somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাবেকুব জাতক কথন - পাঁচ

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মহাবেকুব জাতক কথন - পাঁচ

০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখের "প্রথম আলো" পত্রিকায় একটি খবরের শিরোনামে "বেকুব" শব্দটি দেখে নড়েচড়ে বসলুম । আমার মতো বেকুব কেউ তাহলে আছে !

পত্রিকার খবর অনুযায়ী, ইলিয়াস কাঞ্চনকে ‘বেকুব’ বললেন শাজাহান খান । সম্প্রতি রাজশাহীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের বিভাগীয় সম্মেলনে ফেডারেশনের সভাপতি ও সাংসদ শাজাহান খান প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন কথা বলেছেন । সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ নিয়ে "নিরাপদ সড়ক চাই" আন্দোলনের প্রধানপুরুষ ইলিয়াস কাঞ্চনের বলা - "এই আইনের যদি সংশোধন হয়, তাহলে বাংলাদেশ হেরে যাবে।" এই কথার প্রেক্ষিতে শাজাহান খানের মন্তব্য - "কত বড় বেকুব হলে এ কথা বলতে পারেন, আমি আশ্চর্য হয়ে যাই।"

আশ্চর্য হয়ে আমার মতো মহাবেকুবও আরও বেকুব হয়ে গেছি এমন কথায় । কেন বেকুব হয়েছি বলি - যদি কেউ " সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন ছাড়া সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখলে বাংলাদেশ হেরে যাবে" বলেন তবে কি তিনি একটা বেকুব ?
"নিরাপদ সড়ক চাই" তো এখন " হর ঘর কি আওয়াজ" হয়ে গেছে । এর অন্যথা ঘটা মানেই তো দেশের আপামর মানুষের চাওয়াটুকু টসকে যাওয়া । এটা তো হেরে যাওয়ারই সমান! দেশের মানুষ হেরে যাওয়া আর দেশ হেরে যাওয়া যে একই কথা এটা বোঝার মতো মগজ কি শাজাহান খানের নেই ? নাকি দেশটাকে তিনি নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি ধরে নিয়ে ভেবেছেন যে, সে সম্পত্তি তার হারানোর কথা নয় ?
এমন হেরে যাওয়ার কথা বললেই আপনি "বেকুব", এমন কথা শুনে আপনারও আসলে বেকুব হয়ে যাওয়ারই কথা ।

মজার ব্যপার হলো, ঐ সভাতেই কিন্তু শাজাহান খান বলেছেন, "সড়ক পরিবহন আইনটি একটা প্রেক্ষাপটে তাড়াহুড়া করে পাস করতে হয়েছিল। ঢাকায় একজন ছাত্র এবং একজন ছাত্রী গাড়িচাপায় যে মারা গেল, মহাখালীতে; তারপরের পরিস্থিতি আপনাদের জানা আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রছাত্রীরা তখন আন্দোলন করছিল।"
এর মানে এটা স্পষ্ট যে, সদম্ভেই শাজাহান খান স্বীকার করছেন; সড়ক পরিবহন আইনটি তাড়াহুড়ো করে পাশ করা হয়েছে । তাড়াহুড়ো করে পাশ করা আইনে অনেক গলদ থাকার সম্ভাবনা তো থাকেই । তারপরেও তাদের সেই তাড়াহুড়ো করে পাশ করা আইনটিকে যদি না সংশোধনের কথা বলা হয় তবে "বেকুব" তকমা যারা মারতে চান তারা নিজেরাই যে বেকুব সেটা কি তারা বোঝেন ? বোঝেন না বলেই মুখ চালাতে গিয়ে বেশীরভাগ সময়েই স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়ে ফেলেন তারা । এটা আমাদের প্রায় সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের চরিত্র ।

এমন লোকেরা ( শাজাহান খান ) যে কেমন বেকুব তার আরও একটু নমূনা -
ঐ সভাতেই শাজাহান খান বলেছেন, "যুগোপযোগী আইন করার জন্য ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আমরাই কিন্তু দাবি তুলেছিলাম। আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো তুলে ধরেছি। তিন মন্ত্রী এই কমিটির সদস্য ছিলেন, সচিব ছিলেন কয়েকজন। তাঁরা সবাই কিন্তু আমাদের দাবির যেসব দিক যৌক্তিক, সেগুলো গ্রহণ করছেন।"

এমন কথাতে এই মহাবেকুবের মতো আপনারাও বেকুব না হলে ভাবতে পারেন - যুগোপযোগী আইনই যদি হবে তবে সেখানে সবটাই তো যৌক্তিক হবে, অযৌক্তিক কিছু থাকার কথা নয় । অযৌক্তিক কিছু থাকলে তা তো আর যুগোপযোগী হয়না । তা হলে এমন আইন পাশ করা কেন হলো ? আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনকে থামিয়ে দিতে ? শাজাহান খানেরা ভুল করে ফেলেছিলেন তখন ?
অথচ শাজাহান খানদের তোলা যুগোপযোগী আইন করার জন্যে যে দাবীগুলো পেশ করা হয়েছিলো তাতে যে অযৌক্তিক দাবীও ছিলো তা খান সাহেবের বক্তব্যেই স্পষ্ট । তুলে ধরা দাবী যদি যৌক্তিকই হবে তবে সেখানে তো অযৌক্তিক কিছুই থাকার কথা নয় অথচ তার কথা মতো, কমিটির সদস্যরা তাদের দাবীর যৌক্তিক দিকগুলোই নাকি গ্রহন করেছেন , অযৌক্তিক দাবীগুলো বর্জন করেছেন ।

কেমনে কি !!!!!!!!

এখন মহাবেকুব কি এই জাতক একা নাকি শাজাহান খান গংও আছেন এই দলে ?

ছবি সূত্রঃ ইন্টারনেটের '"ইমোজী" তে সার্চ করে পাওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৯
৩৫টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×