তারা প্রায় সকলেই জানে, এইভাবে ক্ষমতা দখল আইনগত কোন বৈধতা পায় না। তাই ফরহাদ মাজহার নয়া থিওরি বাজারে ছাড়ছে, গণঅভ্যুত্থানের জন্য আইনের স্বীকৃতি দরকার হয় না। গণঅভ্যুত্থান আইনের স্বীকৃতির উর্ধ্বে।
অথচ আমরা জানি, জিয়া এবং এরশাদের ক্ষমত দখল দুটাই অবৈধ বইলা আদালতের রায় আছে।
ইউনুসের ক্ষমতা দখলও সংগত কারণেই অবৈধ।
এদের যেহেতু সংবিধান পরিবর্তনের ক্ষমতা নাই তাই এরা এমন কোন দল খুঁজবে যাদেরকে ক্ষমতায় বসানোর সকল রকম বন্দোবস্ত কইরা দিয়া সেইফ এক্সিট নেওয়ার। এই দল হইতে পারে বিএনপি। হইতে পারে জামাত।
ক্ষমতায় বসানোর এই প্রক্রিয়া যেহেতু নির্বাচনের মাধ্যমে করতে হবে তাই তাদের কাছে মাথা ব্যাথার কারণ জামাত। জামাতরে দেশের মানুষ ভোট দেয় না। ভোটের রাজনীতি ক্যালকুলেট করলে জামাতের ইতিহাস খুবই শোচনীয়।
ছিয়ানব্বইতে জামাত এককভাবে নির্বাচন করছিলো। আসন পাইছিলো মাত্র তিনটা। তারপর দুইহাজারএকে বিএনপির সাথে জোট কইরা। সেইবার পাইছিলো একুশটা। এখন জামাত বলছে তারা একক নির্বাচন করবে।
বিএনপিকে তারা আর বিশ্বাস করছে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলাকালে বিএনপি তাদের জন্য কিছু করে নাই বইলা যে ক্ষোভ রয়েছে সেই ক্ষোভ থিকাই তারা এই সিদ্ধান্ত নিছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নির্বাচন পর্যন্ত বলবৎ থাকে কি না তার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
বিএনপিকে ভারত একেবারেই বিশ্বাস করে না। দশট্রাক অস্ত্র আইনা ভারতের সেভেন সিস্টারকে ওলট-পালট করে দেওয়ার সেইসময়ের যে ব্যাপারটা তা ভারত ভুলে নাই ভুলবেও না । তারউপর তাদের প্রকাশ্যে ভারত বিরোধিতা যেটা ভারতীয় নাগরিকদের ক্ষুব্ধ করছে।
আমেরিকা যেহেতু এখন নাটের গুরু সেই হিশেবে আমেরিকার একক প্রচেষ্টায় বিএনপি ছাড়া আপাতত ইউনুস সরকারের কাছে বিকল্প নাই।
দেশ যেহেতু ইউনুসের পেছন থিকা জামাত চালাচ্ছে তারা চায় না বিএনপি এতো দ্রুত আসুক। জামাত চায় তারা আস্তে আস্তে প্রতিষ্ঠানিক ক্ষমতায় শক্তিশালী হোক। যেমন সরকারের প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, ব্যাংক এইসব জায়গায়।
ইউনুস সরকার বড় দুই দলকে বাইরে রেখে ছোট ছোট দলগুলোকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করবে। যেমন নুরার গণপরিষদ, মুজিবের এবি পার্টি, সাকির গণসংহতি আন্দোলন-সহ আরও ছোটখাটো রাজনৈতিক দল ।
ইউনুসের যেহেতু সংবিধানে হাত দেওয়ার অধিকার নাই । তাই সে এখন সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি করবে । প্রধানমন্ত্রী দেশ ছাড়া । শিরীন শারমিন চৌধুরী পদত্যাগ করছে । বাকি আছে রাষ্ট্রপতি । এখন যদি রাষ্ট্রপতিরে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় তাহলে সাংবিধানিক সকল পদ শূণ্য হয়ে যাবে । তখন ইউনুসের হাতে ষড়যন্ত্রের দুয়ার অবারিত হবে !
বাঙলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী সমর্থক এবং যারা সাংবিধানিক শাসনে বিশ্বাস রাখেন তাদের উচিত আস্তে আস্তে নির্বাচনবিহীন সরকার বিরোধী জনমত গঠন করা । ইউনুসকে নির্বাচনমুখী হইতে বাধ্য করা । সাংবিধানিক ভাবে তাদেরকে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার বাধ্যবাদকতা থাকলেও আপাতত তারা দুই তিন বছর গিলে খাওয়ার ফিকির করছে । এই দুই তিন বছর মূলত জামাতকে শক্তিশালী করার জন্য নিবে । আর এতে মোটা দাগে বিএনপির ক্ষতি ! আওয়ামীলীগের লাভ ! আওয়ামীলীগের জন্য এখন সময় বড় নিয়ামত । যতো বেশি সময় পাবে ততবেশি তারা সংঘঠিত হওয়ার সুযোগ পাবে ।
বাঙলাদেশের মানুষ নির্বাচনবিহীন কোন সরকার মানে না । বন্দুকের নলের সামনে এখন গোটা দেশের রাজনীতি। নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে সেই সরকারই দেশ চালাবে । রাজনীতিবিদদের বাইরে পেশাজীবীদের হাতে দেশ নিরাপদ নয় । তা আমরা একমাসেই বুঝে গেছি ।
আপনাদের কার কি মতামত কমেন্ট বক্সে জানান ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ২:২৬