেক ঠুকে এবং হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছেন। গত সোমবার রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মার্কেটের সামনের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই মার্কেটের দোকানিরা এগিয়ে এলে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁদের ওপরও হামলা চালান।
আহত মশিউর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর এবং আমীর আলী হলের আবাসিক ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসক তাজুল ইসলাম বলেন, মশিউরের ডান হাতের নিচের অংশে এবং বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচে আঘাতের ক্ষতচিহ্ন ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এর আগে গত ১৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম হলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিশেষ খাবারের টোকেন নেওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা নাসরুল্লাহ নাসিম নামের সংগঠনের আরেক কর্মীকে মারধরের পর হলের দোতলা থেকে নিচে ফেলে দেন। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলামের অনুসারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নাসিম হাসপাতালে নয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত ২৩ আগস্ট মারা যান।
আহত মশিউরের সহপাঠী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মশিউর তাঁর স্নাতকোত্তরের মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে গত সোমবার সন্ধ্যায় সহপাঠীদের সঙ্গে ক্যাম্পাসে ইফতার করেন। ইফতার ও বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা শেষে রাত আটটার দিকে আমীর আলী হলে ফেরার পথে ছাত্রলীগের কর্মী ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র ফিরোজের নেতৃত্বে ১০-১২ জন পেছন থেকে এসে মশিউরের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁকে হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটান। একপর্যায়ে মশিউর মাটিতে পড়ে যান। এরপর তাঁরা মশিউরের পায়ে এবং হাতে হাতুড়ি দিয়ে একাধিক জায়গায় লোহার পেরেক মারেন। এ সময় মশিউরের চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলের কাছেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মার্কেটের কয়েকজন দোকানি এগিয়ে এলে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁদের ওপরও হামলা চালান। এ সময় তাঁরা ওই মার্কেটের শতরূপা স্টুডিওর মালিক জামিল আহমেদকে মারধর করে তাঁর কাছ থেকে একটি মুঠোফোন কেড়ে নেন।
পরে ক্যাম্পাসে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মশিউরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন। প্রথমে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্র, পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




