''যার স্নেহের কোন তুলনা নাই,
যার ভালবাসা স্বার্থবিহীন,
সে যে আমার মা , আমার জননী,
তারে ছাড়া পৃথিবী শান্তিবিহীন।''
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ডাক মা। এত আবেগ তার ডাকে। এত ব্যকুলতা তার স্মরণে। এত মধুরতা তার দর্শনে। মা আল্লাহ্ তা'লার শ্রেষ্ঠতম নেয়ামত।
কিছুদিন আগে চলে গেল মা দিবস। এই জিনিষটি পশ্চিমা সংস্কৃতিথেকে আগত এবং আমারদের সমাজে এটি মোটামুটি আসন গাড়তে সক্ষম হয়েছে। যদিও ভালবাসা দিবসে তরুণ তরুণীদের যে উচ্ছ্বাস আবেগ লক্ষ্য করা যায়, মা দিবসে তার ছিটে ফোটাওপরিলক্ষিত হয়না। ভালবাসা মানে যে এরা কি বুঝে খোদা তা’লাই ভাল জানেন। সে যাই হোক।একবার যখন এটা আমাদের মাঝে প্রচলন হয়েছে তা আমরা আর এড়িয়ে চলতে পারবনা।
সংস্কৃতির এটি একটি রিতি উপর থেকে নিচের দিকে ধাবিত হয়।প্রভাবশালী জাতির সংস্কৃতি অন্যদের মাঝে অনুপ্রবেশ করবেই। আপনি এটাকে বেশিদিন রোধকরতে পারবেননা। তাই এই ক্ষেত্রে প্রতিষোধক হল আগত জিনিষটাকে নিজেদের মত করে গড়ে তোলা।
তরুন সমাজের মাঝে এই দিনে যদি মায়ের অধিকারের ব্যপারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারি তাই বা মন্দ কি!যেমন আমরা এই দিনে তরুণ সমাজের কাছে কুরআন এবং হাদিসে মায়ের সম্মান, মর্যাদা, এবং তাদের অধিকার এই বিষয় গুলি তুলে ধরতে পারি। এতদলক্ষ্যে সেমিনার, সিম্পজিয়াম, রচনাপ্রতিযোগিতা ইত্যাদি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারি।
আপনার মনে হতে পারে আমাদের সমাজে সন্তানেরা মায়েদের ব্যপারে খুবি যত্নশীল। তারা তাদের মাকে অনেক ভালবাসে। না জনাব। আমাদের তরুনেরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারলে মাকে আর চিনেনা। মায়ের কর্তব্যের ব্যাপারে থাকে উদাসীন। অথচ আল্লাহরাব্বুল আলামীন কুরানের বিভিন্ন জায়গায় মায়ের ব্যপারে সন্তানদের কে সতর্ক করেছেন।যেমনঃ
“ তার মা তাকে গর্ভধারন করেছে, কষ্টের উপর কষ্ট সহ্য করেএবং তাকে দুধ পান করিয়েছে দু’বছর’’
“ তোমরা তাদের (বাবা-মা) উদ্দেশ্যে ‘উফ’ শব্দটিও বলোনা’’
“আর তারা যদি তোমার সাথে শির্কের ব্যাপারে বিতর্ক করে, যে ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তবে তোমরা তাদের আনুগত্য করোনা এবং তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার কর’’
ইত্যাদি আরও অনেক আয়াতে। এছাড়াও নবী(সাঃ) অসংখ্য হাদিসেমায়ের ব্যপারে আমাদেরকে দায়িত্বশীল হতে নির্দেশ করেছেন। যেমনঃ
“এক ব্যক্তি নবীজীর (সা.)এর কাছে এসে বলল, সদ্ব্যবহার পাওয়ার অধিকার বেশি কোন মানুষের? তিনিবললেন, তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপরও তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপরও তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপর তোমার বাবা”
“পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, আর পিতা-মাতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন”
“আবু দারদা রা.বলেন, আমি নবীজীকে স. বলতে শুনেছি, পিতা-মাতা জান্নাতের মাঝের দরজা। যদি চাও, দরজাটি নষ্ট করে ফেলতে পারো, নতুবা তা সংরক্ষণও করতে পারো’’
“একদা নবীজী স.বললেন, ধ্বংস হোক। ধ্বংস হোক। পুনরায় ধ্বংসহোক। বলা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কার কথা বলছেন? তিনি বললেন, যেতার পিতা-মাতা উভয়কে বা কোনো একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেয়েছে, অথচ এরপরও সে(তাদের খিদমত করে) জান্নাতে যেতেপারে নি’’
ইত্যাদি আরও অনেক হাদিস।
এই আয়াত বা হাদিসগুলি কয়জন তরুণ জানে? মা দিবস আমাদের জন্য একটি সুযোগ তাদেরকে সচেতন করার। কুরআন এবং হাদিসের উপর ভিত্তি করে মা-বাবার প্রতি তাদের ভালবাসা গড়েউঠুক, দায়িত্বশীলতার সৃষ্টি হোক।
মাকে ভালবাসি বলার প্রয়োজন নেই। তবু কেন যেন বলতে ইচ্ছে করে, মা তোমায় ভালবাসি। ভালবাসতে চাই সারাটি জীবন।
আমাদের সকলের উচিত মা-বাবার জন্য এই দোয়াটি সবসময় করা,
“ রাব্বিরহামহুমা কামা রব্বায়ানি সাগিরা’’
হে আমার প্রতিপালক, তাঁদের প্রতি রহম কর, যেমনটি তারা আমাকে করেছিল ছোটবেলায়।
আব্দুর রহমান নাঈম।
Click This Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




