আমার দাদিজান বেঁচে আছেন। বয়স ৭০ ছুই ছুই। চোখে মাশাআল্লাহ ভালো দেখেন। এখন কার জেনারেশনের কুড়ি বছরের মানুষ জনের চোখ ও বোধ হয় এতোটা স্বাচ্ছন্দে দেখতে পারে না।আমাদের জেনারেশনের মানুষজন চশমা লেন্স হাবি জাবি ইউস করে । উনার তেমন কিছুই লাগে না।
শবে বরাত, শবে কদর এবং ঈদ এই তিনটা দিন এলেই বুকের ভেতর টা কেমন হু হু করে। বাবার কথা প্রচন্ড মনে পড়ে। যাদের বাবা নেই তারাই ফিল করে।
খুব ছোট বেলা থেকে দেখছি বাবা রোজ শবে বরাতে গোসল করে ইয়া লম্বা সাদা একটা জুব্বা গায়ে লাগাতেন। মসজিদে যাওয়ার আগে খুজে খুজে দামী আতর টা বের করে খানিক টা জুব্বায় লাগিয়ে চোখে সুরমা লাগাতেন। জায় নামাজ টা ব্যাগে ঢুকিয়ে।যাওয়ার আগে দাদির পায়ে সালাম করতেন এবং হাতে একটা চুমু খেতেন। দাদির চোখ টা দেখতাম একটু ভিজে যেতো। ভাঙ্গা গলায় বলতেন" বেচে থাক আব্বা "।
দাদা ও নাকি উনার আম্মারে এরকম কদমবুছি করতেন শবে বরাত কদর আর ঈদে যাওয়ার আগে। আব্বাও সেই দেখাদেখি আমিও করি।
আমি ও আব্বার দেখাদেখি আম্মাকে সালাম করতাম। দাদিজান ও মিট মিটিয়ে হাসতো বলতো" "দেখে দেখে সালাম করলে সাওয়াব পাবি না "।
বাবা মারা যাওয়ার পর দাদি এরকম তব্দা খেয়ে গেছেন। আগের মতোন ঠিক ঠাক মত কথা বলেন না। শবে বরাত রাত গুলোতে অনেক কান্নাকাটি করেন।
আমি ও বাসায় থাকি না তেমন একটা। পাচ ছয় টা বছর ধরে বাইরে কাটে শবে বরাত।
পৃথিবী সব সময় ই নতুন কিছু নিয়ে অপেক্ষা করে আমাদের জন্যে। কিন্তু এমন একটা দিন বোধ হয় পৃথিবীর কোন মা ই কল্পনা করে না। মা বেচে আছে তার সন্তান নেই । পৃথিবীর কোন শব্দ দিয়ে এসব গ্যাপ পূরন করা সম্ভব নয়
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৭ রাত ৩:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



