===================================

সকালে অফিসে আসতে আসতে একটা ভিডিও দেখছিলাম যেখানে একজন পুষ্টিবিদ শিশুদের চারটি খাবার দিতে নিষিধ করছেন। বলছেন এই চারটি খাবারই আপনার সন্তানকে পেট ভরা অনুভূতি দিচ্ছে আর মূল খাবার খেতে চাচ্ছে না। আর এই চারটি খাবারই অস্বাস্থ্যকর যা শরীরের জন্য মারাক্তক ক্ষতিকর। চারটি খাবার হচ্ছে- ১) চিপস-যাতে অতিরিক্ত পরিমানে টেষ্টিং সল্ট থাকে যা জ্বিহবার উপরি স্তরের স্বাদ অনুভূত হয় স্তরটাকে নষ্ট করে যারা নিয়মিত চিপস খায়। ২) চকলেট/ক্যান্ডি - ভালো মানের চকলেট/ক্যান্ডিতে পুষ্টিকর উপাদন থাকলেও অলি-গলি মোড়ের দোকানগুলিতে যে চকলেট/ক্যান্ডি/ললিপপ পাওয়া যায় তা স্বাস্থ্যকর নয়। অতিরিক্ত চিনি-রং-ক্যামিক্যালে ঠাসা। ৩) জুস - জুসের নামে বোতল জাত যেগুলো বাজারে পাওয়া যায় তা ন্যাচারাল জুস না। রং-ফ্লেবার-পিজারভেটিভ ইত্যাদিতে ঠাসা যা শুধু অস্বাস্থ্যকরই না বরং হজম প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়। ৪) সফট ড্রিংস - বাজারে প্রচলিত সব সফট ড্রিংস/এনার্জি ড্রিংসই শরীরের জন্য মারাক্তক ক্ষতিকর। বাচ্চারের আকৃষ্ট করতে মিডিয়াতে আকর্ষনীয় বিজ্ঞাপন দেয় আর অভিভাবকগনও হরহামেশাই বাচ্চাদের হাতে এই খাবারগুলো তুলে দিচ্ছে।
অফিসে এসে কাজের ফাঁকে পত্রিকা পড়ার অভ্যাস। পড়তে গিয়ে প্যারায় পরলাম। আজ সকাল থেকেই খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়টা দেখছি পিছু ছাড়ছে না। বাচ্চাদের খাদ্য নিরাপত্তার দিকটা পোকার মতো মাথার এপাশ থেকে ওপাশ দৌড়াচ্ছে। আমার বাচ্চাটাও তো এই অখাদ্যগুলো প্রতি আসক্ত। কিভাবে ওকে চিপস-ক্যান্ডি-জুস-ড্রিংস থেকে বাঁচানো যায় তা নিয়ে চিন্তা করছি অমনি আরেকটা নিউজ সামনে আসলো। "খাদ্যের বিষে নীল মানবশরীর"।
গত বছর সারাদেশ থেকে ১ হাজার ২৮২টি খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। যার মধ্যে ১৫২টি নমুনায় ক্ষতিকারক উপাদানের মাত্রা সরকার নির্ধারিত (অনুমোদিত) মাত্রার ওপরে ছিল। যেসব খাদ্য মানবস্বাস্থ্যের জন্য এক ধরনের সরাসরি হুমকি।
১) পাউরুটিতে আছে পটাশিয়াম ব্রোমেট:
২০২১-২২ অর্থবছরে বিএফএসএ সারাদেশ থেকে মোট ১৭৭টি পাউরুটির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে। এর মধ্যে ১৭১টি নমুনায় পটাশিয়াম ব্রোমেট ও ৬টি নমুনায় অনুজীবীয় দূষকের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
২) কোমলপানীয়তে ক্যাফেইন:
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড BDS 1123:2013 (Third Revision) অনুযায়ী প্রতি লিটার কোমলপানীয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ক্যাফেইন থাকবে ১৪৫ মিলিগ্রাম। সেখানে কোনো কোনো ব্র্যান্ডের পানীয়তে এ মাত্রা ছিল দ্বিগুণের বেশি।
৩) চিনিতে ম্যাগনেসিয়াম সালফেট, গুড়ে হাইড্রোজ:
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ৩১টি ও ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৬টি গুড়ের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ ৪৭টি নমুনার মধ্যে ২০টি নমুনায় হাইড্রোজের (হাইড্রোজেন সালফেট) উপস্থিতি মেলে।
৪) কেকে লেড:
ঢাকা থেকে কেকে ব্যবহৃত রঙের ২৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৪টি নমুনায় মার্কারি ও ১০টি নমুনায় লেডের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় মার্কারির উপস্থিতি না পাওয়া গেলেও ছয়টি নমুনায় লেডের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
৫) আচার ও সসে বেনজয়িক অ্যাসিড:
সারা দেশ থেকে সংগৃহীত ৬২টি আচার ও সসের মধ্যে ১৪টিতে বেনজয়িক অ্যাসিডের মাত্রা অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে অধিক পাওয়া যায়।
তথ্য সুত্র ও বিস্তারিত পড়তে - খাদ্যের বিষে নীল মানবশরীর
বসে বসে ভাবছি, বাচ্চা থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স্ক সবাই আমরা প্রতিনিয়ত যা খাচ্ছি তাতে শরীর সুস্থ্য থাকার তো কোন কারন দেখছি না। ক্যান্সার সহ নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হতে বাধ্য আমাদের শরীর।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





