somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনার বেকারত্বের জন্য স্রেফ আপনিই দায়ী।

০২ রা এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনার বেকারত্বের জন্য স্রেফ আপনিই দায়ী। আপনি জানেন আপনার টাকার প্রয়োজন। কিন্তু আপনি আপনার পছন্দের কাজ বা চাকরি পাচ্ছেন না। এই যে পছন্দের কাজ বা চাকরি সেটার জন্য আপনি কতটুকু যোগ্য? আপনার যে এক্সপেক্টেড সেলারি সেটা আপনারে কেনইবা দিবে কোম্পানির মালিক? আপনার মুখের কথায় বা আপনার কাগজ পত্রে আপনার যোগ্যতা মাপা হবে নাকি আগে আপনাকে প্রমাণ করতে হবে কাজে আপনি আসলেই দক্ষ। যেমন আমি একটা কথা প্রায় বলি আমার অধস্তনদের, ডোন্ট টেল মি হাউ গুড ইউ আর; জাস্ট শো মি হাউ গুড রিয়েলি ইউ আর। মাই ওয়ান সাইন গিভ ইউ মোর মানি!

আপনি একদিন বেকার থাকার চাইতে দৈনিক লেবারি করাও উত্তম এমনকি সেটা সুইপারি হইলেও। কাজ স্রেফ কাজই। আমার এখনো মনে পড়ে আমি যখন ২০০৯ সালে আমার ২১ বছর বয়সে চায়নাতে যাই ট্রেনিংয়ের জন্য সেখানে আমাদের নিয়মিত রুটিন কাজ ছিলো টয়লেট ক্লিন করা। এবং সেই ক্লিন ঠিকঠাক মতন হইছে কি না তা আরেকজন এসে চেক করতো। প্রথম প্রথম ব্যাপক ইগ্যুতে লাগতো কিন্তু পরে ঠিকঠাক হইগেছে। আমার জীবনে সেই ট্রেনিংটা আমার জীবনকে কমপ্লিট বদলায়ে দিছে। সেই ট্রেনিং আমাকে শেখাইছে, বিফোর ইউ টেলিং সামওয়ান, ফাস্ট ইউ ডু ইট বাই ইউরসেল্ফ।

কাজের ক্ষেত্রে আমরা কখনোই সার্টিফিকেট, বংশ পরিচয়, সামাজিক অবস্থান, ধর্ম বর্ণ, ব্যাক্তিগত বিশ্বাস অবিশ্বাস, যাপিত জীবন বিচার করি না। আমরা প্রথমে শেখায় ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ পর্যন্ত কাজটি তুমি আমার মতন করতে পারছোনা। আর আমরা তাদেরকে কখনোই কাজে রাখি না যখনই বুঝতে পারি, যারা কাজের বাচ বিচার করে। মানে আমি এই কাজ করবো না ঐ কাজ করবো। আমরা নিয়োগের সময় বলে দিই নতুনদেরকে, আমরা তোমাকে কাজ দিবো বাট কি কাজ দিবো সেটা তোমার রিলেটেড বস ডিসাইট করে দিবে। তুমি বলতে পারবেনা করবোনা বা পারবোনা। তোমার কাজ স্রেফ কাজ করা। তুমি কাজ পারতেছো কি পারতেছোনা তোমার বস বুঝবে, তুমি না।

কিন্তু অত্যন্ত দু:খের বিষয় আমার বাঙলাদেশে চাকরি বা কাজ প্রত্যাশিদের মগজে গেঁথে থাকে চাকরি মানে, একটা চেয়ার-টেবিল। সামনে একটা কম্পিউটার। চেয়ারে সে বসে থাকবে তার কাছে ফাইল নিয়ে আসবে একটা সুন্দরী নারী আর সে শুধু সাইন করবে এবং মাস শেষে তার এক্সপেক্টেশন অনুযায়ী সেলারি নিবে!

ট্রাস্ট মি মিস্টার অর মিসেস, চাকরি এমন নয়। চাকরি তোমার চিন্তার বহুত বাইরের কিছু। চাকরিতে রাতারাতি বড় হওয়ার সুযোগ নাই। এইখানে সময় এবং অভিজ্ঞতা বহুত বড় বিষয়। তুমি যদি চাকরিতে কাজকে ফোকাস না করে শুধু সেলারিকেই ফোকাস করো তাইলে কখনোই তুমি এক্সপেক্টেড সেলারি পাবে না। তুমি যদি সেলারির কথা ভুলে গিয়ে শুধু কাজকেই ফোকাস করো তাইলে কাজ তোমার এক্সপেক্টেড সেলারিকে আনএক্সপেক্টেড সেলারিতে পৌঁছায় দিবে।

২০০৯ সালে আমার এক্সপেক্টেড সেলারি ছিলো মাত্র দশহাজার টাকা। কিন্তু আমার সেলারি ধরা হইছিলো ছয় হাজার টাকা। এবং তখন আমার চাইনিজ বস ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংলিশে আমাকে বলেছিলো, রাইট নাউ ইউ ডোন্ট নো এনিথিং। সো রাইট নাউ আই কান্ট গিভ ইউ ইউর এক্সপেক্টেড সেলারি। বাট আই ক্যান গ্যারেন্টি ইউ, হোয়েন ইউ নো এভরিথিং ইন ইউর রিলেটেড ওয়ার্ক ট্রাস্ট মি ইউ উইল গেট মোর এন্ড মোর সেলারি হুইচ ওয়ান ইউ নেভার এক্সপেক্ট, দ্যাটস মেবি আনএক্সপেক্টেড সেলারি ফর ইউ । সত্যি কথা কি আমি চাকরির চার মাসের মাথায় আমার এক্সপেক্টেড সেলারি পাইছি এবং তিন বছরের মাথায় আমার সেলারি আনএক্সপেক্টেড সেলারিতে পৌঁছায় গেছিলো!

সারা দুনিয়ার মধ্যে বাঙলাদেশই এখন ইভেষ্টটরদের প্রথম চয়েজ। প্রচুর ফরেইন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি আসতেছে। বহুত কোম্পানি লোকের অভাবে প্রোডাকশন রান করতে পারতেছেনা। দেশের মধ্যে এখন প্রচুর ইপিজেড হয়েছে। একবারের জন্য হইলেও সেখান থেকে ঘুরে আসুন। লোকজনের সাথে কথা বলুন। কারো কোন সুপারিশ তদবির কিছুই লাগবেনা। তারা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে কাজ দেওয়ার জন্য। সবচাইতে ভালো টাইম সকাল সাতটা থিকা নয়টা পর্যন্ত টাইমটা। তখন দেখবেন প্রায় প্রত্যেক কোম্পানির সামনে লোকজন অপেক্ষা করছে। সেখান থেকে অফিসের লোকজন তাদের পছন্দ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী লোক আলাদা করে নিয়োগ দিয়ে দেয়। ভেরি ইজি প্রসেস।

আমার নসিহত, যারা ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিতে চাকরি করবেন বা করতে চাচ্ছেন তারা অফিসিয়াল মানে এডমেনিস্ট্রেটিভ মানে ডেক্স জব'রে প্রায়োরিটি না দিয়ে সরাসরি প্রোডাকশন জবকে প্রায়োরিটি দিবেন। কারণ এইখানে সেলারির কোন লিমিটেশন নাই। এই সেক্টরের অফিসিয়াল জবগুলোর সেলারি হাইয়েস্ট ২৫-৩০-এর পরে ফ্রিজ হয়ে যায়। আর বাড়ায় না। কারণ এইসব কাজের মধ্যে নতুনত্ব নাই। সবই এক ফরম্যাটে চলে। যেমন এইচআর, বিজনেস বা কমার্শিয়াল, প্ল্যানিং...

আর প্রোডাকশনে নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসে একেক মডেলে একেক রকম এক্সপেরিয়েন্স। চাকরির সময় যতো বাড়বে অভিজ্ঞতা ততো বাড়বে। বাড়বে ততো আপনার সেলারি। আপনি হইতে থাকবেন ডায়নামিক হইতে থাকবে ডিপ্লোমেটিক! প্রোডাকশনে কাজের শেষ নাই। আর আপনি যদি সেইখান থিকা অনেকগুলো কাজ নিজে শিখতে পারেন তাইলে আপনার অন্য জায়গায় নয়া চাকরির অপরচুনিটিও বাড়বে। একটি কাজে স্পেশালাইজড না হয়ে অনেকগুলো কাজে স্কিলাইজড হওয়া উত্তম। দুনিয়ায় এখন স্পেশালিষ্টদের চাইতে মাল্টিস্কিলদের অপরচুনিটি বেশি। আপনি ফ্যাক্টরির মালিক বা কোন ডিপার্টমেন্টের বস হইলে কাকে বেশি প্রায়োরিটি দিবেন? যে অনেকগুলো কাজ একসাথে জানে তাকে নাকি যে একটি কাজ বিশেষভাবে জানে তাকে? প্রোডাকশন অলওয়েজ মাল্টিস্কিল নির্ভর সেক্টর।

আপনার বেকারত্বের জন্য অন্যকে দায়ী না করে খোদ নিজেকে দায়ী করুন। একদিনও বেকার থাকবেন না। টাকার জন্য মেহন্নত এবং কৌশলী হন। ট্রাস্ট মি অন্যের টাকা নিজের পকেটে এতো সহজে আসে না। অন্যের টাকা নিজের পকেটে আনার জন্য মেহন্নত এবং কৌশলের বিকল্প নাই।

দ্যাটস অল ইউর অনার।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×