মাডোরডাম নেদারল্যান্ড এর হেগে অবস্থিত একটি পার্ক আর পর্যটকের আকর্ষনীয় জায়গা। যেখানে পুরা নেদারল্যান্ড এর যত নামকরা জায়গা, ঐতিহাসিক জায়গাকে আসল জায়গা থেকে ১:২৫ গুণ ছোট মডেল করে তৈরি করা হয়েছে। মডোরডাম না এলে নেদারল্যান্ড এর আসল মজায় পাওয়া যাবেনা। পুরা নেদারল্যান্ডকে এত ছোট আকারে যখন দেখছিলাম নিজেকে গালিভার মনে হচ্ছিল।
মাডোরডাম ১৯৫২ সালে খোলা হয়। ২০১২ সালে মাডোরডাম এর ৬০ বছর পূর্তি পালন করা হয়। মাডোরডামের নামকরণ করা হয় জর্জ মাডোরো নামে একজন ইহুদী আইন বিভাগের ছাত্রের নামে। যে জার্মানদের সাথে ডাচদের পক্ষে যুদ্ধ করে ১৯৪৫ সালে মারা যায়।
মিস্টার বি,বন,ভেন ডার স্টার্প নামে একজন “ডাচ স্টুডেন্ট সেনুটুরিয়াম” ফাউন্ডেশনের মেম্বার ছিল। যে ফাউন্ডেশন ছাত্রদের যক্ষা রোগের চিকিৎসা করতো ও ছাত্রদের পড়াশুনা করাতো। মিস্টার বি,বন,ভেন ডার স্টার্প জানতে পেরেছিল যে ইংল্যান্ডে একটা পার্ক আছে যেটার আয় থেকে লন্ডনের একটা হাস্পাতালে ডোনেট করা হত। মিস্টার বি,বন,ভেন ডার স্টার্প জর্জ মাডোরোর বাবা মায়ের সাথে একটা মিটিং করার পর তার বাবা মা মাডোরডাম প্রজেক্ট করার জন্য ফান্ড দেন । তখন এস,জে বোমা নামে একজন আর্কিটেকচার নিয়োগ দেয়া হয়, এবং তাকে ইংল্যান্ডের পার্কটা দেখতে পাঠানো হয় কারন তারা ঠিক এরকমই একটা পার্ক বানাতে চেয়েছিল।
মাডোরডামের যা কিছু বাড়িঘর, মানুষ গাছপালা সব মিশিনে তৈরি। কিছুদিন পরপর শুধু রঙ করা হয়। ওখানে যে মানুষ তৈরি করা আছে তা নেদারল্যান্ডের আবহাওয়ার সাথে মিল রেখে তাদের কাপড় পাল্টানো হয়। এক সময় ওখানে পর্যটকের সংখ্যা কমতে থাকলে তারা ২০১২ সালে আবার নতুন করে ৮ মিলিয়ন ডলার খরচ করে পার্কে অনেক নতুন কিছু সংযোজন করেছিল।
যদি এই মাডোরডাম না দেখে নেদারল্যান্ড থেকে চলে আসতাম অনেক কিছু দেখা থেকে বঞ্চিত হতাম। এই অল্প জায়গায় পুরা নেদারল্যান্ডকে দেখা, খালে জাহাজ চলছে, বাড়ির ভেতর গাড়ি চলছে , পার্ক, ফ্যাক্টরিতে ১ ইউরো কয়েন ফেললে সব চলতে থাকে অটোমেটিক, এ যেন এক বিস্ময়। বিমান বন্দরে প্লেন চলছে, ব্রিজের নিচে দিয়ে জাহাজ আসা যাওয়া করছে, ট্রেন চলছে, ঝড়না বেয়ে পানি নেমে আসছে সব কিছু দেখতে দেখতে সময় যে কখন চলে যায় টেরই পাওয়া যায়না।
প্লেনগুলিও উঠা নামা করে
শীপ পানিতে আসা যাওয়া করছে কিন্তু একটার সাথে আরেকটা ধাক্কাও লাগেনা
সমস্ত নেদারল্যান্ডকে এই মাডোরডামে ছোট করে উপস্থাপন করা হয়েছে। যতক্ষন এখানে ছিলাম মনে হচ্ছিল রুপকথার কোন দেশে আছি।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৭:৩৫