somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী সাহেব : আপনার নিজে আত্মসমালোচনা করা দরকার

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীর বুকে আমরা মানুষ বসবাস করি। সেটা হঠাৎ করে নয় বা একসাথেও নয়। যুগ যুগ ধরে একের পর একের, এক ঘর থেকে এক বাড়ি, এক গোত্র থেকে আরেক গোত্র, পালাক্রমে বংশ, এলাকা, দেশ, এক দেশ থেকে আরেক দেশ, এভাবেই পৃথিবী। অর্থাৎ সামন্য থেকে অনেক। সে হযরত আদম (আঃ) বা এডাম থেকেই হোক আর ডারউইন মতবাদে বানর থেকেই হোক, আজকের পৃথিবীতে প্রায় ৭বিলিয়ন এর উপরে মানুষের বসবাস, এই মানুষগুলো একসাথে আসে নাই, এক-দুই-তিন-চার করে দশ-শত-হাজার-লক্ষ-কোটি-বিলিয়নে রূপান্তরিত হয়েছে।

সেই প্রাচীন কালকে আজকের কম্পিউটার যুগের সাথে তুলনা করলে চলবে না। আর পৃথিবীতে একটা সভ্যতায়ও মানুষ বসবাস করছে না। যুগে যুগে কত সভ্যতা এসেছে আর বিলীন হয়েছে। মনে করে দেখুন মিশরীয় সভ্যতার কথা, ফেরাউনদের দাপটের কথা, গ্রীক সভ্যতার কথা, সেই দূর্দান্ড প্রতাপশালী আলেকজান্ডারের কথা, আর আমি আপনি চুয়াল্লিশ-পয়তাল্লিশ বৎসরের বাংলাদেশ নিয়ে অতীতকে স্মরণে রেখে পথ চলা উচিৎ। আপনি যে বাঙালী সভ্যতার কথা বলেন, সেটা শুধু আপনার বাংলাদেশের না, কারণ বাংলাদেশ বাঙালী জাতীয়তাবাদে নয়, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে চলমান। বাংলাদেশে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতি বিদ্যমান, আর সব জাতি মিলেই বাংলাদেশ।

আপনাকে আমি শ্রদ্ধা করি। আপনার কলাম পড়া আমার একটা শখ বা নেশাও ধরতে পারেন। আমার মনে পড়ে, যখন আপনার কলাম পড়তাম, অনেক বন্ধু-বান্ধব আপনাকে পছন্দ করতো না বলে আমাকে নিষেধ করতো। অনেকে আপনাকে নাস্তিক মনে করে আর আমি আপনার কলাম পড়ি বলে আমাকেও নাস্তিক বলতো। এর মধ্যে কিছুদিন আগে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সাবেক মন্ত্রী জনাব কাদের সিদ্দিকী সাহেবের বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী সাহেব ইসলাম ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করে বসলেন, ঠিক আছে আরব সমাজ নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে, তাদের খারাপ দিক নিয়ে সমালোচনা করা যেতে পারে, তাইবলে কারো বিশ্বাস নিয়ে মন্তব্য করা কি ঠিক? খুব সাধারণ ভাবে, কোন মানুষ যখন কাউকে ভালোবাসে যেমন ধরেন কোন মেয়েকে, সে কখনো তার ভালোবাসাকে নিয়ে সমালোচনা করে না বরং কেউ করলে তারও প্রতিবাদ করে। আর ধর্ম, যারা পালন করে, তাদের সর্বোচ্চ বিশ্বাসের জায়গা। আপনাকেও দেখলাম ইসলাম ধর্ম নিয়ে সমালোচনা হোক আর আলোচনা হোক, করে বসলেন। তাইলে কি ধরে নিবো লতিফ সাহেব যে শ্রেণীতে বাস করেন, আপনিও সেখানে অবস্থান করছেন। কিন্তু আমিতো আপনার স্থান অনেক উপরে দিয়ে রেখেছি।

এরমধ্যে কিছু দিন আগে করলেন সিলেট বাসী নিয়ে কটুক্তি। বাজে মন্তব্য। আপনার বুঝা উচিৎ ছিল, বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী (দেলু রাজাকার) সিলেটি নিয়ে একবার মন্তব্য করে ক্ষমা পর্যন্ত চেয়েছে। আপনার কি অনুমান করা উচিৎ ছিল না যে আপনি একটা গোষ্টী, একটা গোত্র, একটা জাতির বিরুদ্ধে কথা বলছেন।

আপনার আরো মন্তব্য আছে। একবার পড়েছি শেখ হাসিনাকে নিয়েও মন্তব্য করেছেন। লিখেছেন, জাতির জনক শেখ মুজিব সাহেব জীবিত থাকলে, আপনি দেশে গেলে অতি আদর করে ডেকে নিতেন। কিন্তু শেখ হাসিনা আপনাকে পাত্তা দিচ্ছেন না বলে বুঝাতে ছেয়েছিলেন, সেটা ১৯৯৬ থেকে ২০০০ সালের আওয়ামিলীগ ক্ষমতার সময়। আরতো রইলো অন্য দলের লোকদের সমালোচনা।

আপনি আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী। কোন ব্যক্তি নয়, এক সম্মান। আপনার অনুসারীর সংখ্যা কম নয় কিন্তু। আপনি সেই ব্যক্তি যার রচিত কবিতা আজ গান হয়ে বাংলাদেশের শহীদ দিবসে ব্যবহৃত হয়। আপনার কি মনে হয় না, যে লোকও আপনাকে পছন্দ করে না, সেও মহান শহীদ দিবসে বাধ্য হয়ে মুখস্ত না করলেও ঠোঁটস্ত করে গাইতে হয় 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী....' যেটা আজ পৃথিবীকে মানুষের কাছেও পরিচিত হচ্ছে মহান আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে।

দয়া করে আপনি কোন পক্ষের পক্ষে লেখা বাদ দিন। ঠিক আছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে লিখবেন। লিখেন। এটাতো কোন পক্ষ না, এটা বাংলাদেশের পক্ষে। যে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করবে, সেতো বাংলাদশেকেই অস্বীকার করবে। আর এই মুক্তিযুদ্ধ হঠাৎ করে আসেনি, যুদ্ধ করে এসেছে। আর যুদ্ধ করেছে অনেক যোদ্ধা। তাই যোদ্ধাদেরও সমালোচনা করা ঠিক না। এ নিয়ে পরে আরেকদিন লিখবো।

আমি আপনাকে সম্মান করি। আশা রাখি আরো সম্মান করার সুযোগ করে দিবেন। ধন্যবাদ। আর কোন ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×