somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

▓▒░ মহাপ্রলয় ! (দ্য আলটিমেইট বিগ ব্যাং) ░▒▓

২৭ শে মে, ২০২০ বিকাল ৩:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



❑ ❑ ভূমিকা ❑❑

ইসরাফিল (আ) শিংগায় ফুঁ দেয়ার পরে যে প্রলয়কান্ড শুরু হবে বিশ্বচরাচরে এবং তার অব্যবহিত পরেই শুরু হবে মহা আদালতের যে বিচারকার্য্য, তার বর্ণনা বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সমগ্র কুরআনের বিভিন্ন সুরায় । এই ইতস্তত ছড়ানো ছিটানো তথ্যগুলিকে একত্রিত ও বিন্যস্ত করার মাধ্যমে একটি পরিস্কার, সহজ ও সামগ্রিক চিত্র ফুটিয়ে তোলার বিশাল ও দুঃসাহসিক এক প্রচেষ্টা আমার এই লেখা ।

কুরআন একটি দীর্ঘ ভাষন হওয়ার কারণে রোজ কিয়ামত এবং হাশরের ময়দানের বর্ণনার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি এর সুরাগুলিতে । একই তথ্যের পুনরাবৃত্তিও হয়েছে ঘনঘন ।

রোজ কিয়ামত ও হাশরের বিভিন্ন দৃশ্য ও ঘটনাগুলিকে সাজিয়ে একটি একক ও সামগ্রিক চিত্র তৈরী করার এই আনাড়ি প্রচেষ্টায় আমি কুরআনের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আয়াতের ভাবানুবাদ, সামান্য যৌক্তিক কল্পনা আর বুদ্ধিবৃত্তিক সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করেছি ।

উল্লেখ্য, কুরআনে বর্ণিত কেয়ামত ও হাশরের দৃশ্যের সাথে হাদিসে বর্ণিত দৃশ্যগুলিকে এমালগামেইট করার চেষ্টা আমি করিনি । কারন এর জন্য যে সাধনা, অধ্যয়ন, আর যোগ্যতা দরকার, সবিনয়ে স্বীকার করছি, তা আমার মতো ইংরেজি পড়ুয়া অধম মুসলমানের মোটেও নেই । এ কারনেই কেয়ামত ও হাশরের পরিচিত অনেক দৃশ্যকে হয়তো আমার বর্ণনায় অনুপস্থিত দেখবেন বিজ্ঞ অনেক পাঠক ।

যাবতীয় ভুলত্রুটির জন্য বারবার ক্ষমা চেয়েছি আল্লাহর দরবারে । ভুল ত্রুটির দিকে না তাকিয়ে আল্লাহ হয়তো আমার কিঞ্চিৎ জ্ঞান ও যোগ্যতার আন্তরিক ব্যবহার দেখে খুশী হবেন । অন্তত দু’ চারজন মুসলমানও এই লেখা পড়ার পর ভীত হয়ে তাকওয়া অর্জনে আরও সক্রিয় হয়ে উঠবেন । আর তা দেখে খুশী হয়ে কেয়ামত ও হাশরের সেই দুঃসময়ে দয়াময় আল্লাহ আমাকে সামান্য একটু ফেভার করবেন । সামান্য । এই গোপন আকাংখাগুলিই ঘাম ঝরানো প্রচেষ্টায় সারাক্ষন আমাকে অনুপেরণা যুগিয়ে গেছে ।

▬▬▬▬▬▬ஜ মহাপ্রলয় ஜ▬▬▬▬▬▬

ইসরাফিলের বিউগল বা শিংগা বেঁজে উঠার সংগে সংগে থমকে দাঁড়াবে সূর্য্যের চারপাশে নিজের কক্ষপথে কোটি কোটি বছর ধরে বিরামহীনভাবে ছুটে চলা পৃথিবী নামক এই গ্রহটি । শুরু হয়ে যাবে মহাপ্রলয় বা কেয়ামত !

দীর্ঘ পথ ছোটার পর আচমকা লাগামে টান পড়ায় থমকে দাঁড়ালে যেভাবে কাঁপতে থাকে কোন পরিশ্রান্ত ঘোড়া, ভূমিকম্পের মতো মুহুর্মুহু ঝাঁকুনিতে থরথর করে সেভাবেই বুঝি কাঁপতে থাকবে সমগ্র পৃথিবী । আতংক ও বিভীষিকায় নিজের দুধের বাচ্চার নিরাপত্তার কথা ভুলে যাবে মা । গর্ভবতী মায়েদের অকালে গর্ভপাত হয়ে যাবে । বাচ্চা প্রসবের সময় হয়েছে এমন উটের মতো মূল্যবান জিনিসের দিকেও কেউ ফিরে তাকাবে না । জান বাঁচাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়বে সবাই । আতংকে দিশেহারা সব মানুষ আত্মরক্ষার জন্য হন্য হয়ে নিরাপদ যায়গা খুঁজবে । কিন্তু এই মহাপ্রলয়ে নিরাপদ কোন স্থান পাবে না তারা পালিয়ে বাঁচার জন্য ।

দ্বিতীয়বার বিউগল বেঁজে উঠার সংগে সংগে আল্লাহ যাদেরকে চান তারা ছাড়া দুনিয়ার সকল প্রাণী ছটফটিয়ে মরে যাবে যে যেখানে থাকবে সেখানেই। পোকা-মাকড়ের মতো বিক্ষিপ্তভাবে এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকবে তাদের মৃতদেহগুলি ।

কেটে যাবে কিছু সময় ।

৩য় বার শিংগায় ফুঁ দেয়া হলে দুনিয়ার তাবৎ মৃত মানুষ আবার প্রাণ ফিরে পাবে । ধড়মড় করে সজাগ হয়ে সটান দাঁড়িয়ে যাবে তারা । কবরগুলি থেকে দলে দলে বের হয়ে আসতে থাকবে লক্ষ কোটি মানুষ । কাফির ও মুনাফিকরা কবর থেকে বের হয়ে আসবে হতশ্রী ফড়িংয়ের মতো । নিজের ভেতরের সবকিছু ওগরে দিয়ে নির্ভার হয়ে যাবে পৃথিবী ।

কান ফাটানো বিকট শব্দ আর চারপাশে শুরু হওয়া প্রলয় নাচন দেখে আতংকে দিশেহারা হয়ে এদিক ওদিক ছুটতে থাকবে সদ্য জীবিত হওয়া সকল মানুষ । বাবা-মা-ভাই-বোন-স্বামী-সন্তান-স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন কিংবা বন্ধু-বান্ধবকে কাছাকাছি দেখে চিনতে পারলেও তাদের কাছ থেকে পালাতে চাইবে সবাই । কারন সেদিন কোন আত্মীয়তার বন্ধন কিংবা স্নেহ-মায়া-মমতার অস্তিত্ব থাকবে না মানুষের মাঝে ।

দুনিয়াতে যারা নাস্তিক, কাফির, মুনাফিক, মূর্তিপুজারি কিংবা অবাধ্য ছিল, পৃথিবীর এই ভয়ানক অবস্থা দেখে ভীষন আতংকে তারা মাথা নীচু করে বেতসলতার মতো থরথর করে কাঁপতে থাকবে । একসময় ভেতরের এক অদৃশ্য তাগিদে নিজেদের অজান্তেই উর্দ্ধশ্বাসে ছুটতে শুরু করবে তারা । হাশরের বা চূড়ান্ত বিচারের ময়দানের উদ্দেশ্যে ।

সাগরের ঢেউয়ের মতো দলে দলে ছুটবে মানুষ । এক দল গিয়ে ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়বে আরেক দলের উপর । তাদেরকে গিয়ে দাঁড়াতে হবে তাদের রবের সামনে । সেখানে তারা জানতে পারবে দুনিয়াতে তারা কী রেখে এসেছিল আর কী তারা সংগে নিয়ে এসেছে । আজ যে তাদের পৃথিবীতে দিয়ে আসা পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন ।

সে এক ভয়ানক বিপর্যয়ের দিন !

মাথার উপরে আকাশ ফেটে চৌচির হয়ে কখনো গলিত রূপার মতো চকচক করবে, কখনো বা রক্তের মতো লাল হয়ে উঠবে । টেবিলে ছড়িয়ে রাখা বিশাল এক কাগজের মতো আকাশকে গুটিয়ে নেয়া হবে । এভাবেই মানুষের চোখের সামনে থেকে সরিয়ে নেয়া হবে সাত আসমান ঢেকে রাখা মায়াবী পর্দা । খুলে যাবে ঐশী আকাশ, দেখা যাবে সেখানে অসংখ্য দরজা আর দরজা ।

সূর্য্যকে আলোহীন করে দেয়া হবে । চাঁদ হয়ে যাবে জ্যোতিহীন । সূর্য্য ও চাঁদ মিলে একাকার হয়ে যাবে । নিভে যাবে সব নক্ষত্রের আলো । পপকর্ণের মতো মহাকাশের চতুর্দিকে ছিটকে পড়তে থাকবে তারা-নক্ষত্রগুলি ।

পাহাড়-পর্বতগুলি হঠাৎ যেন জীবন্ত হয়ে অস্থিরভাবে চলাফেরা শুরু করবে । দূর থেকে দেখে মনে হবে যেন মরীচিকা নাচছে । ঝাঁকুনির পর ঝাঁকুনি খেয়ে দুনিয়ার সমস্ত পাহাড়-পর্বত ফেটে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে । গুঁড়ো হয়ে শূন্যে উড়তে থাকবে রঙীন পশমের মতো । উড়তে উড়তে এক সময় চতুর্দিকে থিতিয়ে পড়বে বালুর মতো ।

মুর্হূমুহু বিস্ফোরন ঘটতে থাকবে সমুদ্রে । দাউদাউ করে আগুন ধরে যাবে পানিতে । বন জঙ্গলের ছোট-বড় সকল জীবজন্তু আতংকিত ও দিশেহারা বোধ করে দলে দলে জড়ো হবে এক যায়গায় ।

দুলতে থাকবে পৃথিবী । মাতালের মতো টলতে থাকবে ভীত সন্ত্রস্ত মানুষ । আকাশের দিকে তাকাতেই ভয়ে চক্ষু স্থির হয়ে যাবে তাদের । আতংকে বিস্ফারিত দু’চোখের দৃষ্টি ডানে বাঁয়ে সরানোর আর ক্ষমতা থাকবে না তাদের । মাথাও উর্দ্ধমুখি হয়েই থাকবে । শূণ্য, ফাঁকা হয়ে যাবে মস্তিস্ক । চিন্তাশক্তি বিকল হয়ে যাবে । বিস্ময়ে বিহ্বল হয়ে মানুষ বলে উঠবে, ‘ইয়া আল্লাহ, কী হলো এই পৃথিবীর, এমন পাগলামি করছে কেন ?’

সেদিন আরেক মহাপ্রলয় বা বিগ ব্যাং সংঘটিত হওয়ার দিন ।

বিশ্ব-ব্রহ্মান্ডের সকল সেটআপকে লন্ডভন্ড করে দেয়া হবে ঐ দিন । বিকট শব্দ আর মুহুর্মুহু ঝাঁকুনিতে শহর-নগর, রাস্তা-ঘাট, বন-জঙল, পাহাড়-পবর্ত, সাগর-নদীকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে পৃথিবীকে সমান করে দেয়া হবে । পৃথিবী হয়ে উঠবে বিশাল, উন্মুক্ত, মসৃন ও নিভাঁজ এক সমতল ভূমি । যেন আদিগন্ত বিস্তৃত এক পরিপাটি বিছানা । সামান্য উঁচুনীচুও দেখা যাবে না কোথাও ।

সমগ্র মানবজাতি নিজদেরকে আবিষ্কার করবে সেই বিশাল ময়দানে । ঠিক মানব সৃষ্টির প্রথম দিনটির মতো । একজন মানুষও বাদ পড়বে না সেই মহাসমাবেশ থেকে । লাইন ধরে সুশৃংখলভাবে দাঁড়িয়ে পড়বে লক্ষ কোটি মানুষ এক অদৃশ্য শক্তির ইচ্ছায় ।

তারপর, আবির্ভূত হবেন মানুষের মহান রব । চতুর্দিক উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে তাঁর নূরে ।

▬▬▬▬▬▬ஜ শেষ বিচার (ডুমস ডে) ஜ▬▬▬▬▬▬


কিয়ামত বা মহা প্রলয়ের পর খাটের উপর বিছানো চাদরের মতো মসৃণ ও সমতল হাশরের ময়দানে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে যাবে মানবজাতি এক অদৃশ্য শক্তির ইচ্ছায় । আদম (আ) থেকে শুরু করে পৃথিবীতে জন্ম নেয়া শেষ মানুষটি পর্যন্ত সশরীরে হাজির থাকবে হাশরের ময়দানে । শান্ত ও সুশৃংখলভাবে । দুরু দুরু বক্ষে মহা আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার অপেক্ষায় থাকবে তারা ।

লোকে লোকারণ্য সেই পৃথিবীতে বিরাজ করবে স্তব্ধ নীরবতা । টুঁ শব্দটি করার ক্ষমতাও থাকবে না কারো । শুধুমাত্র ফেরেশতাদের মৃদু পায়ে চলাফেরা করার খসখস শব্দ কানে আসবে মাঝেমাঝে ।

আবির্ভূত হবেন বিচার দিবসের বিচারপতি মানুষের মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ।

মানুষ তাকিয়ে দেখবে আল্লাহর নূরে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে চতুর্দিক । তারপর এক এক করে হাজির হবেন সকল নবী রাসুল । জীবরাইল (আ) এবং সকল ফেরেশতা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে । আল্লাহ অনুমতি দিলেই কেবলমাত্র কথা বলা যাবে সেখানে । মিথ্যা, বানোয়াট ও অপ্রয়োজনীয় কথা বলার কোন সূযোগই থাকবে না কারও ।

জাহান্নামকে কাছে টেনে আনা হবে । আগুন জ্বালানো হবে তাতে । সেই ভয়ংকর আগুন তার সম্ভাব্য মেহমানদেরকে কাছেই হাজির দেখে দূর থেকেই ক্রুদ্ধ ও উত্তেজিত গর্জনে তাদেরকে ডাকতে থাকবে । ক্ষুধার্তের মতো লেলিহান জিভ বের করে বলবে, ‘আয় আয় । শিগগির আমার উদরে আয় ।’

এই দৃশ্য দেখে ভয়ে শিউরে উঠবে দুনিয়ার অবিশ্বাসী, মুশরিক, মুনাফিক আর অবাধ্য সব মানুষ । আতংক, উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় প্রাণ বের হয়ে যাবার দশা হবে তাদের । কিন্তু প্রাণ বের হওয়ার আর কোন সূযোগতো আর নেই এখানে । হা হুতাশ শুরু করবে সম্ভাব্য দোযখীরা, ‘ইয়া মাবুদ, ভুল করেছি আমরা দুনিয়াতে এই দিনটির কথা বিশ্বাস না করে । আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও । প্লিজ, প্লিজ । আমরা পৃথিবীতে আবার ফিরে যেতে পারলে, কথা দিচ্ছি, আর কক্ষনো তোমার কথাকে অবিশ্বাস করবো না, তোমার অবাধ্য হবো না । বিশ্বাস করো মালিক ।’

আল্লাহ বিদ্রূপ করে বলবেন, ‘সে সূযোগটি আর তোরা পাবিনা রে জানোয়ারের দল । তোদেরকে আগেই সাবধান করে দেয়া হয়েছিল পঁই পঁই করে । তোরা কান দিসনি । ভুলে গিয়েছিলি আমাকে । কিংবা বিশ্বাসই করিসনি । আজ টের পাবি বাছাধনরা, কত ধানে কত চাল । আমার প্রতিশ্রুতি কখনো মিথ্যা হয় না । আগুনে পুড়ে পুড়ে যন্ত্রনায় অনন্তকাল ধরে ছটফট করাই হবে তোদের উপযুক্ত শাস্তি ।’

জাহান্নামের দাউ দাউ করে জ্বলা আগুনের লেলিহান শিখা দেখে ভয়ে চোখ বন্ধ করে রাখবে পাপী মানুষরা । তবে মাঝেমাঝেই বন্ধ করা চোখ কিঞ্চিৎ ফাঁক করে আড়চোখে তাকিয়ে দেখবে জাহান্নামের বিপদজনক আগুনের শিখাকে আর ঘামতে থাকবে আতংকে ।

টেনে আনা হবে কল্পনার চাইতে অধিক সুন্দর জান্নাতকেও চোখের সামনে ।

মানুষকে আল্লাহ বলবেন, ‘আজ তোমরা সেভাবেই আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছো, যেভাবে প্রথমবার তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলাম আমি । তোমরা অনেকে ভেবেছিলে আমার সামনে আর বুঝি কোনদিন তোমাদের দাঁড়াতে হবে না । আজ আমি অবিশ্বাসী ও অবাধ্যদেরকে আমার প্রিয় মানুষগুলি থেকে আলাদা করে কড়ায় গন্ডায় তাদের প্রতিফল বুঝিয়ে দেবো । ’

মানুষকে সিজদা করতে নির্দেশ দিবেন মহান রব । সিজদায় লুটিয়ে পড়বে মানুষ । কিন্তু অধিকাংশ মানুষই সিজদা দিতে ব্যর্থ হবে । আড়ষ্ট কোমর বিশ্বাসঘাতকতা করবে তাদের সাথে । লজ্জ্বায় অপমানে মাথা হেঁট হয়ে যাবে তাদের । ভয়, লজ্জ্বা আর হতাশায় অন্ধকার ঘনাবে তাদের চেহারাগুলিতে । এই লোকগুলোকে যখন তাদের রবকে সিজদার জন্য আহ্বান করা হতো পৃথিবীতে, হয় তারা অহংকারে মুখ ফিরিয়ে নিতো, নয়তো উদাসী হয়ে থাকতো ।

মানুষের জীবনের সকল ভালো ও মন্দ কাজের অদৃশ্য যে রেকর্ডবুক তাদের গলায় ঝুলানো ছিল দুনিয়াতে, তা পাঠযোগ্য করে চোখের সামনে আনা হবে খোলা এক বই আকারে । তারপর সেই রেকর্ডবুক পড়ার জন্য বলা হবে মানুষকে । পড়তে পড়তে মানুষ জেনে যাবে কী তারা দুনিয়াতে রেখে এসেছিল, আর কী তারা সংগে নিয়ে এসেছে ।

নিজেদের কৃতকর্মের রেকর্ডবুকে চোখ বুলিয়ে আতংকে হিম হয়ে যাবে অপরাধীদের অন্তর । হায় হায় করে উঠবে তারা হতাশা ও অনুশোচনায়,
--ইয়া আল্লাহ, কোনকিছুইতো দেখছি বাদ যায়নি এখানে । আমাদের জীবনের একেবারে তুচ্ছাতিতুচ্ছ কাজকর্মের রেকর্ডও আছে এখানে । হায় হায়, কী হবে আমাদের এখন !

পৃথিবীও সেদিন নিজের বুকের উপর ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা সবিস্তারে বর্ণনা করতে থাকবে । মানুষের অতি সামান্য কোন ভালো কাজের কথা যেমন প্রকাশ করবে সে, তেমনিভাবে করবে অতি সামান্য কোন মন্দ কাজের কথাও ।

মানুষের মনে পড়ে যাবে সবকিছু । মনে পড়ে যাবে দুনিয়ার জীবনে তাদের সমস্ত ব্যস্ততা ও কাজকর্মের কথা । হাশরের সেই ভীষন ও দীর্র্ঘ এক দিনে দাঁড়িয়ে পৃথিবীর জীবনের কথা ভাবলে তাদের মনে হবে তারা যেন স্রেফ একটা সন্ধ্যা কিংবা একটা সকাল কাটিয়ে এসেছে সেখানে ।

চারপাশে তাকালে তারা একে অন্যকে চিনতে পারবে । সব পরিচিত মুখগুলিই থাকবে আশেপাশে । আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী সবাই । কিন্তু কেউ কারও দিকে তাকাতে পর্যন্ত চাইবে না ভয়ে । পাছে তাদের অপরাধের দায় আবার কাঁধে নিতে হয় । বিচারের সময় আগুন থেকে বাঁচার জন্য নিজের একদা প্রাণপ্রিয় মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তান, ভাই, বোন, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে বিক্রী করে দিতে চাইবে জঘন্য স্বার্থপরে রূপান্তরিত হওয়া মানুষ । দুনিয়াতে নিজের সবচে প্রিয় মানুষগুলিকে জাহান্নামে পাঠিয়ে হলেও নিজেকে বাঁচানোর চান্স খুঁজবে মানুষ ।

ভীত-সন্ত্রস্ত, ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত চেহারা দেখেই চেনা যাবে আল্লাহর নাফরমান বান্দাদেরকে । দোযখের আগুন দেখেই তারা বুঝে যাবে এই আগুনই হবে তাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা । এটি থেকে বাঁচার আর কোন আশ্রয় বা উপায় নেই তাদের ।
চরম ভয় ও হতাশায় মুষড়ে পড়বে তারা, বলবে, ‘হায় রে, মাটি যদি হয়ে যেতে পারতাম আবার!’

শুরু হবে বিচারকার্য্য । আর, আল্লাহর বিচার শেষ হবে অত্যন্ত দ্রুত ।

আদালতের কাঠগড়ায় উঠার সময় প্রত্যেক ব্যক্তির সংগে একজন পাহারাদার এবং একজন স্বাক্ষী ফেরেশতা থাকবে । এ ছাড়াও আদালতের কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে উপস্থিত করা হবে ঘটনার স্বাক্ষী বিভিন্ন আলামত । সেদিন নির্জীব বস্তুও কথা বলবে আল্লাহর আদালতে । দেখা যাবে যে ছুরিতে নিরপরাধ কোন মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল পৃথিবীতে, সেই ছুরি নিজেই এগিয়ে এসে স্বাক্ষ্য দিচ্ছে হত্যাকারীর বিরুদ্ধে ।

কোন প্রতিবাদ করতে পারবে না আল্লাহর অবাধ্য বান্দারা । মুখ বন্ধ করে দেয়া হবে তাদের । আল্লাহর হুকুমে কথা বলা শুরু করবে তাদের হাত, পা, চোখ, ত্বক । গরগর করে বলে দিবে সব সত্য কথা । বাধা দেয়ার কোন ক্ষমতা থাকবে না কারও । মুখ দিয়ে কথা বলার ক্ষমতা যদি দেয়াও হয়, চাইলেও মিথ্যা বের হবে না তাদের মুখ দিয়ে ।

যাদের সৎকর্মের পাল্লা ভারী হবে, আর জুটবে আল্লাহর সদয় খালাস আদেশ, তাদের জন্য থাকবে সীমাহীন আনন্দ, আরাম-আয়েস ও বিলাস-ব্যসনের চিরস্থায়ী ব্যবস্থা । তাদের চেহারা খুশীতে ডগমগ করতে থাকবে । দুনিয়ার পরীক্ষায় পাশ করায় তাদের রেজাল্ট আসবে ডান হাতে । তাদের বিচারটি হবে সহজ একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র । আনন্দে লাফাতে লাফাতে তারা যোগ দিবে গিয়ে তাদের মতো সফল মানুষদের সাথে । এইসব বিশ্বাসী ও নেক বান্দাদেরকে সসম্মানে নিয়ে যাওয়া হবে বেহেশতে ।

আল্লাহ তাদেরকে বলবেন, ‘আমার প্রিয় বান্দারা, কোন টেনশন নেই আজ তোমাদের । যাও, হৃদয়ে প্রশান্তি নিয়ে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ কর । তোমাদের জন্য তোমাদের জান্নাতি বান্ধবীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে । অকল্পনীয় আরাম-আয়েস এবং বিনোদনের ব্যবস্থা করে রেখেছি আমি তোমাদের সবার জন্য ওখানে ।’

জান্নাতে প্রবেশের আগে, বিচার চলাকালীন সময়ে, শেষ নবী মোহাম্মদ (সা) এর খাঁটি উম্মতদের জন্য হাশরের সেই কঠিন ময়দানে রয়েছে তাদের প্রিয় নবীর পক্ষ থেকে স্পেশাল ট্রিট । নিজ হাতে হাউজে কাউসারের অমৃত পানীয় পরিবেশন করবেন তিনি প্রিয় উম্মতদেরকে । আমলে ঘাটতি নিয়ে তাঁর কাছে ছুটে যাওয়া কিছু উম্মতদেরকে শাফায়াত করবেন তিনি আল্লাহর হুকুম নিয়ে ।

একইভাবে শাফায়াতের জন্য অন্যান্য নবী রাসুলেরও দ্বারস্থ হবে তাদের নিজ নিজ উম্মতগন । আল্লাহ্র সম্মতি নিয়ে সেইসব নবী রাসুলরাও চেষ্টা করতে থাকবেন প্রিয় উম্মতদের নাজাতের জন্য ।
ওদিকে, দুস্কর্মের পাল্লা যাদের ভারী হবে, তাদের মুখে ঘনাবে অবর্ণনীয় শংকার কালো মেঘ । সেসব হতভাগাদের পেছন দিক থেকে বাঁ হাতে ধরিয়ে দেয়া হবে রায় সম্বলিত আমলনামা । চরম হতাশা, অনুতাপ ও আতংকে মুষড়ে পড়ে আরেকবার মৃত্যু কামনা করবে তারা ।

কিন্তু কোন লাভ হবে না । ফেরেশতারা চারপাশ থেকে ঘেরাও করে ফেলবে তাদেরকে । হাত, পা ও গলায় পরিয়ে দেবে অপরাধীদের উপযুক্ত চরম অপমানজনক ডান্ডা বেড়ি । মাথার চুল আর পা ধরে, তাদেরকে টেনে হিঁচড়ে জাহান্নামের কাছে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা অগ্নিকুন্ডের ভেতরে ফেলে দেবে ফেরেশতারা ।

তার আগে, এইসব বেঈমানদেরকে সংগী-সাথীসহ জাহান্নামের দিকে টেনে নেয়ার পথে ক্ষণিকের জন্য তাদেরকে থামিয়ে আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন,
--তোদের সেইসব প্রভুরা কোথায় আজ যাদের গোলামী তোরা করতি দুনিয়ায় ? আজ তারা তোদেরকে রক্ষা করতে আসে না কেন ?
জাহান্নামীরা হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে আর্তি জানাবে,
--ইয়া মাবুদ, ওরা সব মিথ্যুক ও ভন্ড ছিল । আমরা ভুল করেছি ওদের কথা শুনে । ওদেরকে ডাবল শাস্তি দিন ।’

দোযখীরা যখন একে অন্যকে এই দুরবস্থার জন্য দায়ি করে ঝগড়া শুরু করবে, আল্লাহ তাদেরকে আবার জিজ্ঞেস করবেন,
--ব্যাপার কী ? তোরা যে আজ একে অন্যের শত্রু হয়ে উঠলি ! একে অন্যকে সাহায্য করছিস না কেন আগের মতো ?

ওরা তাদের নেতাদেরকে ঠেলে সামনে পাঠাতে চাইবে । এ নিয়ে নিজেদের মধ্য তুমুল ঝগড়া শুরু হয়ে যাবে তাদের । নিজেদের নেতাদের লক্ষ্য করে বলবে তারা,
--এই তোমরা, তোমরাই হচ্ছে যতো নষ্টের গোড়া । তোমরাই আমাদেরকে বাধা দিয়েছো ঈমান আনতে, আল্লাহর পথে চলতে ।
নেতারা প্রতিবাদ করে উঠবে,
--এই চুপ করো, আমরা তোমাদের উপর জোর খাটাইনি । তোমরা নিজেরাই ছিলে চরম বিদ্রোহী । খামাখা আমাদেরকে দোষ দিচ্ছ এখন ।

আল্লাহ ধমক দিয়ে ওদের ঝগড়া থামিয়ে দেবেন । টিটকারি মেরে বলবেন,
--এখন কেমন লাগে, বল বদমাশরা ? এইতো সেই আগুন, যার কথা তোরা বিশ্বাস করতি না । বারবার নবী রাসুলদের পাঠিয়েছি আমি তোদেরকে সতর্ক করতে । কোন গুরুত্বই দিসনি আমার সাবধানবাণীতে । যা, আজ পুড়ে মর ইবলিশের যত অনুসারী ।

তারপর তিনি ফেরেশতাদেরকে হুকুম করবেন নষ্ট ও পাপাচারী, জানোয়ারের চাইতে অধম মানুষগুলিকে ধাক্কা মেরে, চরম অপমান করে, উপুড় করে দোযখের মধ্যে ফেলে দিতে ।

জাহান্নামীদের কাতর ও ভয়ার্ত আর্তনাদকে উপেক্ষা করে ফেরেশতরা নির্দয়ভাবে সেই আদেশ পালন করবে । আর জাহান্নাম ক্ষুধার্তের মতো হা করে গপাগপ গিলতে থাকবে তাদেরকে ।

এভাবেই একদা শখ করে মাটি দিয়ে তৈরী করা আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টিকর্ম মানুষের অধিকাংশেরই শেষ ঠিকানা হবে সাত সাতটি দোযখের দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনের সংকীর্ণ গর্তগুলি । তাদের সংগী হবে বিদ্রোহী প্রধান, নাটের গুরু ইবলিশ শয়তান ও তার সকল ছোট-বড় স্যাঙাতগুলি । শুধুমাত্র অল্পকিছু মানুষেরই সৌভাগ্য হবে আটটি জান্নাতে প্রবেশ করে স্বর্গসুখ উপভোগ করার ।

দয়াময় আল্লাহ আমাদের সকল অপরাধ ক্ষমা করে জান্নাতের উত্তরাধিকারী সেই সংখ্যালঘু সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত করুন । আমীন ।

‡‡‡‡‡‡‡‡‡‡‡
সুরা ইসরা, আলে ইমরান, ইয়াসিন, তোয়াহা, গাফির, যুমার, ফুরকান, আম্বিয়া, মুযাম্মিল, ইউনুস, মাআ’রিজ, সাফফাত, ফাতির, ইব্রাহীম, নূর, ক্কাফ, মুরসালাত, ফুসসিলাত, যুখরুফ, হজ্জ্ব, ক্কাহাফ, ওয়াকিয়া, ক্কলম, আর রাহমান, তূর, আল ক্কামার, কিয়ামাহ্, নাবা, আবাসা, নাযিয়াত, তাকভির, ইনফিতার, ইনশিকাক, গাশিয়া, ফজর, যিলযাল, কারিয়া অবলম্বনে ।
‡‡‡‡‡‡‡‡‡‡‡

মু. আমজাদ হোসেন ।
২৭ মে ২০২০ খৃষ্টাব্দ ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০২০ বিকাল ৩:১৮
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×