সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় - এর ছাত্রদের জমায়েত- পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। রাতের অন্ধকারে ল্যামপোস্টের নিচে টিয়ার শেলের ধোঁয়ার মধ্যে বাংলাদেশের পতাকা ধরে দাঁড়িয়ে আছে এক দুঃসাহসিক তরুণ। ছবি: আলামিন লিওন।
মধ্যরাতে হঠাৎ উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। নেতাদের নির্দেশ উপেক্ষা করে বেশ কিছু শিক্ষার্থী মধ্যরাতেই রাস্তায় নেমে এসেছে।
কবি সুফিয়া কামাল হল ছেড়ে বাইরে বিক্ষোভ করছেন ছাত্রীরাও। রোকেয়া ও শামসুন্নাহার হলের মেয়েরা বাইরে বেরিয়ে এসেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নারী শিক্ষার্থীরাও এখন আর কোটা চায় না। তারাও কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাস্তায় নেমে এসেছে। সরকারের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায়ও তারা জানিয়েছে, নারীদের এখন আর কোটার দরকার নেই।
প্রতিবাদী চরিত্র মানব সভ্যতা বড় সৌন্দর্য।
দুই.
চলতি বছরের জানুয়ারিতে জম্মু ও কাশ্মীরের শহর কাঠুয়ার রাসানা এলাকায় মুসলিম বাকারওয়াল সম্প্রদায়ের আসিফা বানুর ওপর চালানো নৃশংসতার তিন মাস পর উত্তাল ভারত।
মাত্র ৮ বছর বয়সেই যে ভীতিকর নির্যাতন তাকে সইতে হয়, তার কল্পনাও কষ্টসাধ্য। ধর্ষণ, হত্যার সেই অকল্পনীয় বর্বরতার বর্ণনাই এখন উত্তাল করে দিয়েছে ভারতকে, বিবেকবান প্রতিটি মানুষকে।
‘‘তাকে না খাইয়ে রাখা হয়েছিলো পুরোটা সময়। এমনকি শ্বাসরোধে হত্যার আগে একজন পুলিশ অফিসার তাকে শেষ বারের মতো ধর্ষণের জন্য জোর করছিলো। তার মাথায় পাথর দিয়ে দুবার আঘাতও করা হয়। পরে জঙ্গলে তার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায়।’’
ধর্ষণে অভিযুক্তদের পক্ষে আন্দোলন
হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা এই ঘটনার অভিযুক্তদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। কারণ, গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই হিন্দু আর বাকারওয়ালরা মুসলিম। এই মামলা তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের কয়েকজনও মুসলিম। হিন্দু অ্যাক্টিভিস্টদের দাবি, ‘এদের বিশ্বাস করা যায় না।’
মা'গো, এই পোষ্টটি লিখছি আার কাঁদছি। মানুষ হিসাবে জন্ম নিয়ে, একটি মেয়ের পিতা হয়ে বড় অসহায় ভাবছি নিজেকে।
আসিফা বানু যদি হিন্দু হতো, আর তাকে যদি মসজিদে রেখে এমন নির্যাতন করে মেরে ফেলা হতো , আমি কি অপরাধীকে বাচানোর জন্য মিছিল করতাম? আমি মুসলিম, এই পরিচয় কি আমি মানুষ এই পরিচয়ের চেয়ে বড় হয়ে উঠতো?
তিন.
জাহিদুল ইসলাম সরকার লিখেন-
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ নববর্ষ পালন বাধ্যতামূলক করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। মঙ্গল শোভাযাত্রার পক্ষে বিপক্ষে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক। এক শ্রেনীর মতে, মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙ্গালির হাজার বছরের ঐতিহ্য, বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বার ঐক্যের প্রতীক। অপর পক্ষের মতে, মঙ্গল শোভাযাত্রা কখনোই বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বার প্রতীক ছিল না বরং এটা বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মুসলমান জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস ও সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক।
প্রথমত, মঙ্গল শোভাযাত্রা কোনভাবেই বাঙ্গালির হাজার বছরের ঐতিহ্য নয়। ইউকিপিডিয়ার তথ্য মতে, মাত্র ১৯৮৯ সালে এই অপসংস্কৃতিটিকে যুক্ত করা হয়েছে নববর্ষ পালনের সঙ্গে। শুরুতে নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। ১৯৯৬ সালে খোলস পাল্টে নাম হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো, প্রথম দিকে বাঘ, হরিণ, ময়ুরের মতো নিরীহ প্রাণীর মুখোশ নিয়ে এ উৎসব করা হতো। কিন্তু গত দুই তিন বছর ধরে কথিত অশুভ শক্তির প্রতীক হিসেবে বিভিন্ন ভয়ংকর দৈত্য-দানবের প্রতিকৃতি যুক্ত করা হচ্ছে।
এ বছর এ প্রশ্নটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়-
নতুন বছরের প্রথম দিন বাঘ-ভাল্লুক, সাপ, বিচ্ছু, কুমির, পেঁচা, ময়ূর ও বিভিন্ন দেব-দেবীর বড় বড় মূর্তি, ছবি নিয়ে ও মুখোশ পরে মঙ্গল শোভা যাত্রার যে র্যালি বের করা হয়, এখানে কার কাছে নতুন বছরের মঙ্গল ও কল্যাণ কামনা করা হচ্ছে?
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪২