হাজারো প্রযুক্তির যাতাকলে মানুষের জীবন যেখানে গতিশীল আর সুখময়, সেখানে মানুষের নৈতিকতার ভ্রুণকে পরিশুদ্ধ রাখার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া অতীব প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ছে দিন দিন। বর্তমান এই যুগ সন্ধিক্ষণে নৈতিক মূল্যবোধের যে অভাব পরিলক্ষিত হয় তা অদূর ভবিষ্যতে আমাদেরকে কোথায় নিয়ে দাড় করাবে, তা অবশ্যই ভাবার মতো বিষয়। একদিকে, মানুষ আধুনিক হতে ব্যস্ত আর অন্যদিকে, এই আধুনিতার অযুহাতে সমাজে যেই বেহায়াপনার চর্চা প্রচলিত হচ্ছে তা প্রগতিশীলতার হালকা সমার্থকে কোনভাবেই ব্যবহার্য নয়।
প্রতিদিনই পত্রিকার পাতায় ধর্ষণ, খুন আর অসামাজিক কার্যকলাপের যেই চিত্র ফুটে উঠে তা অকল্পনীয়। ভাবা যায়! এক মেয়ে তার অন্ধ মাকে চিকিৎসার জন্য সন্তানসহ ভারতে যায়। কিন্তু কিছু যুবক তার সন্তান ও মায়ের কাছ থেকে তাকে রেলস্টেশনে বিচ্ছিন্ন করে ধর্ষণ করার পর স্টেশনের পাশেই অমানবিকভাবে শারীরিক জখমের মাধ্যমে হত্যা করে লাশ ফেলে যায়। সমাজে তো যে তার অনাগত ভবিষ্যতের পানে পা বাড়ায় এমন কোমলমতি শিশুর সাথেও জড়িয়ে আছে এই ধরণের বহু পৈশাচিক ঘটনার দুঃসহ স্মৃতি। বন্ধুত্বের সরল সম্পর্কের অযুহাতে বহু মেয়েই নির্যাতিত হয়। এখানে প্রায়ই মেয়েদের পোশাককে দায়ী করা করা হয়। আচ্ছা একটা মেয়ের পোশাকই যদি আমাকেে এমন অসভ্য পথে নিয়ে যেতে পারে, তাহলে এখানে আমার ব্যক্তিত্বটার ওজন বা শক্তি কোথায়? একটা মেয়ে অর্ধ নগ্ন হয়ে রাস্তায় বের হলেই কি নিজের ব্যক্তিত্বের হায়া-লজ্জা বিসর্জন দিতে হবে? যেখানে মূল্যবোধের লেশ মাত্র নেই সেখানে পোশাকের সভ্যতা খোঁজ করে লাভ নেই। দায় সকলেরই ব্যক্তি থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পর্যন্ত। তবে আমরা হয়তো কিছু শ্লোগান আর ব্যানার-ফেস্টুনের সমারোহ করেই দায়িত্ব শেষ করি। কিন্তু যে পরিবার বা মানুষটির সাথে এমন ঘটে, তার অবস্থা কি কোন ভাবে বোধগম্য হয় এ সমাজ বা কুঞ্চিত আইনের? উত্তরটি সবারই জানা।!!!
যাই হোক, একের পর এক নির্যাতিত হবে আমাদের এই সমস্ত অনুভূতিগুলো আর ধর্ষিত হবে আমাদের ক্ষোভগুলো তবুও এভাবেই এগিয়ে যাবে লাগামহীন পরিস্থিতি। এর কোন নিস্তার নেই তবে যা আছে তা হলো প্রতিকার। ধর্মীয় চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন আর নৈতিক পরিশুদ্ধতা ছাড়া এসব থেকে রেহাই পাওয়ার প্রত্যাশার অপর নাম বিস্তির্ণ বালুকারাশির মাঝে মরীচিকার ন্যায় রূঢ় বাস্তবতা।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৯