somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভোটার শ্রেণীবিন্যাস !

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা সবাই কিছুটা উত্তপ্ত, চিন্তিত এবং শঙ্কিত। এখন আড্ডাবাজির মূল উপাদানই হচ্ছে নির্বাচন। মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীদের চৌদ্দগুষ্ঠীর খবর আমাদের নখদর্পনে। কিন্তু প্রার্থীদের চাইতেও গুরুত্বপূর্ন যে বিষয়টি আমাদের চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে সেটি হচ্ছে আমরা ভোটাররা। মুখে যে যাই বলিনা কেন আমরা কাউকে না কাউকে ঠিকই সমর্থন করি, সেটা মার্কার কারনে হোক, বা অন্য কোন কারনে। নির্বাচনের সেই অন্যতম গুরুত্বপূর্ন উপাদান 'ভোটার' দের শ্রেণীবিন্যাস নিয়েই আমার এই লেখা।


১. হার্ডকোর ভোটার:
এই জাতীয় ভোটাররা কোনো কিছুই মানেননা। তাদের সমর্থিত দলের জন্য তারা নিবেদিতপ্রাণ, তাদের কোনো দোষত্রুটিও এই ভোটারদের চোখে পড়েনা, আর পড়লেও সেটি কৌশলে বিরোধীপক্ষের সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত হিসেবে চালিয়ে দেন। হার্ডকোর ভোটারদের আবার দুভাগে ভাগ করা যেতে পারে:

(ক) হাতে-কলমে হার্ডকোর ভোটার: এই ধরনের ভোটাররা শুধু কথায় নয়, কাজেও হার্ডকোর, যেকোন রাজনৈতিক সভা সমাবেশে এদের অগ্রণী ভুমিকা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। পুলিশ অথবা বিরোধীদলের সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দেয়া, টিভি ক্যামেরার সামনে নাটক করে মাটিতে লুটিয়ে পড়া ইত্যাদি কাজে এরা অত্যন্ত পারদর্শী। যেকোন আন্দোলন বা হরতালের সময় এদের কার্যকলাপ প্রথম পাতায় স্হান পাবার যোগ্য। এই ধরনের ভোটারদের মধ্যে জঙ্গী মহিলা এবং হিজরাদের উত্থান আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আওয়ামী লিগের হিজরা বাহিনী, ইডেন মহিলা কলেজের জঙ্গিবাহিনী, মতিয়া চৌধুরী, বিএনপির সাকাচৌ, এবং জামায়াতে ইসলামীর সকল সক্রিয় সদস্যরা এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।

(খ) খাতা-কলমে হার্ডকোর ভোটার: এই ভোটারদের কর্মকান্ড কথাতেই সীমাবদ্ধ। এরা অল্পতেই উত্তেজিত হন এবং অন্যদের মতামতের ধার ধারেননা। এই শ্রেণীর ভোটাররা সকল যুক্তি তর্কের উর্দ্ধে, কারণ এরা বাস্তবতা বিবর্জিত। এই শ্রেণীর উৎকৃষ্ট উদাহরন বিএনপির সেইসব সমর্থক যারা ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলাকে তৎকালীন সরকার পতনের জন্য আওয়ামী লিগের সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা বলে মনে করেন।


২. বংশগত ভোটার
এই জাতীয় ভোটারদের নিজেদের তেমন কোন পছন্দ নেই, বংশগতভাবে এরা একই মার্কায় ভোট দিয়ে যান। এই শ্রেণীর ভোটারদের মধ্যে ভোটপ্রার্থীদের আত্বীয়স্বজন উল্লেখযোগ্য।


৩. সমসাময়িক ভোটার:
এই শ্রেণীর ভোটাররাই বাস্তবজ্ঞান সমৃদ্ধ। চিন্তাভাবনা করে সমর্থন করেন এবং নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন, যদিও এই ধরনের ভোটার সংখ্যায় নগন্য।


৪.দিশেহারা ভোটার:
এই শ্রেণীর ভোটারদের মধ্যে সিদ্ধান্তহীনতার প্রভাব লক্ষণীয়, কাকে ভোট দেবেন বা আদৌ ভোট দিবেন কিনা এই নিয়ে এরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন, এবং অধিকাংশ সময় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে এরা আবিষ্কার করেন যে তার ভোটটি ইতমধ্যে দেয়া হয়ে গেছে। অতঃপর এরা খুশীমনে বাড়ী ফিরে যান।


৫. মীরজাফর ভোটার:
এই জাতীয় ভোটাররা প্রার্থীদের চেয়েও এককাঠি বাড়া। সব প্রার্থীদের থেকে সকল সুযোগ সুবিধা নিয়ে, মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সময়মত ঘটনা ঘটিয়ে দেন। এই ধরনের ভোটারদের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়লেও প্রমাণের অভাবে এরা পার পেয়ে যাচ্ছেন।


আমরা অনেকেই হয়ত একের অধিক শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত (আমি নিজেও), আবার অনেকে হয়ত কোন শ্রেণীতেই নিজেকে মেলাতে পারছেননা। হয়ত আরো অনেকভাগে ভাগ করা যায় ভোটারদের। আপাতত এর বেশী কিছু মনে পড়ছেনা।

বি: দ্র: কোন দলের পক্ষপাতিত্ব নয়, উদাহরনগুলো যেভাবে আমার মনে এসেছে সেই ভাবেই উপস্হাপন করা হয়েছে। আপনাদের সবরকম উদাহরনকে স্বাগতম।

ধন্যবাদ........
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৪২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×