বাতাস মোটামুটি ভালোই ঠান্ডা। তাপমাত্রার স্কেলে ১৪/১৫ ডিগ্রী দেখালেও বাইরে বের হলে মনে হয় তাপমাত্রা আরও কম। সামার জ্যাকেট আর প্যাকেট করা হয়নি। দিনের সময়টাও ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছে। আর মাত্র কয়েকদিন তারপরই অন্ধকারে অফিস যাত্রা আবার অন্ধকারে ফিরে আসা, স্নো, বৃষ্টি, ঠান্ডা ইত্যাদি।
গতকাল অফিসে মেইল খুলেই দেখি বসের একটি মেইল। মেইলের সাথে এটাচমেন্ট হিসেবে একটি গান ও লিরিক। আমাকে গানটি শুনে অপিনিয়ন ব্যক্ত করতে হবে। গানটি ও নিজে গেয়েছে। শুনে ফোন দিয়ে একটু আলগা সমালোচনা করলাম। ড্রাম, মাউথঅর্গান অথবা গিটারের কাজ ভালোই। তবে গলাটা একটু চড়া। লিরিখটি বেশ সুন্দর। আমার জন্য জার্মানের পাশাপাশি ইংরেজিতে ট্রান্সলেট করে দিয়েছে। এতো ব্যস্ততার মাঝে কিভাবে যে লোকটি সময় করে গান অথবা থিয়েটার করে। যা আমার জন্য অসম্ভব প্রায়। জিঞ্জেস করলাম এই গানের ড্রাম আর মাউথঅর্গান কে বাজাইজে। বল্লো, ওর ফ্রেন্ড একজন বেলজিয়াম থেকে আর একজন আমেরিকা থেকে। ইন্টার্ন, থিসিস করার সময় বসের সাথে মিলে এইরকম পাগলামী করতাম। সবাই একটি গান চয়েজ করে বিভিন্ন বন্ধুরা বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন ইন্সট্রুমেন্ট বাজিয়ে পাঠিয়ে দিতো। আমরা দুইজন মিলে সফওয়্যারে কাট-পেষ্ট করে গান বানাতাম। এখন আর সেইদিন নাই। বসের দেখাই পাওয়া মুশকিল। সকালে সুইজারল্যান্ড, বিকেলে ইউ.কে, রাতে অন্য জায়গায়। আমাকে দেখে আফসুস করে বলে তুমি কতো সুখে আছো। আমি জার্নি করতে জীবন শেষ।
গানটি উতসর্গ করা হয়েছে ওর মাকে। আজকে যার জন্মদিন। শুধু জন্মদিন না আজকে ওর মা-বাবার ম্যারেজ ডে। আজ আরও অনেক কিছুই। বসের কঠিন একটি সমস্যা থেকে উত্তোরনের দিন। আজ আমার প্রজেক্টের ডেডলাইন। আজ আমার অফিস ফাকি দেওয়ার দিন। এবং আজকে আমারও জন্মদিন।
জন্মদিন ঘটা করে পালন করা অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি। তারপরও অনেকগুলো ম্যাসেজ এসে পড়ে। ফাক তালে ছোটবোন আমার পকেট খালি করে আমার জন্য সারপ্রাইজ গিফট কিনে

গতকয়েকমাস অফিস ফাকি দেওয়া হয়নি। প্রজেক্টের কাজ প্রায় শেষ। সপ্তাহখানেক সময় বাড়ানো হয়েছে। একটা জায়গায় এসে মোটামুটি ধরা খেয়ে আছি। Automatic Synchro Check আর Auto Re-close Control একটু ঘাপলা দিতেছে। এইগুলো বেশ কঠিন, বুঝি একটু কম। অবশ্য বুঝার চেষ্টাও করি কম। বিকেল হলেই পেঠে যে ইদুর দৌড় শুরু হয় তাতে মাথায় শুধু খাবারের চিন্তা। তখন পড়াশোনা সব চান্দের দেশে।
গত কয়েকদিন টার্গেট করেও অফিস ফাকি দিতে ইচ্ছে হয়নি। আজ কম্বলের তলা থেকেই ফোন দিলাম ম্যানেজারকে। একটু গলাভাঙ্গা ভাব করে বল্লাম শরীর খুব একটা ভালো না। সেক্রেটারীকে বলে দিও। ম্যানেজার বল্লো তুমি চিন্তা করো না। বিশ্রাম নাও। তখন ঘুম পালাইছে

এখানে সবাই শোয়াইন ফ্লো নিয়ে বেশ চিন্তিত। গত মিটিংয়ে বলা হয়েছে কারো জ্বর হলে অফিসে না আসার জন্য। আর ডাক্তার যদি বলে সত্যি সত্যি শোয়াইন ফ্লো, তাহলে বাসায় বসেই অফিস করতে হবে। আহ, কি সুখ।
দেশের জন্য কিছু চকলেট কেনা হলো। এই ৫/৭ কিলো। তারপরও অনেকগুলো কেনার বাকী ছিলো। যে যাবে সে নাকি বেশী নিতে পারবে না। রসমালাই বানাতে গিয়ে পুরো তিনলিটার দুধ নষ্ট। চিনির শিরায় দেওয়ার পর দুধ থেকে বানানো ছানা (যা এতো কষ্ট করে ৩০/৪০ মিনিট ডলে গোল্লা বানালাম) ভেঙ্গে আবার ছানা হয়ে যায়



চাঁদ দেখা গেলে রবিবার ঈদ। অবশ্য সবাই যেরকম কথাবার্তা বলা শুরু করেছেন তাতে শনিবারে যেভাবে হোক চাঁদ দেখবেনই

সবাইকে আগাম ঈদ মোবারক।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:৪৬