somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউ: In a Better World (2010)

০৫ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছুদিন আগে রিভিউ দিয়েছিলাম গত বছরের শ্রেষ্ঠ বিদেশী ভাষার ক্যাটাগরিতে অস্কার জেতা আর্জেন্টাইন The Secret in Their Eyes মুভিটির।আজকে দেবো, এই বছরের বিদেশী ভাষার ক্যাটাগরিতে অস্কার জেতা ডেনমার্কের In a Better World মুভিটির।অরিজিনাল টাইটেল Hævnen যার ইংলিশ অর্থ হলো Revenge। ১১৯ মিনিটের ড্রামা ধাঁচের এই মুভিটি এক অর্থে ভালোই লেগেছে।কাহিনীতে তেমন গোলকধাঁধা নেই, বেশ সিম্পল একটি প্লটকে ঘিরে কেন্দ্রীভূত হয়েছে মুভিটি।পরিচালক বেশ যত্নের সাথে মুভিটি বানিয়েছেন।সবমিলিয়ে বলবো ভালোই হয়েছে। তবে এই ক্যাটাগরির অন্যান্য মুভিগুলো অদেখা হওয়ায় বলতে পারছিনা In a Better World মুভিটি Deserving winner কিনা।আমি এই মুভিটিকে ৭.৫ কিংবা ৮ দিতে পারি ১০ এ।



আসুন, এবারে জেনে নেই, মুভিটির কাহিনীর ব্যাপারে।আগেই বলেছি, প্লটটি বেশ সিম্পল।তাই Extra-ordinary কিছু না আশা করাটাই ভালো হবে।কাহিনি আবর্তিত হয় মূলত, দুটি ডেনিশ পরিবারকে ঘিরে।প্রথমে আসি Anton এর পরিবারের কথায়।Anton পেশায় এখন doctor যার কর্মস্থল হচ্ছে একটি African refugee camp এ।তার দুই ছেলে।১০ বছরের বড় ছেলের নাম Elias আর ছোটো ছেলে Morten।তার স্ত্রী Marianne ও পেশায় ডা্ক্তার।তবে Anton আর Marianne এৃর মধ্যে সেপারেশন চলছে।Anton পেশাগত দায়ি্ত্বে প্রায়শই দেশের বাইরে থাকে, আর Marianne সবকিছু নিয়ে বেশ স্ট্রাগলিং লাইফ কাটাতে থাকে।আর ২য় পরিবারটি হলো Claus এর।যার একটাই ছেলে, নাম Christian। অতি সম্প্রতি Christian এর মা ক্যান্সারে মারা যায়। এই ঘটনার পর তারা লন্ডন ছেড়ে ডেনমার্কে ফিরে আসে।Christian তার মায়ের মৃত্যুকে মেনে নিতে পারে না।সে অনেক ডিস্টার্বড থাকে।এ নিয়ে তার বাবার সাথেও সম্পর্কের অবনতি ঘটে।তার ধারনা বাবার অবহেলার কারনেই তার মা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে।
এরপর দেখা যায়, Christian আর Elias একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়ার কারনে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে।Elias কে তার স্কুলের কয়েকটি ছেলে বিশেষ করে Sofus র্খুব জ্বালাতো।একদিন Christian প্রতিবাদ করে, এবং তার হাতে আহত হয়।আরেকদিন Sofus Elias কে জ্বালাতে এলে Christian এই ঘটনার প্রতিশোধ নেয় এবং Sofus কে মারাত্বক আহত করে।এভাবে Christian আর Elias এর বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হয়।কালক্রমে আরও কিছু ঘটনা ঘটে।একসময় Christian আর Elias বিপদজনক কিছু কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে।যা তাদের বন্ধুত্বের উপর আঘাত হানে, এমনকি Elias এর জীবন সংকটাপন্ন হয়ে উঠে।আ্ত্মগ্লানিতে Christian আ্ত্মহত্যার চেষ্টা করে।পরিশেষে, তাদের অভিভাবকদের চেষ্টায় তারা নিজেদের জীবনদর্শনের নতুন পরিচয় পায়, মানবিক মূল্যবোধ, আবেগ, প্রতিশোধ আর ক্ষমার নতুন অর্থ খুঁজে পায় তারা।তাদের বন্ধুত্ব টিকে যায়।Christian আর Elias সবকিছু নতুন করে ভাবতে শেখে,Anton আর Marianne ও পরস্পর কাছে বলে আসে।

মুভিটির যেদিকটি আমার ভালো লেগেছে তা হলো, দুইটি পরিবারের মাধ্যমে দটি বিপরীতমুখী ধারনার অদ্ভুত মেলবন্ধনের ব্যাপারটি।একদিকে দেখি Christian কে, যে কিনা হাল ছেড়ে দেওয়াকে সবচেয়ে ঘৃণা করে, তার ধারনা তার বাবার এই হাল ছেড়ে দেয়া মানসিকতার কারনেই তার মা মারা গেছে।তাই সে কখনো হাল ছাড়তে চায় নি, সবজায়গায় সে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠে।অবশ্য পরে সে জানতে পারে, তার মা যখন ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধে টিকতে না পেরে নিজেই নিজের মৃত্যু চেয়েছিলো, কারন সেই অসহ্য যন্ত্রণা যেন তাকে কুঁড়ে খাচ্ছিলো।ক্যান্সারের কাছে তার বাবা-মা ছিলো অসহায়।সে যখন দেখে তার প্রতিশোধস্পৃহার কারনে তার বন্ধু Elias প্রায় মরতে বসেছিলো, তখন সে তার আবেগের অতিরিক্ততা বুঝতে পারে।যার পরিপূর্ণতা দেখি Elias এর বাবা-মা যখন Christian কে ক্ষমা করে দেয় এবং ওদের বন্ধুত্ব যখন আবার reform হয়।
আরেকদিকে দেখি, Anton এর জীবনে যখন তারই ভুলে তার সংসার ভেংগে যায়। সে প্রতিনিয়ত অপেক্ষায় থাকে Marianne তাকে ক্ষমা করে দেবে এবং তাদের জীবন আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।তাইতো তাকে দেখি, নিজের উপর আঘাতকারী লোককেও মাফ করে দিতে।দেখি, refugee camp এ এক কুখ্যাত ঘাতককে চিকিৎসা সেবা দিতে।পরে সে বুঝতে পারে, এই ঘাতকই সুস্থ্য হয়ে আরো বেশি মানুষ মারবে।তাইতো সে ঐ ঘাতককে তুলে দেয় উত্তেজিত জনতার হাতে।

এই মুভিটি বেশ যত্নসহকারে বানানো।বিশেষ করে ভিজ্যুয়াল দিক দিয়ে বেশ ভালো।মুভিটি আপনাকে দেখাবে প্রতিশোধস্পৃহার ভয়াবহ দিকটি।মুভিটির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বেশ ভালো, আর খুব পরিশীলিত মেকিংয়ের কারনে আপনার এই মুভিটি দারুন লাগবে।কাহিনির ফ্লো অসাধারন, আর দুইটি পরিবারের ঘটনা ইনটারলিংকড হওয়ায় আপনি বোর ফিল করবেন না।আমার কাছে মুভিটি ঐরকম উচ্ছ্বসিত মানের না হলেও আমি সাদামাটা মুভি হিসেবে বেশ উঁচু আসনে রাখবো।আমার ধারনা, শ্রেষ্ঠ মুভি হিসেবে অস্কার পাওয়ায়, যে প্রত্যাশা নিয়ে দেখা শুরু করেছিলাম তার ৭৫-৮০ ভাগ তৃপ্তি পেয়েছি।তবে এই প্লটকে ঘিরে এরচেয়ে বেশি কিছু আশা করাটা বোধহয় বাড়াবাড়ি হবে।



ডাউনলোড লিংক:
http://www.mediafire.com/?05358var8om9ivb
http://www.mediafire.com/?16cllc6an325wnd#1
http://www.mediafire.com/?vuqt6389hi87p95

মুভিটি দেখুন, কেমন লাগলো জানান।

ধন্যবাদ।
১১টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×