আমার দাদা নাকি খুব রাগী ছিলেন ।( আমি অবশ্য দেখিনি ) উনার খড়মের শব্দ শুনলে নাকি ছেলে বুড়ো সবায় স্বেচ্ছায় গুম হতেন।
আমাদের বাথানে প্রচুর গরু ছিল । আমার এক জেঠাতো ভাই ( দাদার বড় ছেলের বড় ছেলে) নুর আলম (পরবর্তীতে হাজী , বর্তমানে মরহুম) বাথান দেখাশুনা করতেন । একবার তিনি একটা ষাঁড় স্পেশাল কেয়ারে মোটা তাজা করছিলেন । দৈনিক গোসল করিয়ে গায়ে তেল দেয়া, শিঙের পরিচর্যা করা , দুই বেলা রশি ধরে চরানো সব নিজ হাতে করছিলেন ,মোট কথা ওই ষাঁড়টিই ছিল আলম ভাইয়ের ধ্যান জ্ঞান । উদ্দেশ্য শিতের সিজনে ষাঁড়ের লড়াইয়ে অংশ গ্রহন করা ।
------ ঈদের নামাজ পড়ে সবায় বাড়ি ফিরল । কামলা আর উৎসুক লোকজন বাড়ির সামনে ভিড় করছে কোরবানি দেখার জন্য ।
দাদাজান কামলাদের দেখিয়ে দিলেন, ওই কালো ষাঁড়টা কোরবানি করে দাও । আলম ভাইর বুকটা ধক করে উথলো , হায় হায় বলে কি ? এত সাধের পোষা ষাঁড় । কিন্তু দাদার সামনে কথা বলবে কে?
তার পরও মিন মিন করে বললেন, দাদাজান আমি চাইছিলাম লাল ষাঁড়টা কোরবানি দিতে।
দাদাজান লাল ষাঁড়টার দিকে তাকিয়ে বললেন,
তোর যখন ইচ্ছা তাহলে
,
,
,
,লালটাও কোরবানি করে দে ।বলেই খড়মে শব্দ তুলে বাড়ির দিকে চলে গেলেন।
দাদাজানের কথা শুনে আলম ভাই চোখে অন্ধকার দেখছিলেন ,
হুশ হলে মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখেন দুটোই শেষ ।
এর খানিক পরে চোখের পানি মুছে তিব্র অভিমানে ঘোষণা দেন,' আমার জন্য এই কোরবানির গোস্ত খাওয়া হারাম ।