এক সকাল রোদেলা মালা গাঁথলো তরুণী,
প্রস্তর যুগের সীমারেখায় ঢুকে পড়ে যুবক
টেনে টেনে চলে সেই শিউলীর সেতুবন্ধনী
নিয়ে আনে ধরনীর শেষ গোধূলীর প্রান্তে ।
মধ্যপথে রৌদ্রক্লান্ত ঝাউতলে দাড়িয়ে
বাহুতে ঘাম মুছতে উদ্দ্যত হলেই
সহসা এক কোমল হাত ছূঁয়ে যায় চিবুক,
মাতাল সে স্পর্শে বাড়ে যুবকের
আরও ভালোবাসার স্পর্ধার বুক ।
তরূণী কোন ভেলায় বসে দোলায় চরণ
এক বাদীহাস জলে আনমনে,
বিভক্ত পৃথিবীর সাতটি মহাদেশে
পৌঁছে যায় তা জল আবর্তে ।
অগ্যতা যুবক ঝিনুকের মত কুড়িয়ে আনে
সেই পায়েল ধোয়া স্পর্শ ,
দ্রবীভূত করে নামহীন দ্বীপালীর রৌদ্রের শরীরে
অবশেষে ফোটে সেই প্রান্তরে মহাকালের রংধনূ ,
যুবক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুষে নেয় সমস্ত রং
ভেজা মধ্যরাতের জোস্নার স্নানে ।
******
জলপিয়া যখন তোমার হাতে হাত রেখে হেটেছিলাম সপ্নীল আলোর মসৃন পথে,
তখন নূপুর ছন্দে প্রকম্পিত হল সমস্ত পৃথিবী,
মানবতার জানালা ভেদ করে ঈষৎ হাসল অনাথ,
ভষ্মিভূত পৃথিবীর মধ্যভাগেও ফুটল অপূর্ব ফু্ল,
আর আমাদের উড়াতে আরও এগিয়ে এল নীল প্রজাপতি।
আমাদের চলার দৃপ্তিময় পথে ছুটে চলল
মহাত্ম অনুভবের রাশি রাশি ধূঁলো।
তুমি আরও শক্ত করে আমাকে ধরলে,
আমি উম্মাদ হয়ে তাকালাম,
তোমার স্নিগ্ধ মুখে জ়্বলজ়্বল অসম্ভব সুন্দর জলসান্দ্রতার মায়া,
ছায়াতে প্রকাশ পেল আশ্রয়,
কায়াতে জড়াল সাদা আঁচল,
উড়াল পথে পথে শূভ্রের নিশানা,
তুমি আমি আরও কাছে ,বাহু আর মাংশ একাকার
তখন এমন বন্ধনের আলোয়
নীলাভ এই সুন্দর গ্রহটা সুদর্শনার হাসিতে হেসে উঠল।
এই কবিতাটি পূর্বে কোন এক সংকলনে প্রকাশিত
****
তুমি বর্ণান্ধ !!
ঘাসের রং দেখ না,
পতাকার রংও না ?
তোমাকে তাই ছেড়ে দিলাম লাল গোলাপ পথে,
শেষ বিকেলের হাতছানি দেওয়া রাঙা রাস্তায়,
খুঁজে দেখ এখানে এককালে ঝরেছিল রক্ত,
এখানে ছিল বীরাঙ্গনার শরীরের গন্ধ ,
এখানে পোঁতা ছিল যুদ্ধের নিশানা,
কত শ্রাবণ জল খেয়েছে সবুজ মাটির প্রসাদ,
অবশেষে তাদের ফোটা ফোটা রক্তে নির্মিত এই স্বাধীন ভূমি,
এই মৃত্তিকা চিড়েফিড়ে জেগে উঠেছে অপূর্ব ফুল,
তারা ফুটবে সীমাহীন বছর ধরে,
তোমাকে চিনিয়ে দিতে পতাকার রং,
গর্বিত স্মৃতির অনুভবের জলে।