বর্তমান আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমাদের সাধারণ মানুষের মোটামুটি প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠা থেকে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত একবার হলেও চিন্তায় ছিল পদ্মা সেতু কবে হবে । আমাদের দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ৫ কোটি মানুষ পদ্মা সেতু নিয়ে সরাসরি জড়িত, কিন্তু কিছু মানুষের স্বপ্ন-দোষের কারনে আমাদের সবার স্বপ্ন এখন বিপর্যস্ত । পদ্মা- সেতু আমাদের উন্নয়নশীল অর্থনীতির সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হতে পারে । অর্থনীতিবিদরা মনে করেন পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের জিডিপি ২% ( যা এখন ৬.৫%) বেরে যাবে, আমাদের ৩ কোটি মানুষ সরাসরি মুল অর্থনৈতিকর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত হতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে গ্যাস লাইন সম্প্রসারণের মাধ্যমে নতুন শিল্প- কারখানা তৈরির মাধ্যমে মংলা বন্দর একটি দক্ষিন এশিয়ার বড় বন্দর হিসেবে আত্তপ্রকাশ করতে পারবে।
এইসব কথা ছোট করে বললাম শুধুমাত্র পদ্মা সেতুর উপকারিতা বুঝানোর জন্য। এইবার তাহলে মুল কথা বলি। আমাদের কিছু কিছু নেতার পকেট অর্থায়ন করতে না পেরে, যখন বিশ্বব্যাংক পুরো প্রকল্পই অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের সরকার এবং সাধারণ মানুষ খুব চিন্তিত কিভাবে সেতু বানানোর টাকা জোগাড় করা যায়। যেই টাকার পরিমান প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমিও চিন্তা করতে করতে বেশ কিছু উপায় পেলাম। সেগুলি আপানাদের সাথে শেয়ার করলাম।
১। বর্তমান সরকারের সময় শুল্ক-বিহীন গারি আমাদানির নামে যেই ১০০০ কোটি টাকা মাননীয় এমপিরা সরকারি কর কম দিয়েছেন, সেই টাকা তাদের ফেরত দিতে হবে।
২। আমাদের নেতা-নেত্রিরা কিম্বা আমলারা যখন ঘুস খান অর্থাৎ ১০% ঘুসের টাকার ৮% আপাতত পদ্মা সেতুর জন্য দিয়ে দিতে পারেন।পদ্মা সেতু না হওয়া পর্যন্ত একটু সহ্য করেন। এর পরিমান বছরে ১০০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই ক্ষেত্রে আমরা ট্রুথ- কমিশন এবং ধর্মীয় নেতাদের সাহায্য নিতে পারি।
৩। কালো টাকা সাদা করার জন্য ১০% জরিমানার সাথে আরও ৫% জরিমানা পদ্মা সেতুর নামে জোগাড় করা যেতে পারে। সঠিক ভাবে কালো টাকার মালিকদের ধরতে পারলে আমরা এই উৎস থেকে বছরে ৫০০ কোটি টাকার মতো পারি।
৪। বাক্তিগত গাড়ি কিনতে গেলে ১০% টাকা পদ্মা সেতুর জন্য দেয়া যেতে পারে। এর মাধ্যমে ১০০ কোটি পাওয়া জেতে পারে।
৫। আমাদের দেশে কথা হয় বেশি কাজ কম। পদ্মা সেতু না হওয়া পর্যন্ত সব টক- শো, রাজনৈতিক মিটিং এর উপর কর ধার্য করা জেতে পারে। টাকার অঙ্কে বলতে পারলাম না।
৬। মোবাইল এ অপ্রয়োজনীয় কথার বলার অভ্যাস আমাদের অনেক বেশি। তাই মোবাইল এ ৩ মিনিট এর বেশি কথা বললেই পদ্মা সেতুর জন্য কর নেয়া জেতে পারে।
৭। বিলাশ দ্রব্য কিনতে গেলে ১০% বেশি কর নির্ধারণ করা জেতে পারে।
৮। প্রতিটি রাস্তাঘাটে পদ্মা- সেতুর জন্য সাহায্য- বাক্স স্থাপন করা জেতে পারে, যেখানে মানুষ সামর্থ্য মতো সাহায্য করবে।
তবে একটি ব্যাপার আমরা যতই বলি নিজেদের টাকা দিয়েই পদ্মা সেতু করতে পারি, বাস্তবে তা আমাদের জন্য কিছু ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ। কারন পদ্মা সেতুর লোকবল, যন্ত্র-পাতি, নির্মাণ- উপাদানের ৮০% ভাগ বিদেশ থেকে আনতে হবে। তাই এক্ষেত্রে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ অনেক কমিয়ে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের জারা প্রবাসী তারা বাংলাদেশি-বণ্ড মার্কিন ডলারে কিনতে পারেন। যার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করা জেতে পারে। আর যেহেতু জাইকা এবং আইডিবি ঋণ প্রস্তাব (৭০ কোটি ডলার বা ৫৬০০ কোটি টাকা) নাকচ করেনি। তাদের থেকে আমরা ঋণ নিতে পারি।
বিঃ দ্রঃ এই উপায়গুলু সাধারণ মানুষ এর উপর কোনও অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করবে না বলে আমি বিশ্বাস করি। এর মাধ্যমে বিশ্বর কাছে আমাদের দেশপ্রেম ১৯৭১ সালের পর আরও একবার প্রমানিত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ২:১২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


