somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কতর্ৃপক্ষের সমীপে ঃ ফ্লাডিং নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গ

০২ রা অক্টোবর, ২০০৬ সকাল ১০:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বাংলা ব্লগের জগতে 'সামহয়্যারইনব্লগ'-এর আগমনকে আমি বরাবরই ওয়েব-এ বাংলা ভাষার প্রতিনিধি ব্লগ হিসেবে দেখে আসছি। এখানে লেখক যদিও রেজিষ্ট্রেশনকৃত সদস্যদের সবাই নন, কিন্তু পড়েন যে প্রচুর ভিজিটর; সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। একথা অনেকেই স্বীকার করেছেন, এমনকি আমি নিজেও যখন কোন পোষ্ট কিংবা মন্তব্য দেয়ার ইচ্ছে করি, শুধুমাত্র তখনি লগইন করি। সে হিসেবে এমন অসংখ্য ইউজার আছেন যারা প্রতিদিন অসংখ্যবার ব্লগে আসেন, পড়েন। এমনকি, কারো কারো লেখা পড়ে মনে হয় যে, তিনি বা তারা এই ব্লগকে তাদের লক্ষ্যের সহযোগী হিসেবেও বিবেচনা করছেন। যাই হোক না কেন, এই ব্লগ যে ওয়েব ভিত্তিক পাঠক ও লেখক মহলে কতটা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং উল্লেখিত দুই গোষ্ঠী এই ব্লগকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন, সে কথা বুঝাতেই এই ভূমিকা।

প্রসঙ্গ হলো, এটাকে আপনাদের অতি উদারতা বলবো না কি অবহেলা বলবো যে, কোন ধরনের দায়িত্বশীলতার পরিচয় পাচ্ছি না ফ্লাডিং-এর ব্যাপারে। পুরোনো পাঠকেরা না হয় তাদের পছন্দের লিস্টে এমন ব্লগারদের সংযুক্ত করে রেখেছেন, যাদের লেখালেখি তিনি ব্লগ খুঁজে খুঁজে পড়বেন। কিন্তু যারা নতুন আসছেন, তারা এটাকে ডিসকাসন ফোরামের মত দু'এক লাইনের ফোরাম ভেবেই হয়তো নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ছেন। আর এ কারণেই ক'দিন আগে কথা উঠেছিল যে, নতুনদের লেখা নেই কিংবা এসেই ঝিমিয়ে পড়ে কিংবা নতুনদের মধ্যে ভাল লেখক আসছেন না। আমি মনে করি এ ব্যাপারে কতর্ৃপক্ষের আরো বেশী যত্নবান হওয়া উচিত।

সৃজনশীল লেখালেখিতে যাদের হাত, তাদের ব্যাপারে বলতে পারি যে, কর্মব্যস্ত জীবনের ফাঁক-ফোঁকড়েই তারা নিজেদের লেখালেখিটাকে গতিশীল রাখেন বা রাখতে চেষ্টা করেন। আর তাই পুরোনো লেখা হলেও ব্লগে দিতে অন্ততঃ একদিন সময় নেন, কেউ বা দু'দিন। চাই তা যে কোন শালীন বিষয়েই হোক না কেন, যেমনটি আমরা দেখেছি- রাজনৈতিক অবস্থানের বিভিন্নতায়, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে, সামাজিকতার বিভিন্ন দিক এবং বিনোদন ইত্যাদিতে। আবার অতি উৎসাহে দিনে দু'টি পোষ্টও হতে পারে; এর বেশী কোনভাবেই করেন না বা করতে পারেন না। তাছাড়া যিনি সৃজনশীল লেখেন, তিনি এটাও চান যে, তার একটা লেখা পাঠকদের একটা বিরাট সংখ্যকের কাছে না পেঁৗছা পর্যন্ত তিনি সময় থাকলেও আরেকটি লেখা পোষ্ট করবেন না। সব মিলিয়ে ধরে নিতে পারি যে, একজন লেখকের জন্য চবি্বশ ঘন্টার দিনে সবের্্বাচ্চ দু'টো পোষ্ট হতে পারে; এর বেশী নয়। অবশ্য তেমন কারো মাথায় যদি ফ্লাডিং-এর বিকৃতি না চাপে।

যারা ফ্লাডিং করেন, তাদের উদ্দেশ্য কি? এ ব্যাপারে কয়েক প্রধানতঃ দু'টো ভাগ দিতে পারি- প্রথমঃ কেউ কেউ কখনো কখনো এমন কোন বিকৃত-রুচীশীলদের নোংরা পোষ্টকে প্রথম পাতা থেকে দূর করতে পর পর কয়েকটা পোষ্ট ঝেড়ে দেন। এটা একান্তই যে ব্লগের পরিবেশকে সুন্দর রাখার জন্য; তা পরিস্কার বুঝা যায়। কিন্তু এমন চিন্তার ব্লগার পাওয়া যাবে হাতে গোণা দু'এক জন মাত্র, তাও আবার সব সময় এমনটি করেন না একান্ত বাধ্য না হলে। এমনতর চিন্তা যে আমার মাথায়ও আসেনি কিংবা আমার ভেতরের দুষ্ট রিপুও যে আমাকে এমন ধারার ফ্লাডিং-এর তাড়না দেয়নি, তা নয়। কিন্তু বিবেকের প্রাবল্যে আমার সিদ্ধান্ত আমাকে তেমন বিকৃতি ঘটাতে দেয়নি। আলহামদুলিল্লাহ্। দ্বিতীয়ঃ যাদের মূলতঃ কথায় যেমন বলে 'বোমা মেরেও ... বের করা সম্ভব নয়' তেমন অবস্থা, অথচ তারা চান যে তাদের নামটি বা নিকটি এ সপ্তাহের অথবা সর্বোচ্চ ব্লগারের লিস্টে থাকুক, তারাই ফ্লাডিং-এর ক্ষেত্রে বেশী অগ্রগামী। এছাড়া সব ভাষাভাষীদের চ্যানেলেই দেখা যায় যে, একটা শ্রেণী থাকে যারা কোন ভাল কাজে কিছু ছাই ছুঁড়ে হলেও পণ্ড করতে চায় আর বড় কিছু ঘটাতে পারলে তো কথাই নেই। এদের জীবনের উদ্দেশ্যই হিংসা-বিদ্বেষ; যার বহিঃপ্রকাশ হলো যেখানেই ভাল কিছু দেখতে পাবে সেখানেই একটা ডিসটার্ব কিংবা গোলমাল বাধাঁবে, কেউ তাকে না ডাকলেও। এখন কতর্ৃপক্ষেরই চিন্তা করা উচিত কিভাবে এই প্রতিনিধিত্বকারী ব্লগের পরিবেশকে সুষ্ঠু রাখা যায়। কারণ, বাংলা ব্লগ যে আর হবে না এমনটি নয়, কিন্তু প্রতিনিধি হিসেবে দিশারী দায়িত্ববোধটা জাগ্রত হোক এটাই কাম্য।

অনেকের ফ্লাডিং-এর বিষয়বস্তু হয় সেই সব সুলেখক/সুলেখিকাদের মানহানী নিয়ে, যাদের লেখা পড়ার জন্যই শুধুমাত্র বহু ইউজার ছুটে আসেন এই ব্লগে। অথচ তাদের মধ্য থেকে অনেককেই ব্যক্তিগতভাবে বলতে শুনেছি যে, 'ব্লগ ছেড়ে চলে যাবেন', 'হাত গুটিয়ে নেবেন ধীরে ধীরে', 'অযথা সময় নষ্ট করছি না তো?' -এমনতর হতাশার কথাবার্তা। তাছাড়া অনেকেই তো ঘোষণা দিয়েই চলে গেছেন, যেমন- শর্মী, কালপুরুষসহ আরো অনেকেই। এটাকে কি কতর্ৃপক্ষ নিজেদের ব্যর্থতা ভাববেন না? নিজেদেরকে দায়িত্ব থেকে মুক্ত রাখতে পারতেন যদি কতর্ৃত্বটা আপনাদের হাতে না রাখতেন, কিন্তু সেটা যেহেতু সম্ভব নয়; বরং আরো ক্ষতিকর, তাই কতর্ৃত্বটাকে সম্পূর্ণ করুন। এতে ব্লগ, লেখক এবং পাঠক মহল সবাই উপকৃত হবেন।

এ ব্যাপারে আমার প্রস্তাবনা হচ্ছে- সম্ভব করতে পারলে এমন ব্যবস্থা করুন যাতে করে প্রত্যেক ব্লগার দিনে দু'টোর বেশী পোষ্ট যেন কোনভাবেই করতে না পারে। এতে সবাই সবার লেখাকে গুরুত্ব দিয়ে পড়তে পারবে এবং ফ্লাডাররাও অনুৎসাহিত হয়ে ভাল কিছু লিখতে চেষ্টা করবে। আর যদি দান করা বলদের মত ব্লগকে ছেড়ে দেন, তাহলে আমাদেরকেও অন্য চিন্তা করতে হবে হয়তো। তবে সর্বান্তঃকরণে চাইবো এই প্রতিনিধি ব্লগের পরিবেশ সুষ্ঠু থাকুক, ভাল থাকুক এবং সৃজনশীল থাকুক। (সম্ভাবনার কথা বললাম এ জন্য যে, টেকনিক্যাল বিষয়ে যারা পারদর্শী তারা কতর্ৃপক্ষকে পরামর্শ দিতে পারেন কিভাবে দিনে দু'টোর বেশী পোষ্ট করাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।)

সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় কামনা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বস্তিবাসী সেই অগ্নিকন্যাকে নিয়ে লেখা একটি কাব্যগাথা

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৫৫


ঢাকার আকাশ তখন ধুলোমাখা সন্ধ্যার রঙে ছিল ডেকে
বস্তির সরু গলিতে শিশুদের কান্না
নর্দমার স্রোতের মতো দীর্ঘশ্বাস ফেলে
সেই অন্ধকার জন্মঘরে প্রথম আলো দেখেছিল
এক বস্তিবাসী কন্যা শিরিন
এখনো এক অচেনা নাম
যার ভেতর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাবুল আলীই আমাদের বাংলাদেশের প্রতীক

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৩৭



আপনাদের কি এই ছবিটার কথা মনে আছে? এই বছরের শুরুতে চলতি বছরের জানুয়ারীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বেআইনিভাবে বাংলাদেশের জমিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মানুষ মানুষকে কীভাবে এত অপদস্ত করে এই ব্লগে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৪

আমি তো কারও সাতেও নাই পাঁচেও নাই। এত সময়ও নাই মানুষকে ঘাঁটার। ব্লগের ব্লগারদের সম্পর্কেও তেমন কিছু জানি না। তবে পোস্ট পড়ে কিছুটা আন্দাজ করা যায় -কে কী রকম। আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ কি শিখিয়েছে?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:০৬






অপমান, অপদস্থ থেকে বাঁচার উপায় শিখাইনি? ওস্তাদ মগা শ্যামী পাহাড়ে বসেও এসবের সমাধান করতে পারে, আপনি সামান্য অসুস্থতার জন্যও ব্লগে মিলাদ দেননি, দোয়া করেছেন কার জন্য? খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওরা দেশের শত্রু; শত্রু দেশের মানুষেরও...

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৮

ওরা দেশের শত্রু; শত্রু দেশের মানুষেরও...

অন্তর্জাল থেকে নেওয়া সূর্যোদয়ের ছবিটি এআই দ্বারা উন্নত করা হয়েছে।

ইসলামের পবিত্র আলো ওদের চোখে যেন চিরন্তন গাত্রদাহের কারণ। এই মাটি আর মানুষের উন্নয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×